Image description

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী টায়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ১৮২ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটি। পাঁচ মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজদের একজনেরও সন্ধান মেলেনি। পুড়ে যাওয়া ভবন ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে ফায়ার সার্ভিস, প্রশাসন ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) টিম উদ্ধারকাজ বন্ধ রেখেছে। তবে নিখোঁজরা বেঁচে আছেন বলে দাবি করেছেন স্বজনরা। অজ্ঞাত নম্বর থেকে কল করে স্বজনদের জানানো হয়েছে, ‘নিখোঁজ সবাই ভালো আছেন। খুব শিগগিরই তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।’ 

এরপর ওই মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে নিখোঁজদের উদ্ধার করতে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্বজনরা। যদিও এখনও কাজ শুরু করেনি পুলিশ।

শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরে নিখোঁজদের তিন জন স্বজনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। ‘নিখোঁজরা বেঁচে আছেন’ অজ্ঞাত স্থান থেকে কল করে এমন তথ্য জানানোর পর গত ২৭ জানুয়ারি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিখোঁজ আমান উল্লাহর মা রাশিদা বেগম। 

 

শনিবার সন্ধ্যায় রাশিদা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার ছেলে আমান উল্লাহ রূপগঞ্জের একটি ব্যাটারি কারখানায় কাজ করতো। গাজী টায়ার কারখানায় যেদিন আগুন লেগেছিল, সেদিন আমান তার বন্ধু নাহিদকে সঙ্গে নিয়ে কারখানা দেখতে গিয়েছিল। এরপর দুজনের কেউ ফিরলো না। আজও তাদের সন্ধান পাইনি।’

আমান উল্লাহ ও নাহিদ বেঁচে আছে দাবি করে রাশিদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে এখনও বেঁচে আছে। সন্তানকে ফিরে পেতে চাই। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দিন ছেলে মোবাইল সঙ্গে নিয়ে যায়নি। পরে তার ফোনে একাধিকবার কল এসেছে। আমার ফোনে একাধিকবার একটি নম্বর থেকে কল এসেছে। কিন্তু অপরপ্রাপ্ত থেকে কোনও কথা বলেনি। শুধু কল দিয়ে আমাদের কথা শোনে। পরে নিখোঁজদের স্বজন সিনথিয়ার সঙ্গে কথা বলে আরেকটি ফোন নম্বর পেয়েছি। সেই নম্বরে ফোন করে এক লোকের নিয়মিত কথা হয় সিনথিয়ার। ফোনের ওই ব্যক্তি আমাকে জানিয়েছে, আমার ছেলে দেখতে লম্বা-চিকন ও শ্যামলা। তার দেওয়া তথ্য মিলে গেছে। আমার ছেলেসহ সেখানে থাকা সবাইকে কাপড় দেওয়া হয়েছে বলে ওই ব্যক্তি জানিয়েছে। সেখানে অনেক লোক রয়েছে, তারা সবাই এ ঘটনায় নিখোঁজ। তাদেরকে আটকে রাখা হয়েছে। আগামী রমজানের আগে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলেছে। প্রতি মাসে ফোন দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় ওই ব্যক্তি। তবে টাকা কিংবা অন্য কিছু দাবি করেনি। এখন পুলিশ সেই নম্বর ট্র্যাকিং করে বের করলেই আসল ঘটনা জানা যাবে। এজন্য এসপির কাছে অভিযোগ দিয়েছি, যাতে তাদের সন্ধান করা হয়।’ 

 

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার রাতের একটি গাড়িতে করে অনেক লোকজনকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেদিন রাতে একটি গাড়িতে করে অনেক লোকজনকে নিয়ে গেছে কিছু লোকজন। অসুস্থতার কথা বলে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে হাসপাতালে গিয়ে কারও খোঁজ পাইনি আমরা।’ 

রূপগঞ্জের বরাব এলাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমান উল্লাহ বসাবাস করতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের মতো আরও অনেক নিখোঁজ ব্যক্তির তথ্য জানিয়ে পরিবারের কাছে ফোন করা হয়েছে। নিখোঁজ ব্যক্তিরা বেঁচে আছে বলে জানিয়েছে। পুলিশ এখন ওসব নম্বর ট্র্যাকিং করলেই তাদের পাওয়া যাবে।’

অগ্নিকাণ্ডের পর প্রথম কল আসে নিখোঁজদের স্বজন সিনথিয়া আক্তারের কাছে। অজ্ঞাত নম্বর থেকে কলটি এসেছিল। এ বিষয়ে সিনথিয়া আক্তার বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমার পরিবারের তিন জন নিখোঁজ রয়েছে। বড় ভাই শাহাদাত শিকদার, ছোট ভাই সাব্বির শিকদার ও ভগ্নিপতি জামির আলী।। তারা নিখোঁজ হওয়ার আট দিন পর একটি নম্বর থেকে আমার কাছে কল আসে। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন আগামী রমজানের আগে সবাইকে ছেড়ে দেবে। একটি বাহিনীর লোকজন গাজী কারখানার পেছনের গেট দিয়ে তাদের অন্য একটি স্থানে নিয়ে গেছে। ফোনের ওই ব্যক্তি সব সময় আমাদের বলে আসছে, আপনারা চিন্তা কইরেন না। তারা সবাই চলে আসবে। ২২২ জন জন লোক আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তবে ওই ব্যক্তি তার নাম-পরিচয় কখনও বলেনি।’

gazi-2-25a8d9b5fc6604e5cab24e3925f4d37e-c074a946a4b0085526064593cac00722গাজী টায়ার কারখানা

নিখোঁজ হওয়ার দুই মাস পরও আমার ভাই শাহাদাত শিকদারের মোবাইল নম্বরে কল যেতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরও আমার বড় ভাই নিখোঁজ শাহাদাত শিকদারের মোবাইল নম্বরে কল যেতো। প্রায় দুই মাস ওই নম্বরে কল যেতো, রিং হতো কিন্তু রিসিভ করতো না। এখন নম্বরটি বন্ধ পাচ্ছি।’

একই দাবিতে ২৯ জানুয়ারি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিখোঁজ শাহ আলমের (২২) মা রাবেয়া বেগম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। ঘটনার দিন সেখানে দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল। আমার ছেলে বেঁচে আছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার রাতে তাদের অনেককে গাড়িতে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আশপাশের অনেকে সেই ঘটনা দেখেছে।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হুসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একটি নম্বর থেকে নিখোঁজের স্বজনদের কাছে ফোন এসেছে। স্বজনদের দাবি, অজ্ঞাত ফোন নম্বর থেকে কল করে তাদের জানানো হয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিরা জীবিত আছেন। স্বজনদের ওই বক্তব্য রেকর্ড করেছি আমরা। এ বিষয়ে পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। আমি খোঁজখবর রাখছি।’ 

কত জন নিখোঁজ রয়েছেন জানতে চাইলে আলমগীর হুসাইন বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে ১৮২ জনের নিখোঁজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।’

নিখোঁজ ব্যক্তিরা জীবিত আছেন, স্বজনদের এমন দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অজ্ঞাত নম্বর থেকে স্বজনদের কাছে কল আসার বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আমি কিছুদিন ট্রেনিংয়ের কাজে জেলার বাইরে ছিলাম। স্বজনরা যদি আমার অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়ে থাকে, তাহলে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে।’

অগ্নিকাণ্ডের পর যেসব হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছিল, সেগুলোর বিষয়ে কিছু জানা গেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘কয়েকটি হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছিল। সেগুলোর ফরেনসিক রিপোর্ট এখনও আসেনি।’

এদিকে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে জেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশের কোনও তৎপরতা দেখছেন না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। নিখোঁজ আবু বকর নাঈমের মা নাজমা বেগম বরপা এলাকায় বসবাস করেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার ছেলে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো। মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করতো। গাজী টায়ার কারখানা থেকে মাদ্রাসার দূরত্ব ১০ মিনিটের। আগুন লাগার একদিন পর নিখোঁজের বিষয়টি জানতে পেরেছি। ওই দিন মাদ্রাসার শিক্ষকরা আমাকে ফোন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অগ্নিকাণ্ডের দিন আমার ছেলেসহ মাদ্রাসার আরেক ছাত্র এশার নামাজের পর রাত ৯টার দিকে কারখানার দিকে যায়। এরপর থেকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবু বকরের এখনও খোঁজ পাইনি। পত্রিকায় নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি, ফেসবুকে দিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কাজ হয়নি। এতগুলো মানুষ নিখোঁজ, অথচ কারও মাথাব্যথা নেই। কেউ দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে না, আসলে তারা কোথায়।’ 

গত বছরের ২৫ আগস্ট রূপগঞ্জে গাজী টায়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ২১ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলার ফলে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। ফলে ভবনের ভেতরে উদ্ধার অভিযান চালায়নি কর্তৃপক্ষ। তবে ১৫ খণ্ড মানবদেহের হাড় পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত ১২ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল জেলা প্রশাসনের আট সদস্যের তদন্ত কমিটি। 

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট রূপগঞ্জের গাজী টায়ার কারখানায় লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় কিছু ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে কারখানা পাহারার দায়িত্ব দেন। কয়েকদিন পর পাহারার দায়িত্ব নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। একটি পক্ষ পাহারার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে। তা দিতে অস্বীকৃতি জানায় কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় হুমকি দিয়ে কারখানা ত্যাগ করে ওই পক্ষ।

narayangj-746daf22c97b4917864a51a34e845a98-8436861d8d393ae5ac6bc7b167df4c4aকারখানার ভেতরে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে

এর মধ্যে ২৪ আগস্ট মধ্যরাতে গাজী টায়ার কারখানার মালিক সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ খবর জানাজানি হলে ২৫ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রূপসী এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করা হয়। কিছুক্ষণ পর খাদুন উত্তরপাড়া জামে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের বিকাল ৩টায় রূপসী মোড় ও খাদুন মোড়ে জড়ো হওয়ার জন্য। এদিকে রূপসী এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে দুষ্কৃতকারীরা দুপুর ১২টায় খাদুন এলাকায় গাজী টায়ার কারখানায় ঢুকে ১৮০ জন শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বের করে দেয় এবং লুটপাট শুরু করে। বিকাল সাড়ে ৪টায় আরেক দল দুষ্কৃতকারী কারখানায় ঢুকে লুটপাট শুরু করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুষ্কৃতকারীরা একাধিক দলে ভাগ হয়ে লুটপাট করে। সেইসঙ্গে চলে সংঘর্ষও। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজী টায়ার কারখানার ছয়তলা বিশিষ্ট একটি পাকা মিক্সিং ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ভবনের প্রতিটি তলায় থাকা বিভিন্ন মালামালসহ যন্ত্রপাতি পুড়ে যায়। মূলত দুষ্কৃতকারীদের কারণে ভবনটিতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। এতে অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন বলে দাবি ওঠে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষার্থী ও তদন্ত কমিটি কর্তৃক গণশুনানিতে ভিন্ন ভিন্ন তালিকা তৈরি করা হয়। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে ১৮২ জন নিখোঁজ ব্যক্তির ঠিকানা পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট থেকে কারখানাটি বন্ধ ছিল। ফলে অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রতিষ্ঠানে কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন না। এজন্য কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিখোঁজ হননি। ওই দিন থেকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সংযোগের কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটেনি। ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, অধিক পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় ২১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরে আবারও আগুন জ্বলে ওঠে। সর্বশেষ ৩০ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার পর ১০-১৫ জন ব্যক্তি সেখান থেকে বের হয়ে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে সেখানে কোনও লাশ পাওয়া যায়নি। তবে ১ সেপ্টেম্বর ভবনের ভেতরে ১৫ খণ্ড হাড় পাওয়া যায়।

ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক ভবনটিতে উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য সহায়তা চাওয়া হলে বুয়েট টিমসহ নারায়ণগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের প্রতিনিধি দল সরেজমিনে ফায়ার সার্ভিসের টিটিএল এবং ড্রোন দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর পরিদর্শন করে। ভবনের চার ও পাঁচতলার ছাদ ধসে তিনতলার ওপর পতিত হয়েছে। ভবনের কলামগুলো ফেটে গেছে। আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় ভবনের আরসিসি পিলার ও ছাদের ঢালাই খসে পড়ছে। অধিক তাপের কারণে বিভিন্ন ফ্লোরের বিম এবং ছাদের রডগুলো বাঁকা এবং এলোমেলো অবস্থায় আছে। ইটের দেয়ালগুলো বাঁকা হয়ে হেলে পড়েছে। ফলে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় উদ্ধারকাজ চালানো উচিত হবে না এবং ভবনটি অপসারণ করতে হলে পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে। ফলে ভবনের ভেতরে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি।  

সর্বশেষ নিখোঁজদের সন্ধান চেয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্বজনরা। একই দাবিতে গত ৮ জানুয়ারি দুপুরে রূপগঞ্জ থানায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এরপরও নিখোঁজদের সন্ধানের কাজে গতি আসেনি।