বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের পাসপোর্ট চেকিং ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা মাত্র ১ থেকে ২ মিনিটেই শেষ হচ্ছে। ভারতগামী বা দেশে ফিরে আসা যাত্রীরা এখন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে পারাপার হচ্ছেন। প্রযুক্তিনির্ভর সেবা ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এমনটি সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগে পাসপোর্টযাত্রীরা ইমিগ্রেশনে পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতেন।
ইমিগ্রেশন পুলিশ ডেস্কে থাকা অবস্থায় যাত্রীদের পাসপোর্ট নিয়ে বিনা কারণে সময়ক্ষেপণ করতেন। কিন্তু মাস দুয়েক ধরে এই অবস্থা থেকে যাত্রীরা পরিত্রাণ পেয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের প্রতি পুলিশ সদস্যরা সদয় আচরণ করছেন। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের জন্য পৃথক লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দুই দেশের সরাসরি পরিবহন যাত্রীদের জন্য আলাদা ইমিগ্রেশন ডেস্ক এবং ই-পাসপোর্ট যাত্রীদের জন্য ই-গেইটে সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। ইমিগ্রেশন টার্মিনালে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তা ছাড়া মুমূর্ষু রোগীদের জন্য সারা রাত ইমিগ্রেশন খোলা রাখা হচ্ছে এবং মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। ফলে যাত্রীরা দ্রুত সময়ে ইমিগ্রেশন পার হচ্ছেন।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমগ্রেশন দিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার হাজার পাসপোর্টযাত্রী গমন করেন। বেনাপোলের ওপাশে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে যাত্রীদের ১০-১৫ মিনিট লাগে। সেই হিসেবে বাংলাদেশের এ পাশে খুবই কম সময়ে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হচ্ছে।
গতকাল ভারত থেকে দেশে আসা পাসপোর্ট যাত্রী আব্দুল জব্বার বলেন, পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে ১০ মিনিটের বেশি সময় লেগেছে। কিন্তু দেশে ফেরার সময় ইমিগ্রেশনে সময় লেগেছে মাত্র দুই মিনিট।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের সুশৃঙ্খল পরিবেশ আমাকে মুগ্ধ করেছে।
ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রী নিতাই চৌধুরী বাংলাদেশের ইমিগ্রেশনের কার্যকলাপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে একশ্রেণির দালাল দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। সিরিয়াল ছাড়া তাদের পাসপোর্টের কাজ তাড়াতাড়ি করে দেওয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি। কিন্তু সম্প্রতি কড়াকড়ি করায় এসব দালালের দৌরাত্ম্য একেবারেই নেই বললে চলে।
চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঞা বলেন, বর্তমানে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন। ইমিগ্রেশনে সেবার মান বাড়াতে নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। যাত্রীরা এখন হয়রানি ও ঝামেলামুক্ত পরিবেশে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে নিজেরাই তাদের কাজ সম্পন্ন করছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন