Image description
 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে মোবাইল সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করছে সরকার। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে একজন গ্রাহক তার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সর্বোচ্চ পাঁচটি নতুন সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। বর্তমানে যাদের নামে ছয় থেকে দশটি সিম রয়েছে, তাদের সিমের সংখ্যাও পর্যায়ক্রমে কমিয়ে পাঁচে নামিয়ে আনা হবে। যদিও মোবাইল ফোন অপারেটররা এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে, তবে বিটিআরসি বলছে যে সিমের অপব্যবহার এবং নানা অনিয়ম রোধ করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

 

সিম ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে নবম স্থানে অবস্থান করছে, যা অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক এগিয়ে। বিটিআরসির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কিছু অসাধু বিক্রেতা গ্রাহকদের অজান্তে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করে অবৈধভাবে সিম নিবন্ধন করছে। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে একজন গ্রাহকের একই দিনে দুইটির বেশি সিম কেনাকে অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছে সংস্থাটি। বিটিআরসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবরে দেশে মোবাইল সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজারে, যার মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

গত এক দশকে বাংলাদেশে সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালে যেখানে ব্যবহারকারী ছিল ১৩ কোটি ৩৭ লাখ, ২০২০ সালে তা বেড়ে ১৭ কোটিতে দাঁড়ায়। বর্তমানে দেশে মোট নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা ২৬ কোটি ৬৩ লাখ হলেও তার মধ্যে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ১৯ কোটি। সিমের অপব্যবহার ঠেকাতে গত আগস্ট মাসেই বিটিআরসি নির্দেশ দিয়েছিল যে, এক ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সিম থাকলে অতিরিক্ত সিমগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাতিল করতে হবে। এই নির্দেশনার পর প্রায় ১৫ লাখ সিম গ্রাহকরা স্বেচ্ছায় বাতিল করলেও এখনও প্রায় ৫০ থেকে ৫৩ লাখ অতিরিক্ত সিম রয়ে গেছে।

 

বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যারা অতিরিক্ত সিম ডি-রেজিস্ট্রেশন করেননি, তাদের সিমগুলো এখন পর্যায়ক্রমে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হবে। সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এমদাদ উল বারী স্পষ্ট করেছেন যে, ২০২৬ সালের প্রথম দিন থেকেই নতুন করে সিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পাঁচটির বেশি সিম রাখার কোনো সুযোগ আর থাকবে না।