‘শুধু ভগবানকে বলে রেখেছি; কারো কাছে বিচার চাইনি।’
নিজের ওপর হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে শুধু এটুকুই বললেন শ্রী সতেন্দ্র নাথ (৩৫)।
সতেন্দ্র নাথ সিংড়া পৌর এলাকার বালুয়া বাসুয়া রোড়ের পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের সামনের প্রতিভা লাইব্রেরির মালিক।
দশম সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে না যাওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তার দোকানে ভেতরই তাকে মারধর করেন স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীরা। উপজেলার ইটালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোতালেব সরদারের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটানো হয়।
সতেন্দ্র নাথ সিংড়া উপজেলার একই ইউনিয়নের মাগুড়া গ্রামের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত নির্বাচনে বেশির ভাগ দল অংশ না নেয়ায় সতেন্দ্র ও তার পরিবারের লোকজন ভোট দিতে যায়নি। বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার সকালে মোতালেব সরদার কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সতেন্দ্র নাথের দোকানে এসে তা কাছে ভোট দিতে না যাওয়ার কারণ জানতে চান। কিছুক্ষণ কথা বলেন তারপর চলে যান।
এরপর দুপুর ১২টার দিকে তিনি আবার আসেন। সঙ্গে কয়েকজন অনুসারি।
এবার আর কোনো কথা নেই। কারণ জানারও দরকার নেই। যৌক্তিকভাবে জানালেও সংখ্যালঘুর নাগরিক অধিকারকে ক্ষমতাসীনদের হাতে জিম্মি রাখার ক্ষমতার কাছে তা ম্লান।
চটপট, ধিপধাপ তারপর এলোপাতাড়ি...।
এভাবেই সবার সমানে চড় থাপ্পর মারেন শ্রী সতেন্দ্র নাথকে। মুহূর্তের মধ্যে সমাধিকার নিয়ে বেড়ে ওঠা ক্ষেত্র বিশেষে বেশি নিরাপত্তার দাবিদার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সতেন্দ্র হয়ে যান অসহায়। লাঞ্ছনায় বিমুর্ষ তার চোখে অস্ফুট বিচারের দাবি, ‘ভগবান দেখে রেখো...।’
এ ব্যাপারে সিংড়া থানায় যোগাযোগ করা হলে ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, ‘এ বিষয়টি তার জানা নেই। তবে গত সোমবার পশু হাসপাতাল মোড়ের কৃষ্ণ ঘোষের দোকানে ভাঙচুরের ঘটনায় বাপ্পি নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার বিকেলে ছাত্রলীগের তিন নেতা শাকিল, বাপ্পি ও সবুজ সরদার সিংড়া পৌর এলাকায় হাসপাতাল মোড়ে কৃষ্ণ ঘোষের চায়ের দোকান ভাঙচুর করে রাস্তায় ফেলে দেন।
স্থানীয়দের দাবি, কয়েকদিন ধরে এ এলাকায় ছিনতাই ও সরকারি গাছ বিক্রির ঘটনা ঘটছে। হাসপাতাল মোড়ের ওই চা দোকানে বসে এলাকার মানুষ এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা ওই দোকান ভেঙে দেয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন