আবেগে পড়ে মনোনয়ন তুলেছি, এজন্য দুঃখিত বলে মন্তব্য করেছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে কুমিল্লা-৬ সদর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র ও বিএনপির বহিস্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কু।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার পরও নিজের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা ঠিক হয়নি। তবে এই আসনে যদি প্রার্থী পরিবর্তন হয় অথবা অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে তিনি নির্বাচন করবেন।’
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর রাণীর দিঘির পাড়ে নিজ বাসভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে রবিবার নিজের সমর্থকদের মাধ্যমে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে স্বতন্ত্র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সাক্কু। বিষয়টি কুমিল্লার রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। সেই প্রেক্ষিতে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের দুইবারের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নের আগ থেকেই দলের মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি তাদের জানিয়েছি, কুমিল্লা সদরের প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাকে যদি মনোনয়ন দেওয়া হয়, আমি তার সঙ্গে কাজ করব। সেই প্রেক্ষিতে মনিরুল হক চৌধুরীকে কুমিল্লা সদরে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আমি তাঁর সঙ্গে একজন কর্মীর মতো কাজ করছি। কিন্তু বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী ইয়াছিন (আমিন উর রশিদ) বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ফুল নিচ্ছেন, নানা কথা ছড়াচ্ছেন। মানুষের মধ্যে উদ্ভট পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন। তাঁর এই অবস্থান দেখে রাগে পড়ে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম- যেহেতু তিনি এরকমই করছেন, আমি একটি মনোনয়ন ফরম কিনে রাখি। আমি বহিস্কৃত নেতা, তাই দল থেকে মনোনয়ন পাব না; সেজন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম কিনেছি।’
কিন্তু মনোনয়ন ফরম কেনার পর সারারাত ভেবে দেখলাম, এটি আমার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ আমি তো মনিরুল হক চৌধুরীর লোক। তাকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছি; এখন আবার মনোনয়ন ফরম কেনা ভুল হয়েছে। এজন্য আমি দুঃখিত।’
মনিরুল হক সাক্কু আরও বলেন, ‘সদরে মনোনয়নপ্রত্যাশী ইয়াছিনের কার্যক্রম আমার ভালো লাগে না। কোনো কারণে যদি দলের মনোনয়ন পরিবর্তন হয় অথবা হাজী ইয়াছিনকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী করা হয়, তাহলে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব।’
উল্লেখ্য, কুমিল্লা-৬ সদর আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী। তবে গত ৩ নভেম্বর মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে সদরের অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী, চেয়ারপার্সনের আরেক উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, দীর্ঘ ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছেন। এ কারণে কুমিল্লা সদরে বিএনপির রাজনীতি স্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় হঠাৎ করে স্বতন্ত্র পদে সাবেক মেয়র সাক্কুর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ বিষয়টি আলোচনার জন্ম দেয়। সেই প্রেক্ষিতেই সোমবার সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন মনিরুল হক সাক্কু। অপরদিকে কুমিল্লা সদরে ইয়াছিন গ্রুপের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।