জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় অন্য কেন্দ্র থেকে ভুলক্রমে চলে আসা শিক্ষার্থীদের তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে ‘স্টুপিড’ বলে গালি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী ঘনিষ্ঠ প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: আবদুল আলীম। এসময় তিনি সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে হেনস্তাও করেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং দৈনিক দেশ রুপান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফাতেমা আলী।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানান, এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ভুল করে অন্য কেন্দ্র থেকে ৬ জন শিক্ষার্থী এই কেন্দ্রে চলে আসে। তাদের বিষয়ে তথ্য জানার জন্য ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক সেখানে দায়িত্বরত অধ্যাপক মো. আবদুল আলীম এর কাছে সাংবাদিকরা তাদের বিষয়ে তথ্য জানতে চায়। তখন তিনি চড়াও হয়ে সাংবাদিকদের কাছে তথ্য জানতে চাওয়ার কারণ জানতে চান।
সাংবাদিকরা বিষয়টি বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করলে, অধ্যাপক মো. আবদুল আলীম চড়াও হয়ে দুই সাংবাদিককে বলেন, স্টুপিড কোথাকার। আমাকে শিখাইতে আসছে কিভাবে কি করতে হবে। যাও এখান থেকে।
এ বিষয়ে দেশ রূপান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফাতেমা আলী বলেন, ভুল কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসে ৬ জন পরীক্ষার্থী, এই খবর পেয়ে আমি আর দৈনিক সংবাদের মেহেদী হাসান ভাই জবির মেডিকেল সেন্টারে কেন্দ্রের বাইরে এই বিষয়টির বিস্তারিত জানতে চাই অধ্যাপক আবদুল আলীম স্যারের কাছে।
উনি বলেন এই বিষয়ে আমি কিছু বলবো না তোমাদের কাছে কেন এই বিষয় বলবো।সাংবাদিক তোমারা এই কত ব্যাচ,কোন ইয়ারে পড়ো। ষ্টুপিড, কোথাকার। আমাকে শিখাইতে আসছে কিভাবে কি করতে হবে। যাও এখান থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম সাবেক বিতর্কিত আওয়ামীপন্থী উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলদলপন্থি শিক্ষকদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণেই ঘটনার পরপরই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কক্ষে গেলে সেখানে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক ড. জনসংযোগ পরিচালক হলেন আনওয়ারুস সালাম বলেন, ‘একজন শিক্ষক এভাবে একজন শিক্ষার্থীকে বলতেই পারেন। এটা স্বাভাবিক বিষয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম বলেন, ‘আমি তাকে স্টুপিড বলিনি। সেখানে অনেকে ছিল তাদের থেকে জেনে নিতে পারেন। আমি ডীনের দায়িত্বে আছি, আর সে আমাকেই জ্ঞান দিচ্ছে। তাই আমি কথা বলেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি, আমরা এখন ব্যস্ত সব কিছু নিয়ে। পরবর্তীতে বিষয়টি বিবেচনায় নিবো।