বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে চট্টগ্রাম নগরীতে শোকের আবহ নেমে এসেছে। নগরীর নূর আহমদ সড়কের নাসিমন ভবনে অবস্থিত নগর বিএনপির কার্যালয়ে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর থেকেই জড়ো হতে থাকেন দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
নাসিমন ভবনে খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি ছাড়াও যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। কার্যালয় প্রাঙ্গণে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে উপস্থিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আজ বাংলাদেশের মানুষ একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক নেত্রীকে হারাল। তিনি শুধু বিএনপির নেত্রী ছিলেন না, ছিলেন দেশের কোটি মানুষের নেত্রী। দেশের যে কোনো দুর্যোগে তিনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আজীবন ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপোষহীন ছিলেন। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে তার ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
নগর বিএনপির নেতা আবুল হাশেম বক্কর বলেন, নেত্রী আমাদের শিখিয়ে গেছেন আপোষহীনতা। কোনো স্বৈরাচার বা অন্যায়ের সঙ্গে তিনি কখনো আপোষ করেননি। সামনে কঠিন রাজনৈতিক সময়, যখন তার প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশি— ঠিক তখনই তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।
চট্টগ্রাম-৯ আসনের বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাকে হারিয়ে আমরা দিশাহারা। তার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তেই আমাদের রাজনীতি।
নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী বলেন, তিনি ছিলেন আপোষহীন ও নির্ভীক নেত্রী। সারাজীবন দেশের মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তার আদর্শ আমাদের পথ দেখাবে।
নগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিএম সালাউদ্দিন কাদের আসাদ বলেন, দেশনেত্রী কখনো দেশ ছেড়ে যাননি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে কারাগারে রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ ৪০ দিন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার ভোরে চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘আপোষহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪১ বছর। তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি সাত দিনব্যাপী শোক পালন করবে। চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য জানাজায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।