ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় ব্লকেড করেছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ অবস্থান নেন। প্রথমে শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাবগামী সড়ক বন্ধ হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক জনসমাগম সৃষ্টি হওয়ায় পুরো শাহবাগ এলাকা দিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় তারা উপদেষ্টাদের শাহবাগে এসে হাদি হত্যাকাণ্ডের অগ্রগতি সমপর্কে না জানানো পর্যন্ত শাহবাগ ব্লকেড করার ঘোষণা দেন। হাদি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
আন্দোলনকারীরা ‘আপস না বিপ্লব, বিপ্লব বিপ্লব’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’, ‘শাহবাগ না ইনসাফ, ইনসাফ ইনসাফ’, ‘এই দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, হাদি হত্যার বিচার চাই, দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে মুখরিত করেন শাহবাগ চত্বর।
এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, ‘সুশীলতা অনেক হয়েছে। সুশীলতার কারণে ওসমান হাদির রক্ত এই জমিনে ঝরেছে। আমাদের আর পেছনে যাওয়া চলবে না। আমাদের এই রাজপথ শহীদের রক্তের বদলা নেয়ার জন্য। তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দিয়ে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের উপদেষ্টারা তারা এখানে এসে জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে জবাব না দেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই জায়গা ছেড়ে যাবো না। প্রয়োজনে তারা শাহবাগ চত্বরে রাত্রিযাপন করবেন। বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথেই থাকবেন। এই অবরোধ চলছে, এই অবরোধ চলবে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা যাবেন না। তিনি আরও বলেন, সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ওসমান হাদির যে লড়াই ছিল, তা চলছে। ওসমান হাদিকে সামনে রেখে এই লড়াই চলবে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের লড়াই চলবে। কোনোভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিনষ্ট হতে দিবো না। আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, এই জমিন হাদির রক্তে ভিজেছে। অথচ এখন কেউ কেউ এসে আমাদের বলেন, এই কাজ করো না, ওই কাজ করো না। কিন্তু আমরা দেখছি, আপনারা ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে হাজিরা দিয়ে আসেন। সমাবেশে তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে যতদিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে না পারবে, যতদিন পর্যন্ত একজন নারী হিজাব পরে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে না পারবে, ততদিন পর্যন্ত প্রকৃত স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে না।
আন্দোলনে যোগ দিয়ে রাকসুর জিএস সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আমরা এখানে বক্তব্য দিতে আসিনি। বক্তব্য ও ইনসাফের জন্য যা বলা দরকার সব ওসমান হাদি ভাই আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছেন আমরা শুধু হাদি ভাইয়ের রক্তের বদলা এবং হত্যার বিচার চাইতে এসেছি।