ফেনীর সোনাগাজীতে বিদেশী পিস্তল হাতে তরুণ-তরুণীকে ছাত্রদল নেতার ব্ল্যাকমেইল করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর উপজেলায় শুরু হয় তোলপাড়।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম আনোয়ার হোসেন ছোটন। সে উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের গুনক গ্রামের আবুল খায়ের টুক্কার ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ছাত্রদলের সহ সম্পাদকের দায়িত্বরত ছিলেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্রদল নেতা আনোয়ার হোসেন ছোটন অত্যাধুনিক পিস্তল হাতে এক তরুণ ও নেকাব পরা তরুণীকে পিস্তল তাক করে ধমকের সুরে বলছেন, ‘এ তুই ধর এতেরে, হেতে আকাম করার কারণে হেতের.... ভাঙ্গি দিচে! তুই বাঁচতে চচ, না, মরতে চচ, আঙ্গোরে চিনচ! এ কথা যদি করোরে বলচ, তাইলে, ভিডিও এটা ছাড়ি দিমু। কতা কিয়া কইছি মনে থাইকবো নি।’
এদিকে ভিডিও প্রকাশের পর অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা আত্মগোপনে চলে যায় এবং তার ফোন নম্বরটি বন্ধ রয়েছে। ব্ল্যাকমেইলের শিকার তরুণ-তরুণীরও সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানায়, গত বছরের ৫ই আগস্টের পর থেকে ছোটনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে স্থানীয় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, ফাঁদে ফেলে তরুণ-তরুণীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে ছোটন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। ঘটনা যেন প্রকাশ না পায় তার জন্য পিস্তল প্রদর্শন করে আপত্তিকর অবস্থায় থাকতে বাধ্য করে ভিডিও ধারণ করে। পরে আদায় করা টাকা ভাগভাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ হলে সাঙ্গপাঙ্গদের কেউ ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব নুর আলম সোহাগ বলেন, আনোয়ার হোসেন ছোটন সাবেক ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলো। সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি না থাকায় আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা। আমি জেলা ছাত্রদলকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি।
ফেনী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন বলেন,ভাইলার ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। বর্তমানে সে দলের কোন পদ পদবীতে না থাকায় তার বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের সুযোগ আমাদের হাতে নেই। সে কাদের প্রশ্রয়ে রয়েছে সেটি আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। একই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
অন্যদিকে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি গত একমাস আগের হলেও সেটি এখন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি তবে ব্ল্যাকমেইলের শিকার তরুণ-তরুণীর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছে পুলিশ।