বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য সম্মেলন–২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আজ শুধু একটি সাধারণ ছাত্র সংগঠন নয়। চব্বিশের বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের আপামর ছাত্রসমাজ এই সংগঠনকে গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে ছাত্রসমাজের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করার ম্যান্ডেট দিয়েছে।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন অনু্ষ্ঠানে ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেছেন, ‘শিবির, তোমাদের কাঁধে অসংখ্য শহীদের লাশ। তোমাদের কাছে মানুষের হাজারো প্রত্যাশা। ছাত্রসমাজের কাছে তোমাদের এই বিজয় ইঙ্গিত দিচ্ছে, আগামী বাংলাদেশে ইনসাফের জয় হবে, ইনশা আল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে চরিত্র গঠন, নৈতিক ও আধুনিক শিক্ষা এবং গবেষণার উর্বর ক্ষেত্রে পরিণত করতে হবে। ছাত্রশিবিরের কাছ থেকে মানুষ যদি হতাশ হয়, তাহলে যাওয়ার বিকল্প এখনো কোনো জায়গা তৈরি হয়নি। তিনি বলেন, দুঃখের বিষয়, ৫৪ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের হাত থেকে কলম কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। কোমলমতি ছাত্রদের বিভ্রান্ত করে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মিনি ক্যান্টনমেন্টে পরিণত হয়েছিল। আমাদের মেয়েদের ইজ্জতের কোনো গ্যারান্টি ছিল না। ছাত্রদের জীবনের কোনো গ্যারান্টি ছিল না। তাদের ক্যারিয়ারেরও কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। সন্তানদের এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে মা–বাবারা সব সময় উদ্বেগ–উৎকণ্ঠায় থাকতেন।
তিনি বলেন, সেই কালো অধ্যায় আজ বিদায় নিতে শুরু করেছে। কিন্তু কালো ছায়া এখনো জাতির ওপর থেকে যায়নি। এই কালো ছায়াকে খতম করা পর্যন্ত আমাদের লড়াই ছাত্রশিবিরের লড়াই—অব্যাহত রাখতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, আর যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কলমের বদলে অস্ত্র হাতে না ওঠে, মাদকের বোতল হাতে না ওঠে। মেয়েদের নিয়ে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি যেন না হয়। মেয়েরা যেন শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে লেখাপড়া করতে পারে। প্রতিটি ছাত্র যেন তার মেধা বিকাশ করতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রধান দায়িত্ব ছাত্রশিবিরের ওপর অর্পিত হয়েছে। আর ছাত্রশিবিরের জন্মও হয়েছে এজন্যই। আমরা দেখতে চাই, আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষককে যেন অপদস্থ করা হবে না। ছাত্র ও শিক্ষকের সম্পর্ক হবে পিতা–পুত্রের সম্পর্ক। আমরা সেই পরিবেশটাই দেখতে চাই।