Image description
 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত ঐতিহাসিক গণসংবর্ধনায় দেওয়া বক্তব্য নিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের অপপ্রচার শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, তারেক রহমান তার সম্পূর্ণ ভাষণে ভারতের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। এরপরও ‘এবিপি আনন্দ’ নামের একটি গণমাধ্যম অপ্রাসঙ্গিকভাবে শিরোনামে ‘ভারত নিয়ে পরিকল্পনা’ যুক্ত করেছে। প্রতিবেদনে এই দাবির কোনো প্রমাণ বা ব্যাখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।

বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান টিম জানিয়েছে, ভারতের গণমাধ্যম এবিপি আনন্দ তারেক রহমানের বক্তব্যের ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ অংশটুকুই ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর শিরোনাম তৈরি করেছে। তারেক রহমানের ভাষণে ভারতকে নিয়ে কোনো পরিকল্পনার কথা ছিল না। তবে বক্তব্যের একটি অংশ বিকৃতভাবে তুলে ধরে বিভ্রান্তিকর শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

 

গত ২৫ ডিসেম্বর দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফেরেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশে ফিরে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে নিজের একটি পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। পরিকল্পনাটি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেননি, তবে বাস্তবায়নের জন্য দেশের সব স্তরের মানুষের সহযোগিতা চান।

 

তিনি তার ভাবনার কথা বলার আগে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ৬২ বছর আগের ঐতিহাসিক ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’ ভাষণ স্মরণ করেন। সেই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনি বলেন, ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান।’

 

তারেক রহমান বলেন, প্রিয় ভাই-বোনেরা, আমরা দেশের শান্তি চাই। মার্টিন লুথার কিং-এর নাম শুনেছেন তো আপনারা। তার একটি বিখ্যাত ডায়ালগ আছে, ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’। আজ এই বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আপনাদের সকলের সামনে আমি বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সদস্য হিসেবে, আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান, ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি, ফর মাই কান্ট্রি। এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের স্বার্থে।

ভারতের এবিপি আনন্দ তারেক রহমানের ভাষণ নিয়ে ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান... বাংলাদেশে ফিরেই বিস্ফোরক খালেদা পুত্র, ভারতকে নিয়ে পরিকল্পনা?’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তবে বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, তারেক রহমান তার ভাষণে ভারত সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। শিরোনামে ‘ভারত নিয়ে পরিকল্পনা’ যুক্ত করা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক।

ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, গত এক বছরের মধ্যে ভারতীয় গণমাধ্যম, ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট এবং দেশের কিছু ফেসবুক পেজে বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে। এসব অপতথ্য বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ২০২৪ সালের আন্দোলনে অংশ নেওয়া দল ও সংগঠনকে লক্ষ্য করে প্রচারিত হচ্ছে।

বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া শত শত ভুল তথ্য ইতোমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ চালাচ্ছে।