Image description
আশুলিয়া ও গাজীপুরে ২২৮ কারখানা বন্ধ, ৩০টিতে ছুটি
নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও স্বাভাবিক হয়নি শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার পরিস্থিতি। কারখানা খুলে দেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা হাজিরা দিয়েই বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করলে ছুটি ঘোষণা করা হয় ১৩৩টি কারখানায়। এ ছাড়া পূর্বঘোষিত অনির্দিষ্টকালের বন্ধসহ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ২১৯টি কারখানায়। অন্যদিকে গাজীপুরে আটটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে ৩০টি পোশাক কারখানায়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘোষণা দেয় সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তায় গতকাল সকাল থেকেই সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুর নেতৃত্বে বিভিন্ন কারখানার সামনে অবস্থান নেন দলীয় নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি ছিল যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে পুলিশ, আর্মড পুলিশ, শিল্পপুলিশ, র?্যাব, বিজিবি ও সেনাসদস্যদের তৎপরতাও। ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান, র?্যাব-পুলিশের রায়ট কার। স্থানীয়রা জানান, এদিন বিভিন্ন কারখানা খোলা থাকলেও নানা দাবি নিয়ে কারখানার ভেতরেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। পরে পরিস্থিতির ক্রমঅবনতিতে একে একে বিভিন্ন কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। শ্রমিকরা জানান, টানা ১০ দিনের বেশি সময় ধরে কারখানার ভেতরে ও সড়কে শ্রমিকরা দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। কিন্তু মালিক পক্ষ শ্রমিকদের দাবি নিয়ে টালবাহানা করছে। কিছু কাখানায় আশ্বাস দিয়েও পরে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়নি মালিক পক্ষ। এতে শ্রমিকদের ক্ষোভ আরও বাড়ে। এ ছাড়া যে সকল কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে, তাদের মধ্যে বেশিভাগ কারখানায় গত মাসের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি। শ্রমিকরা বলেন, বুধবার থেকে কিছু কারখানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করে। একই সঙ্গে কিছু কারখানায় শ্রমিকরা সকালে কাজে যোগ দিয়ে উৎপাদন শুরু করলেও কিছু সময় পরে আবার সাধারণ ছুটি দিয়ে দিয়েছে। সকালে অনেকে কারখানায় এসে দেখেন গেটে ঝুলছে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ। আবার কিছু কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও কারখানা মালিকরা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। আশুলিয়া শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, আশুলিয়ায় ৮৬টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও ১৩৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কোথাও বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে। এদিকে বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েক দিন গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। বিক্ষোভের জেরে অনেক সময় কারখানায় ভাঙচুর, কারখানার কর্মকর্তাদের মারধরসহ বিভিন্ন বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে পড়ছেন। আর এ সুযোগে কিছু বহিরাগত কারাখানায় লুটপাট বা অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছেন। এতে কারখানা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বা ঝামেলা হতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকে কারাখাগুলোর কোনোটিতে সাধারণ ছুটি বা কোনোটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান, শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে যে কোনো ঝামেলা এড়াতে মহানগর ও মহানগরের বাইরে সব মিলিয়ে আটটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও ৩০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে মালিক পক্ষ।