সাতক্ষীরার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে বেতনা নদীর খননকৃত মাটি লুটপাটকারী ট্রলিচালক কিসমত আলীকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বাধা দেওয়ায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর কিসমতসহ আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক মাহাবুর রহমান ও সিপাহী মেহেদী হাসান।
ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির কর্তব্যরত উপপরিদর্শক সোহরাব হোসেন জানান, বেতনা নদীর খননকৃত মাটি নেহালপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে লুটপাট করে আসছিল একটি মহল। এ চক্রের সর্দার ছিল ধুলিহর সানাপাড়ার মৃত ইমান আলীর ছেলে ট্রলিচালক কিসমত আলী।
সোহরাব হোসেন আরো জানান, বুধবার ভোরে কিসমত আলীর নেতৃত্বে ৭/৮ জন নেহালপুর স্লুইসগেটের পাশে বেতনা খননের স্তূপকৃত মাটি কেটে ট্রলিতে ভরে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে মর্মে তিনি খবর পান।
ফাঁড়িতে আটকে রেখে তাকে মারধর করা হয়েছে—এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে কিসমতের ভাই রহমত, তার স্ত্রী শাহানারা ও ভাগনে বাবুরালীসহ ৩০/৩৫ জন ফাঁড়ির ফটক জোরপূর্বক খুলে ফেলে।
স্থানীয় সাহেব আলী, নূর হোসেনসহ কয়েকজন জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বেতনা নদীর খননকৃত মাটি কিসমতের নেতৃত্বে লুটপাট করা হতো। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অপর একটি পক্ষ কিসমতের মাধ্যমে মাটি কেটে লুটপাট করে আসছে। কিসমতের পেছনে থাকা রাঘববোয়ালরা নেপথ্যে থেকে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার মদদ দিয়েছে।
এ ব্যাপারে কিসমত হোসেন দাবি করে বলেন, পুলিশের নিষেধ অমান্য করে তিনি বুধবার সকালে বেতনার মাটি কাটছিলেন, এটা সত্য। কিন্তু তাকে ধরে আনার পর আর কখনো মাটি কাটবেন না বলার পরও ফাঁড়ির কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সোহরাব হোসেন তাকে মারধর করেছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান জানান, ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় কিসমতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন বুধবার বিকেলে থানায় একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।