Image description

২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি। কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে জামালপুরের দুমুঠ ইউনিয়নের বটতলা বাজার এলাকায় রেললাইনে বসে মোবাইলে গেম খেলছিল দুই স্কুলছাত্র। স্টেশনে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা এসে একবার তাদের উঠিয়ে দেন। আনসার সদস্যরা চলে গেলে তারা আবার এসে বসে। এসময় দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে কাটা পড়ে মজিবর ও শাকিল নামে দুই কিশোরের মৃত্যু হয়। কানে ইয়ারফোন থাকায় তারা ট্রেন আসার বিষয়টি টের পায়নি বলে ধারণা স্থানীয়দের।একই বছরের ১১ নভেম্বর লালমনিরহাটের পাটগ্রামে করতোয়া এক্সপ্রেসে কাটা পড়ে চার দিনমজুর প্রাণ হারান। উপজেলার আলাউদ্দিন নগর রেলস্টেশন এলাকায় রেললাইনে বসে গল্প করছিলেন তারা। পাশে ধান মাড়াইয়ের শব্দে ট্রেন আসার বিষয়টি টের পাননি।

শুধু অসচেতনতায় রেললাইনের দুই পাশে ১০ ফুট করে এলাকায় সব সময় ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু। রেললাইন ধরে অসতর্কভাবে হাঁটা, কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে রেললাইনের পাশ দিয়ে যাতায়াত, তাড়াহুড়া করে রেলক্রসিং পার হওয়া, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ এবং চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে সেলফি তোলাসহ বিভিন্ন কারণে বাড়ছে মৃত্যুর ঘটনা। এছাড়া চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা তো আছেই। তবে পরিসংখ্যান বলছে, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে রেললাইন ধরে হাঁটা কিংবা বসে গল্প করার সময়।

ট্রেন ঘিরে হত্যাকাণ্ডের মতো আরও ঘটনাও ঘটছে, যা নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে সাজানো হচ্ছে। আবার হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে মেলে না ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। ফলে জানা যায় না মৃত্যুর আসল রহস্য। কিছু ক্ষেত্রে রিপোর্ট পাওয়া গেলেও থাকে অন্য রহস্য। কীভাবে তার মৃত্যু হলো, কেন লোকটি ট্রেনে কাটা পড়লো কিংবা কেউ তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দিলো কি না তারও কোনো উত্তর মেলে না।

রেললাইন যে এলাকায় রয়েছে সেসব এলাকায় বিট পুলিশিং করা হয়। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়। মানুষ সচেতন না হলে যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে না ঠিক সেভাবে রেলের দুর্ঘটনাও কমবে না।-ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস

মৃত্যুর ধরন দেখে প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনা মনে হলেও, দেখা যায় হত্যাকাণ্ড চাপা দিতে খুনিরা মরদেহ এনে রেললাইনে ফেলে দুর্ঘটনা বলেও চালিয়ে দেন। সে কাজে তারা অনেকাংশে সফলও হন। এসব হত্যার রহস্য উদঘাটনে বরাবরই উদাসীন রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)। রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর রহস্য। আবার ট্রেন দুর্ঘটনায় বেশির ভাগ মামলাই দায়ের করা হয় অপমৃত্যু হিসেবে। সেসবের সঠিক কোনো তদন্তও হয় না।

ট্রেনে কাটা পড়ে বছরের এক হাজারের বেশি মৃত্যু
রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় মোট মামলা হয় ১ হাজার ৫৪টি। মোট মরদেহ উদ্ধার করা হয় ১ হাজার ৬৪ জনের। এর মধ্যে পুরুষ ৮২৬ এবং নারী ২৩৮ জন। কানে ইয়ারফোন থাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয় ১৮ জনের। ট্রেনলাইনের ওপর বসে গল্প ও চলাচলের কারণে মৃত্যু হয় ৫০২ জনের। অসতর্কভাবে রেলওয়ে ক্রসিং পারাপারের চেষ্টার সময় মৃত্যু হয় ৩৮৭ জনের। ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু ২৩ এবং অপমৃত্যু হয় (মৃত্যুর সঠিক কারণ অজানা) ১৩৪ জনের।

 

২০২৪ সালে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় মোট মামলা হয় ৯৯৮টি। মোট মরদেহ উদ্ধার করা হয় ১০১৭ জনের। এর মধ্যে পুরুষ ৭৯৪ এবং নারী ২২৩ জন। কানে ইয়ারফোন থাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয় ৭৬ জনের। ট্রেন লাইনের ওপর বসে গল্প ও চলাচলের কারণে মৃত্যু হয় ৫০৪ জনের। অসতর্কভাবে রেলওয়ে ক্রসিং পারাপারের চেষ্টার সময় মৃত্যু হয় ২৭২ জনের। ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় ২৩ জনের এবং অপমৃত্যু হয় (মৃত্যুর সঠিক কারণ অজানা) ১৪২ জনের।রেল পুলিশের তথ্যমতে, ঢাকা জোনের রেলওয়ে থানার অধীনে পাঁচটি ফাঁড়ি এলাকা থেকে গত চার বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে ১ হাজার ৮০১ জনের মৃত্যু হয়। এই ফাঁড়ি এলাকাগুলো হলো- টাঙ্গাইল, টঙ্গী, জয়দেবপুর, এয়ারপোর্ট ও নারায়ণগঞ্জ।এর মধ্যে অর্ধশতাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ইয়ারফোন লাগিয়ে রেললাইন দিয়ে বা পাশ দিয়ে চলার সময়।

২০২১-২০২৪ সালে ঢাকা রেলওয়ে জেলায় মৃত্যু-মামলা
২০২১ সালে মোট মরদেহ উদ্ধার ৩৭৭ জনের, কানে ইয়ারফোন থাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু ১৬, ট্রেন লাইনের ওপর বসা বা চলাচলে মৃত্যু ১৪৭, অসতর্কভাবে রেলওয়ে ক্রসিং পারাপারে মৃত্যু ১৬২, ট্রেনের সঙ্গে যানবাহনের দুর্ঘটনায় মৃত্যু একজনের এবং অসুস্থতাজনিত/আত্মহত্যা/মানসিক প্রতিবন্ধিতার কারণে মৃত্যু ৫১ জনের।

২০২২ সালে মোট মরদেহ উদ্ধার ৪৭১ জনের, কানে ইয়ারফোন থাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু একজনের, ট্রেন লাইনের ওপর বসা বা চলাচলে মৃত্যু ২২৮, অসতর্কভাবে রেলওয়ে ক্রসিং পারাপারে মৃত্যু ১৬৮, ট্রেনের সঙ্গে যানবাহনের দুর্ঘটনায় মৃত্যু একজনের এবং অসুস্থজনিত/আত্মহত্যা/মানসিক প্রতিবন্ধিতার কারণে মৃত্যু ৭৩ জনের।

বিজ্ঞাপন

 

২০২৩ সালে মোট মরদেহ উদ্ধার ৪৯৩ জনের, কানে ইয়ারফোন থাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু ১৫, ট্রেনলাইনের ওপর বসা বা চলাচলে মৃত্যু ২৪৪, অসতর্কভাবে রেলওয়ে ক্রসিং পারাপারে মৃত্যু ১৭২, ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু তিন, ট্রেনের সঙ্গে যানবাহনের দুর্ঘটনায় মৃত্যু ছয় এবং অসুস্থজনিত/আত্মহত্যা/মানসিক প্রতিবন্ধিতার কারণে মৃত্যু ৫৩ জনের।

দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আমরা নতুন একটি উদ্যোগ নিয়েছি। প্রত্যেক ট্রেনের সামনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। যাতে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছিল নাকি দুর্ঘটনায় মৃত্যু তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যাবে।- রেলওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি সরদার তমিজ উদ্দিন আহমেদ

২০২৪ সালে মোট মরদেহ উদ্ধার ৪৬০ জনের, কানে ইয়ারফোন থাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু ১৭, ট্রেনলাইনের ওপর বসা বা চলাচলে মৃত্যু ২৪৪, অসতর্কভাবে রেলওয়ে ক্রসিং পারাপারে মৃত্যু ১৩৬, ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু এক এবং অসুস্থজনিত/আত্মহত্যা/মানসিক প্রতিবন্ধিতার কারণে মৃত্যু ৬২ জনের।

তদন্তের সূত্রে রেল পুলিশ বলছে, রেললাইন পার হওয়ার সময় বা লাইনের ওপর দিয়ে হাঁটার সময় মোবাইল ফোন ও কানে ইয়ারফোন ব্যবহার করা, রেললাইন ধরে অসতর্কভাবে হাঁটা, রেললাইনের পাশ দিয়ে নিরাপদ দূরত্ব না মেনে যাতায়াত করা, না দেখে তাড়াহুড়া করে লেভেলক্রসিং পার হওয়া, চলন্ত ট্রেন আসার সময় সেলফি তোলার চেষ্টা, রেললাইনের ওপর বসে বেখেয়াল হয়ে গল্প করার কারণে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এছাড়া চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও আছে।

 

লেভেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা সম্পর্কে রেলওয়ে কর্মকর্তাদের বক্তব্য, ট্রেন নির্ধারিত পথে চলে, রাস্তায় গিয়ে কোনো যানকে ধাক্কা দেয় না। বরং বিভিন্ন যান রেললাইনে উঠে ট্রেনকে ধাক্কা দেয়। এতে রেলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। মাঝে মধ্যে ট্রেনযাত্রীও প্রাণ হারাচ্ছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন
রেলওয়ে সদর দপ্তরের তথ্য বলছে, রেল এখনো ১৮৬১ সালের ব্রিটিশ শাসনামলের পুরোনো আইনে চলছে। রেলের প্রচলিত আইনে রেললাইন ধরে হাঁটা অবৈধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু লাইন নয়, লাইনের দুই পাশে (১০ ফুট করে) ১৪৪ ধারা জারি থাকে সব সময়। বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন অনুযায়ী, এই সীমানার ভেতর কাউকে পাওয়া গেলে তাকে আইনের ১০১ ধারায় গ্রেফতার করা যায়। এমনকি এই সীমানার ভেতরে গবাদি পশু চরলে আটক করে তা বিক্রি করে সেই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার বিধানও রয়েছে। কিন্তু এ আইন প্রতিনিয়তই ভঙ্গ করছেন পথচারীরা। তাই প্রতিনিয়তই ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

যা দেখা গেলো সরেজমিনে
সম্প্রতি সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী ও মগবাজার গিয়ে দেখা যায়, লেভেলক্রসিংয়ের দুই পাশে মানুষ আড্ডার পাশাপাশি নানান কাজে ব্যস্ত। কেউ কেউ রেললাইনের ওপর দিয়ে যেতে যেতে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন, আশপাশে কোনো খেয়ালই নেই। দু-চারজন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা রেললাইনের ওপর বসে চা, পান-সিগারেট বিক্রি করছেন। মাদকদ্রব্য কেনাবেচা ও সেবনও বাদ নেই। লাইন দিয়ে ট্রেন একেবারে কাছাকাছি আসার পর কয়েকজনকে দৌড়ে রেললাইন পার হতেও দেখা যায়। ক্রসিংয়ে সিগন্যাল থাকার পরেও ফাঁকফোকর দিয়ে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল ও পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।

রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা হয়ে বিমানবন্দর-টঙ্গী পর্যন্ত রেললাইন যেন সড়কপথ। এপথ ধরে দিন-রাত শত শত লোক চলাচল করে। ঢাকা রেলওয়ে রেঞ্জেই সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা হয়। রেল থেকে হাজারও সচেতনতার বার্তা-ব্যানার ফেস্টুন লাগালেও সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু এবং পূবাইল রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ঢাকা রেঞ্জের মধ্যে। এ পথেই ট্রেনে কাটা পড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। মানুষকে সচেতন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত মাইকিং, ব্যানার, ফেস্টুন বিতরণ করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।

৬ মাসেও উদঘাটন হয়নি নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে ৫ তরুণের মৃত্যু রহস্য

গত বছরের ৮ জুলাই নরসিংদীর রায়পুরায় রেললাইন থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার হলেও ছয় মাসেও তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। মরদেহ উদ্ধারের একদিন পর ৯ জুলাই নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের বেওয়ারিশ কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।

 

পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয় নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে। এরপর লাশগুলো পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হলে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। বাধ্য হয়েই পরবর্তীসময়ে সেগুলো স্টেশনের নিকটস্থ বেওয়ারিশ কবরস্থানে দাফন করা হয়। তবে তাদের পরনের কাপড় সংগ্রহে রাখা হয়েছে, মুখের লালা এবং দাঁত রাখা হয়েছে ফরেনসিক ও ডিএনএ টেস্টের জন্য।

পিবিআই জানায়, ওই পাঁচজনের আঙুলের ছাপ নেওয়া হলেও সার্ভার থেকে তাদের ফিঙ্গারের বিপরীতে কোনো এনআইডি পাওয়া যায়নি।

নরসিংদীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের এসআই মো. জমির বলেন, ‘তাদের সবার ফিঙ্গার থেকে নো ম্যাচ ফাউন্ড লেখা আসছে। আমাদের ধারণা পাঁচজনের কারোরই এনআইডি নেই। যদি কারও থাকতো একজনের হলেও এনআইডি আসতো।’

ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘রেললাইন যে এলাকায় রয়েছে সেসব এলাকায় বিট পুলিশিং করা হয়। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়। মানুষ সচেতন না হলে যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে না ঠিক সেভাবে রেলের দুর্ঘটনাও কমবে না।’

রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘রেলে দুর্ঘটনা কমাতে জনগণকে সবার আগে সতর্ক হতে হবে। কানে ইয়ারফোন, রেললাইনে বসে গল্প কিংবা রেললাইনের ওপর বাজার বসানো ঠিক নয়। ট্রেনের ছাদে একদমই ওঠা উচিত নয়। সাধারণ রাস্তাঘাটে আমরা যেভাবে চলাচল করি ঠিক সেভাবেই রেললাইনে চলাচল করতে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব।’

ট্রেনের সামনে বসবে ক্যামেরা
রেলওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি সরদার তমিজ উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু দুই ধরনের। এক আত্মহত্যা করা, দুই দুর্ঘটনায় ট্রেনে কাটা পড়া। আত্মহত্যা কিংবা দুর্ঘটনা যেভাবেই মৃত্যু হোক তা রোধে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আমরা নতুন একটি উদ্যোগ নিয়েছি। প্রত্যেক ট্রেনের সামনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। যাতে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছিল নাকি দুর্ঘটনায় মৃত্যু তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘রেলওয়ের প্রতি তিন কিলোমিটার ওয়েম্যান পদের একজন করে কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকেন। এই কর্মকর্তাদের সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশের সমন্বয় করার চেষ্টা চলছে। যাতে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পেতে পারে। এছাড়া যেসব জেলা ও উপজেলায় রেললাইন রয়েছে সেসব এলাকায় ডিএসবির সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশের রেলওয়ে স্পেশাল ব্রাঞ্চের (আরএসবি) সমন্বয় করার চেষ্টাও চলছে। রেললাইনে দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতা করতে টিভিসি নির্মাণ করারও পরিকল্পনা রয়েছে।’