অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে যা বলছে ইসলামী দলগুলো
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন। শুক্রবার (৯ আগস্ট) পৃথক বিবৃতির মাধ্যমে সরকারকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে দলগুলো।
বাংলাদেশ জামায়তে ইসলাম : শুক্রবার (৯ আগস্ট) জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে বলে এক বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে দলটি।
সভায় দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে- জাতি সরকারের কাছে এই প্রত্যাশা করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের সর্বস্তরের জনগণ বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদেরকে দেশের আইনশৃঙ্খল পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রশাসনকে কার্যকরভাবে সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে দেশে কোনো ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ যাতে সংঘটিত না হয়, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা ও জানমালের কোনো ক্ষয়ক্ষতি যেন না হয়, সেজন্য পাহারাদারের ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, নূরুল ইসলাম বুলবুল, সেলিম উদ্দিন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
হেফাজতে ইসলাম : অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমীর মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান শুক্রবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে নবগঠিত সরকারে আলেমদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করায় সাধুবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘দ্রুত একটি জাতীয় মীমাংসাপত্র তৈরি করুন, যার ভিত্তিতে সামাজিক যত বিভেদ ও বিভাজন দূর হবে। সারাদেশে যে প্রতিশোধ ও জিঘাংসা শুরু হয়েছে, তা বন্ধে একটি জাতীয় মীমাংসাপত্র এখন আবশ্যক।’
বিৃবতিতে বলা হয়, ‘আওয়ামী লীগের প্রতিটি হত্যা ও জুলুমের সুষ্ঠু বিচার হবে, কিন্তু বদলা নয়।
বদলা নিতে গেলে ন্যায়বিচার ধ্বংস হবে। সমাজ থেকে শত্রুবধের রাজনীতি ও আকাঙ্ক্ষাকে চিরতরে দূর করতে হবে।’
ইসলামী আন্দোলন : নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে তাদেরকে ভালো কাজে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। দলটির আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশা করছে দেশবাসী।’
শুক্রবার বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে রাষ্ট্র সংস্কারে ঘোষিত ৯ দফা প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে গণসমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন।
রেজাউল করী বলেন, ‘বিগত ১৬ বছর আওয়ামী দুঃশাসন দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, নির্বাচনকে করেছে নির্বাসিত। ব্যাপক লুটপাটের মাধ্যমে অর্থনীতিকে করেছে বিপর্যস্ত। বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক মুক্তি এবং রাষ্ট্রের সব অসংগতি দূর করে দুর্নীতি দুঃশাসনমুক্ত উন্নত কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন এখন সময়ের দাবি। ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার ভিত্তিক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য কাজ করতে হবে।’
পীর সাহেব চরমোনাই ঘোষিত ৯ দফার মধ্যে রয়েছে : সরকারের মেয়াদ ৬ মাসের বেশি হতে পারবে না, অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কেউ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইবুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। একই সাথে গত ১৬ বছরে সংগঠিত সকল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে প্রভৃতি।