অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত সংগঠনটি বলেছে, জুলাই ৩৬ বিপ্লবী অভ্যুত্থান ও বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার সম্মুখসারিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করা অন্যতম অগ্রসৈনিক ছিলেন ড. আসিফ নজরুল। ছাত্র জনতার অকুতোভয় প্রতিনিধি হিসেবে এবং বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল যখন দিনরাত দেশ পুনর্গঠনের কাজে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তখন একটি বিভ্রান্ত ও হঠকারী গোষ্ঠী অন্তর্বর্তী সরকারের এই বিপ্লবী উপদেষ্টাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়েছেন।
বিগত সরকারের আমলে যে গুটিকয়েক মানুষ স্বৈরাচারের দুঃশাসন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবাদ করে গেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল তাদের মধ্যে অন্যতম। বিগত ১৫ বছরে সরকারের সমালোচনা করার কারণে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ ক্লাসরুম এবং ক্লাসরুমের বাইরে তাঁকে ক্রমাগত অপদস্ত এবং মানসিক নির্যাতন করেছে যা আমরা সবাই জানি। প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার অধিকারী সত্যভাষী ও নীতিতে অবিচল থেকে তিনি নিপীড়িত এবং গণমানুষের পক্ষে নিরপেক্ষ থেকে সব সময় নৈতিক অবস্থান নিয়ে কথা বলে গেছেন। জুলাই ২৪ এর মাঝামাঝিতে যখন স্বৈরাচারী সরকারের ও প্ররোচনায় নির্বিচার গণহত্যা শুরু হয়েছে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অল্পকিছু শিক্ষক সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীদের পক্ষে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে সকল ঝুঁকি নিয়ে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন ড. আসিফ নজরুল।
স্বৈরাচারের আজ্ঞাবাহী পুলিশের একটি অংশ যখন অন্যায়ভাবে ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রদের আটক করে থানায় আটকে রেখেছিল তখন তিনিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকবান শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদেরকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন। ৩ আগস্ট যখন পুরো দেশ অগ্নিগর্ভ, যখন রাজপথের প্রতিটি পদক্ষেপ মৃত্যুর সাথে সন্ধির অপেক্ষায় ছিল, তখন আমাদের বিপ্লবী ছাত্র—জনতার সাথে রাজপথের সামনের সারিতে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. আসিফ নজরুল সেটিও আমাদের অজানা নয়।
কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়া গত ৩ ও ৪ আগস্ট আসিফ নজরুলের সেনানিবাসে অবস্থান করা এবং প্রতিবেশী দেশের আজ্ঞাবাহীদের নিয়ে সরকার গঠনের চক্রান্তের অভিযোগটি পুরোপুরি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এটি একটি চক্রান্ত বলে মনে করছে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আসিফ নজরুলকে গত ৭ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিমানবন্দরে বিগত স্বৈরাচার সরকারের কয়েকজন দুষ্কৃতকারী হেনস্তা করে। পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিকভাবে তাঁর নামে ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে। এটি চক্রান্তের অংশ। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে সরকারের মনোবল ভেঙে দেওয়া, জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করা এবং পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতি, অন্যায় ও নির্বিচার গণহত্যার বিচার বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অ্যাসোসিয়েশনের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনস্বার্থে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন বিশ্বাস করে, তথ্য-প্রমাণ ও যথাযথ অনুসন্ধানী প্রক্রিয়া ছাড়া বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনার মাধ্যমে আসিফ নজরুলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার কাজে লিপ্ত হয়েছেন কেউ কেউ।
অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে জনমনে ও জনপ্রশাসনে বিরূপ প্রভাব তৈরি না করার জন্য অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে সব মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন।
বিডি-প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন