খুলনায় মাদক নির্মূল, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধ দমনে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। পরপর কয়েকটি ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। অবৈধ অস্ত্রের উৎস খুঁজতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। জানা গেছে, খুলনা মহানগরীতে মাদক কারবারি, উঠতি বখাটে সবার হাতেই রয়েছে অবৈধ অস্ত্র।
৩ ডিসেম্বর রাতে নগরীর নাজিরঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মো. ইউনুসকে শটগান দিয়ে গুলি করা হয়। দুটি গুলি তাঁর পিঠে ও পায়ে বিদ্ধ হয়। ইউনুস একসময় মাদক কারবারি ছিলেন। এ ছাড়া ২৯ নভেম্বর রাতে টুটপাড়া তালতলা হাসপাতাল এলাকায় খুলনা মৎস্য বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি আমির হোসেনকে গুলি ও কুপিয়ে আহত করা হয়। গতকাল সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আধিপত্য বিস্তার দ্বন্দ্বে ২ নভেম্বর রাতে শেরেবাংলা রোডে মো. রাসেল নামে আরেক যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, ‘অপরাধমূলক কাজে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। এটা প্রতিরোধে পুলিশের পক্ষ থেকে মেকানিজম ডেভেলপ করা হচ্ছে। কেএমপিতে মিটিং হয়েছে। অবৈধ অস্ত্রের উৎস খুঁজতে থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী কাজ করছে।’
পুুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাদক বিক্রেতা উঠতি বখাটেদের সঙ্গে অবৈধ অস্ত্রের লিঙ্কেজ পাওয়া গেছে। পাড়ামহল্লায় জালের মতো ছড়িয়ে থাকায় কোনো এলাকায় পুলিশ অভিযান চালালে অন্য এলাকায় জড়ো হয় অপরাধীরা। বরাবরের মতোই গডফাদাররা থেকে যায় আড়ালে। মহানগর ও জেলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ইস্যু করা হয় ৭৫৩টি। এর মধ্যে ২৬৬টি অস্ত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জমা পড়েনি। এদিকে গত দুই মাসে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় খুলনায় আটটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৩ সালে সেপ্টেম্বরে ডালমিল এলাকায় এলপিজি ব্যবসার আড়ালে অস্ত্র বিক্রির সন্ধান পায় পুলিশ। অভিযানে একটি রিভলবার, একটি পিস্তল, দুটি ওয়ান শুটারগান, ৩৩ রাউন্ড গুলিসহ শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এভাবে অস্ত্র ব্যবসা আবারও শুরু হয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধ বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, উঠতি বখাটেদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় ভীতি ছড়াচ্ছে। এ অস্ত্র যারা সরবরাহ করছে তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে সক্রিয় হতে হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন