পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী কর্মী, ৫ দিনের রিমান্ডে
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম সেনানী চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার আহদম হোসেন। আন্দোলনের শুরু থেকে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পতন পর্যন্ত আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তিনি। আন্দোলনের সময় নিজে আহত হয়েও দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করার লড়াই থেকেছেন সবার আগে। কিন্তু পুলিশের দায়ের করা ভাঙচুর মামলায় আহমদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। দেশের মানুষ দ্বিতীয় স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করলেও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া আহমদ রয়েছেন রিমান্ডে।
আহমদ হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি। বয়স ২৫। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নে তার বাড়ি। সেখানেই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেদিন চট্টগ্রাম শহরের টেরিবাজারে ছেলের জন্য শীতের জামা কিনতে যান আহমদ। এ সময় পুলিশ ও ইসকন সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে বাজারেই আটকে পড়েন তিনি। সেখান থেকেই তাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে সরকারি কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। সেই মামলায় জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা আহদম হোসেনকে ৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে। পুলিশের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
আহমদ হোসেনের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেয়া তার সহযোদ্ধারা জানান, পুলিশের উপর ইস্কন কর্মীদের হামলার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়ার খবর শুনে অবাক হয়েছি। আহমদ হোসেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। তিনি দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন। যখন দেশের লোক দ্বিতীয় স্বাধীনতার মুক্ত বাতাস গ্রহণ করছেন, তখন কি না আমাদের একজন সহযোদ্ধা রিমান্ডে রয়েছেন। এটা আমাদের জন্য কষ্টের, বেদনার। আমরা অতিদ্রুত তার মুক্তি চাই এবং জুলাই আন্দোলনের একজন অন্যতম সহযোদ্ধাকে এভাবে রিমান্ড নেয়ার তীব্র নিন্দা জানাই।
আহমদ হোসেনের বড় ভাই আকতার হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমার ভাইকে বিনা অপরাধে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। এখন তাকে রিমান্ডে দেয়া হয়েছে। আমার ভাই কোন অপরাধ করেনি। আদালতে পুলিশের উপর হামলার দিন আমার ছোট ভাই (আহমদ হোসেন) তার ছেলের জন্য শীতের জামা কিনতে বাজারে যায়। এসময় পুলিশ ও ইসকন সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে বাজারে আটকে পরলে সেখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাকে মামলার সাত নম্বর আসামি করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আইনী লড়াই করার মতো সক্ষমতা আমাদের নাই। আর্থিক সংকটের কারণে তার জন্য একজন দক্ষ আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেনি। ভাইকে মুক্ত করতে দেশবাসীর সহযোগিতা চান বড় ভাই আকতার হোসেন।’
এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সেলিম বলেন, ‘তাকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে রাজি হন নি তিনি।