বৈশ্বিক বাজারে স্বর্ণের দাম আবারও রেকর্ড ছোঁয়ার পথে এগোচ্ছে। মঙ্গলবার দুর্বল মার্কিন ডলার, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের ভবিষ্যৎ নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা—সব মিলিয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।
লেনদেনে স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম ০.৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৪,৪৮২.৭০ ডলারে দাঁড়ায়। এক পর্যায়ে দাম আরও বেড়ে ৪,৪৯৭.৫৫ ডলারে পৌঁছায়, যা ঐতিহাসিক ৪,৫০০ ডলারের সীমার খুব কাছাকাছি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফেব্রুয়ারি ডেলিভারির স্বর্ণ ফিউচার্সের দাম ১ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৪,৫১৪.৭০ ডলারে ওঠে।
বিশ্লেষকদের মতে, একাধিক কারণ একসঙ্গে স্বর্ণের দামে এই ঊর্ধ্বগতি তৈরি করেছে। সুইসকোট ব্যাংকিং গ্রুপের বিশ্লেষক কার্লো আলবার্তো দে কাসা জানান, ফেডের নীতিগত অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা, ডলারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাওয়া, চলমান ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারাবাহিক স্বর্ণ ক্রয়—সব মিলিয়ে স্বর্ণে বিনিয়োগের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
এদিকে মার্কিন ডলার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দুর্বল অবস্থানে রয়েছে এবং ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে বড় বার্ষিক পতনের দিকে এগোচ্ছে। সাধারণত ডলার দুর্বল হলে ডলারে মূল্যমান নির্ধারিত পণ্যের দাম বাড়ে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে স্বর্ণের বাজারে।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী ট্যাংকারগুলোর ওপর ‘অবরোধ’ জারির নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংঘাতের সম্ভাবনাও পুরোপুরি নাকচ করেননি তিনি। এসব ঘোষণায় বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা আরও তীব্র হয়েছে, যার ফলে স্বর্ণ ও রুপার মতো নিরাপদ সম্পদের চাহিদা বাড়তে দেখা যাচ্ছে।