‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির অবদান খাটো করে দেখার সুযোগ নেই’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির অবদান খাটো করে দেখার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু।
এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘শুধু সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনের কারণে ফ্যাসিবাদ তথা আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান হয়েছে আপামর জনগোষ্ঠী কি তাই মনে করে?’
তিনি বলেন, ‘এটা পতিত স্বৈরাচারের দোসর ও সুবিধাভোগীদের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা। ফ্যাসিবাদ একদিনে প্রতিষ্ঠা হয়না, নির্দিষ্ট বিষয়ে বৈষম্য সৃষ্টি করলেই ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা যায় এই চিন্তাটা নিরর্থক। আন্দোলন মূলত সফলতা পেয়েছে মানুষের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের কারণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এর অঙ্গ ও সহযোগীদের অবদান খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। একটি সামাজিক আন্দোলন একদফায় রূপ নেয় যখন তাতে রাজনৈতিক দলের সমর্থন ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। “একদফা” কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি- প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। একদফার চেতনা হলো রাজনৈতিক সচেতনতা, শোষিত- নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের বিপ্লবী চেতনা। বিপ্লব এক দিনে হয় না। ইতিহাস তাই বলে। বিপ্লব সংগঠিত হয় চেতনায়, যে চেতনায় থাকে আপোষহীনতা, দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ আর তিতিক্ষা।’
সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, ‘মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কর্তৃক আল্লাহর বাণী পৌঁছানো এবং বিশ্ব শান্তি ও খেলাফত প্রতিষ্ঠা হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ ও প্রাণের বিনিময়ে। তিঁনি ৬৩০ খ্রীষ্টাব্দে রক্তপাতহীনভাবে মক্কা জয় করেছিলেন। কিন্তু মক্কা বিজয়ের পূর্বে উহুদ যুদ্ধে মহানবী সাঃ দন্ত মোবারক শাহাদাত বরন হয়। বদরের যুদ্ধ, উহূদের যুদ্ধ, খন্দকের যুদ্ধের মত অসংখ্য যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল শান্তি ও খেলাফত প্রতিষ্ঠায় এবং অগণিত সহযোদ্ধা (সাহাবীগণ) শাহাদাত বরণ করেন।
১৯৭০ সালের মানুষের ভোটের অধিকার ভূলুণ্ঠিত, দীর্ঘকালের শোষণ, বঞ্চনার কারণেই ১৯৭১ সালে পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতায় পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী নিরস্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন জাতির ক্রান্তিকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা করেই থেমে যাননি, সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের প্রধান হিসেবে রণাঙ্গনে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পর শেখ মুজিবের নেতৃত্ব আওয়ামলীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় বসে। ১৯৭২-৭৫ শাসনামলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির আকাশ ছোঁয়া মূল্য, জীবনের নিরাপত্তাহীনতা সবকিছুই জনগণের জন্য ছিল অনেকটা জগদ্দল পাথরের মতো। মৌলিক অধিকার, বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে ‘বাকশাল’ নামক শাসনের বেড়াজালে পড়ে আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও অন্যান্যদের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হয়।
৩রা নভেম্বর এবং ৭ই নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী জনতার বিপ্লব ছিল আধিপত্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য একটি সফল প্রয়াস যার মাধ্যমে এদেশের সিপাহী জনতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন। তিঁনি একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ মুজিবের শাসনামল নিয়ে হেনরি কিসিঞ্জারের মন্তব্য (Bottomless basket) বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি কে আত্মমর্যাদাশীল জাতি ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ১৯ দফা ঘোষণা কর্মসূচি ঘোষণা করেন যা ছিল উন্নয়নের মূলমন্ত্র।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘১৯৮৬ সালে শেখ হাসিনা লালদীঘি ময়দান, চট্টগ্রামে ঘোষণা করেছিল এরশাদের অধীনে যারা জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তারা জাতীয় বেইমান। পরবর্তীতে জাতীয় বেঈমান হিসেবে এরশাদের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী অংশগ্রহণ করে স্বৈরাচারকে বৈধতা দিয়েছিল।
বিপরীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া টানা ৯বৎসর আপোষহীন সংগ্রাম করে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়ে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, বাক-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ পর্যন্ত পাঁচ বার যথাক্রমে ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর, ২০০৭ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন ও দীর্ঘ কারাবরণ করেন। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দায়ের ও ফরমায়েশি রায় দিয়ে তাঁর দেশে প্রত্যাবর্তনের পথ রুদ্ধ করে দেয় এই স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকার।
দেশি বিদেশী চক্রান্তে ১/১১ সরকার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামীলীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার সুযোগ করে দেয়। আওয়ামী দুঃশাসনের শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে ২৫ ও ২৬শে ফেব্রুয়ারী পিলাখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন দেশপ্রেমিক চৌকস সেনা অফিসার সহ ৭৪ জন কে হত্যার মধ্যে দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯মাসেও এত সামরিক কর্মকর্তাকে জীবন দিতে হয় নাই।
অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর স্বামীর স্মৃতি বিজড়িত ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে যা এদেশের মানুষের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে।’
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালে রাতের অন্ধকারে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের আলেম ও মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের ওপর গণহত্যা চালায়। বস্তুনিষ্ঠ ও সরকারের অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করায় বন্ধ করে দেয় দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক দিনকাল, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও পিস টিভির সম্প্রচার। সাংবাদিকদের জন্য কালো আইন পাস করে সাংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোঃ মোতাহের হোসেন এবং পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি এস.কে সিনহা কে দেশত্যাগে বাধ্য করে।
মোদ্দাকথা, বিচার বিভাগে নগ্ন হস্তক্ষেপ করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে তুলে আওয়ামী সরকার।
এই মামলাবাজ সরকার কাউকেই রেহাই দেয়নি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও দেশের একমাত্র নোবেল পুরষ্কার প্রাপ্ত ব্যক্তিকে
প্রায় এক দশক ধরে হয়রানি ও ভয়ভীতির মুখোমুখি করে রাখে ক্রমান্বয়ে ১৬৮ টি মামলা দিয়ে।
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই ১৫৩ জন সাংসদ বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা, গুম, আয়নাঘরে বন্দী করে রাখার মত ঘটনা ঘটায়। সারাদেশে নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর। গুম করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, নির্বাহী কমিটির সদস্য চৌধুরী আলম, সাবেক সাংসদ সাইফুল ইসলাম হীরু সহ প্রায় ৮০০শ নেতা-কর্মীদের। সাবেক মন্ত্রী, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ কে অপহরণ করে ফেলে আসে ভারতের শিলংয়ে। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। বিচারের নামে জুডিশিয়াল কিলিং অর্থাৎ ফাঁসির ব্যবস্থা করে রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেয়া হয় জাতীয়তাবাদী, বীরমুক্তিযোদ্ধা ও বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনৈতিকদের।
আওয়ামী শাসনামলে মায়ের পেটে শিশুও নিরাপদ ছিলনা। ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই মাগুরা শহরে গর্ভবতী মায়ের পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভূমিষ্ট হয় শিশু সুরাইয়া। ছাত্রলীগের গুলিতে শিশু সুরাইয়ার একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। মায়ের পেটে সন্তান গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।’
টুকু বলেন, ‘মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের তথ্য অনুযায়ী- ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সরকারী বাহিনী দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় ২৬৯৯টি, গুম করে ৬৭৭ জনকে, আটক অবস্থায় কারাগারে মৃত্যু হয় ১০৪৮ জনের। জেল জুলুম নির্যাতনের মাধ্যমে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে। দেড় লাখের অধিক মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দিয়ে প্রায় পৌনে কোটি বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামী করে, যাঁরা প্রায় ১৬ বছর যাবত ঘর বাড়ি ছেড়ে মানবেতর জীবন যাপন করে হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম জারি রাখে। রাস্তা ঘাট, হাট-বাজার, বন-জঙ্গল, খাল-বিল, নদী-নালা এমন কোথাও নেই যেখানে বিএনপির নেতাকর্মীদের লাশ পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘ শেখ হাসিনার টানা শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ১৪ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুইস ব্যাংকগুলোতে টাকার পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ২৭৫ কোটি। অর্থ পাচার করে কানাডায় বেগমপল্লী, সিঙ্গাপুরে সেকেন্ড হোম গড়ে তুলে আওয়ামী লুটেরা। শেয়ার বাজার থেকে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা লুট করে বিনোয়াগকারীদের সর্বস্বান্ত করে দেয়া হয়। বিনিয়োগকারী কাজী লিয়াকত আলী যুবরাজ আত্মহত্যা করেন।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। সরকার অতি কৌশলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইলেও ২৯শে ফ্রেব্রুয়ারী ফিলিপাইনের গণমাধ্যম রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৭ই মার্চ সরকার রিজার্ভ চুরির ঘটনা স্বীকার করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২০০৭ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। সেই ব্যয় বাড়িয়ে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা, বিসমিল্লাহ্ গ্রুপ ১২০০ কোটি, ডেসটিনি ৪০০০ কোটি বেসিক ব্যাংক ৪০০০ কোটি, হলমার্ক ৪৫০০ কোটি টাকা অগ্রণী ব্যাংকের ৬০ কোটি টাকা সহ অসংখ্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট করে আওয়ামী লুটেরা। পি.কে হালদার ও তার সহযোগীরা ১০ হাজার কোটি টাকা লুট করে। ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা সাবেক আওয়ামী মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর এবং তার সহযোগীরা ২৫০০ কোটি টাকা লুট করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘দোয়েল’ ল্যাপটপ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নামে হাজার কোটি টাকা এবং কয়লা খনির ১ লাখ ৭৫ হাজার টন কয়লা লোপাট করে। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ একটি পর্দার দাম ধরা হয় ৩৭ লাখ টাকা, রূপপুরের বালিশ কেলেংকারী সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করে। সৃষ্টি করা হয় পাপিয়া, ক্যাসিনো সম্রাট, ইয়াবা বদি, এমপি পাপলু, ভূমি খেকো মন্ত্রী সাইফুল, জি কে শামীমদের মত মাফিয়া ও দুর্নীতিবাজদের। পরিকল্পিতভাবে বিদেশীদের উপর হামলা, গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা, রামু, নাসিরনগর, গঙ্গাচড়া, পীরগাছা, কুমিল্লা, শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের জন্য।
বিসিএস সহ চাকুরীর পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মহোৎসব, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ছাত্রদের উপর গুলি ও হামলা করে ছাত্রলীগ যুবলীগ।
দলীয় সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের আইন এবং দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেয়া হয় গত ১৫ বছরে। ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর নিশিরাতে ভোট ডাকাতি, ২০২৪ সালের ৭ই জানুয়ারি ডামি নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করে ভয় আর ভীতির রাজত্ব কায়েম করে মানুষের টুটি চেপে ধরে। চাল, ডাল, তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। মনের ভেতর চাপা ক্ষোভ পুষতে থাকে যেন সুযোগ পেলেই সব ঢেলে দিবে।
এমনই এক সুযোগ আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। যে আন্দোলন দমনে হাসিনা তার সেই পুরনো পদ্ধতি, হামলা, মামলা, নির্যাতন, হত্যা শুরু করে। দীর্ঘ দুঃশাসনে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জনগণ ক্ষোভে ফেটে পড়ে।’
সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনে প্রথম থেকেই নৈতিক সমর্থন ও নির্যাতিত ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানান এবং দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিগত দিনে হামলা মামলায় নির্যাতিত মুক্তিকামী লাখো-কোটি বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।’
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, ‘ছাত্রহত্যা ও নির্যাতনে এ দেশের আপামর জনগণ নেমে এসেছিল পিচঢালা রাজপথে তাঁদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শত নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন এবং হাজার হাজার নেতা-কর্মী আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন কেউ বা লড়ছেন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল সহ বি এন পি'র নেতা কর্মী নিয়ে এ আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে শহীদ হয়েছেন প্রায় ২০০ জনেরও বেশি নেতা-কর্মী।’
তিনি বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট সকল শ্রেণি পেশার মানুষের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের যে পতন ত্বরান্বিত হয়েছে তা ছিলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি, দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা ও নাগরিক সমাজের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।
হাজারো ছাত্র জনতার বীর শহীদ এর রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে দেশ পেলো এক নতুন স্বাধীনতা।’