দেশের মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে গতবছরের থেকে ১২ দিন ছুটি কমানো হয়েছে। পাশাপাশি পবিত্র রমজান মাসের অর্ধেক সময় স্কুল খোলা রাখা হবে। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
তারা বলছেন, আমলারা শিক্ষকদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন। পুরো রমজান মাসই ছুটি চাই। রোজা রেখে পাঠদান করা অসম্ভব।
রবিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কমকর্তারা বলছেন, সিলেবাস শেষ করার উদ্দেশেই রমজানের ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাকরি, শিক্ষকরা বিষয়টি বুঝবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, শুক্র ও শনিবার যেসব দিবস পড়েছে সেগেুলো উল্লেখ করা হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মূল লক্ষ্য বছরে ৫২টি শুক্রবার, ৫২টি শনিবার তাহলে ৩৬৫ দিনে চলে গেলো ১০৪ দিন। এখানে আরো ৬৪ দিন ছুটি যোগ হলো।
মোট ছুটি হলো ১৬৮ দিন। বছরে তিনটি পরীক্ষা ১২ দিন করে ৩৬ দিন। তাহলে দেখা শুনাতেই ২০৫ দিন আমাদের ক্লাস হবে না। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান বই বিতরণ, মিলাদ মাহফিল, এসএসসির বিদায় এগুলোতো শুক্র শনিবার হয়না। সব মিলিয়ে ক্লাসতো ১৫০ দিনও হয় না।
এ লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে ছুটি কমানো হয়েছে। এটা মাথায় রেখেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় কমিয়েছে বলে আমি ধারণা করছি। অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীদের শ্রেণি পাঠদান নিশ্চিত করতে, সিলেবাস কভার করতে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমানো হয়েছে, রমজানে ২ সপ্তাহ ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ছুটির তালিকায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের অর্ধ-বার্ষিক বা প্রাক নির্বাচনি পরীক্ষা ২৮ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত। আর ফল প্রকাশ ২৯ জুলাই। নির্বাচনি পরীক্ষা ২৮ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। ফল প্রকাশ হবে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে। বার্ষিক পরীক্ষা ১৯ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে।
তালিকায় দেখা যায়, মোট ৬৪ দিন ছুটির মধ্যে ৮ মার্চ থেকে রমজান ধরে ঈদুল ফিতর, জুমাতুল বিদা, স্বাধীনতা দিবসসহ কয়েকটি ছুটি মিলিয়ে টানা ১৯ দিন স্কুল বন্ধ থাকবে। দীর্ঘ ছুটি চলবে ২৬ মার্চ পর্যন্ত। শুক্রবার ও শনিবার থাকায় স্কুল খুলবে ২৯ মার্চ।
ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি থাকবে টানা ১২ দিন। এ ছুটি ২৪ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত চলবে। তারপরে শুক্র ও শনিবারের ছুটির পরে ৭ জুন থেকে স্কুল খুলবে। এই ছুটি গত বছর ছিলো ১৫ দিন।
দুর্গাপূজায় এবার ৫ দিন ছুটি রাখা হয়েছে। এর বাইরে লক্ষ্মী পূজা, প্রবারণা পূর্ণিমা মিলিয়ে একদিন ছুটি রাখা হয়েছে। ফাতেমা ই ইয়াজ দাহমে একদিন ছুটি রয়েছে।
এ ছাড়া এবারও প্রতিষ্ঠানের প্রধানের হাতে সংরক্ষিত দুইদিন ছুটি রাখা হয়েছে। গতবছর এই ছুটি ছিলো ৩ দিন। এর বাইরে বিভিন্ন জাতীয়, আন্তর্জাতিক দিবস ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে নিয়ম মেনে ছুটি থাকবে।