Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ওসমান হাদী হল’ নামকরণ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। হলের সামনে বা ভেতরে ‘শহীদ ওসমান হাদী হল’ লেখা ব্যানারও টানানো হয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিল কিংবা সিন্ডকেট—কোন সভাতেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়নি।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ওসমান হাদির নামে স্থাপনার নামকরণ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন পেয়েছে বলে জানা গেছে।

মেডিকেলগুলোর মধ্যে তাজউদ্দীন আহমদ ছাড়াও ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের (এসএসএমসি) ইন্টার্ন হোস্টেল ও গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের নাম ‘শহীদ ওসমান হাদি’ রাখার দাবি জানানোর তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জ মেডিকেলে ‘শহীদ ওসমান হাদি হল’ ও এসএসএমসিতে ‘শহীদ ওসমান হাদি ইন্টার্ন হোস্টেল’ লেখা ব্যানার টানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে আনুষ্ঠানিক নামকরণের জন্য মেডিকেল প্রশাসনের কাছে দাবিও জানিয়েছেন।

মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যু সংবাদে গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে গায়েবানা জানাজা ও প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. নাজমুস সাকিব কলেজ ছাত্রাবাসের নাম শহীদ ওসমান হাদির নামে নামকরণের প্রস্তাব দেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তার প্রস্তাবের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার শিক্ষার্থীরা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জোবাইদা সুলতানার নিকট আনুষ্ঠানিক নামকরণের দাবি জানান। একই দিন অধ্যক্ষের সভাপতিত্বে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা আহ্বান করা হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ছাত্রাবাসের নাম ‘শহীদ ওসমান হাদি হল’ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জোবাইদা সুলতানা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে শহীদ ওসমান হাদির নামে আমরা ছাত্রাবাসের নামকরণ করেছি। একাডেমিক কাউন্সিলে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আমাদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি অবগত করব।

এদিকে সলিমুল্লাহ মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, শহিদ শরিফ ওসমান হাদির ত্যাগকে স্মরণীয় রাখতে এসএসএমসি মিটফোর্ড হাসপাতালের ৪৭তম ব্যাচের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বর্তমান ইন্টার্ন হোস্টেলের নাম ‘শহীদ ওসমান হাদি ইন্টার্ন হোস্টেল’ রাখার ব্যাপারে একমত হন। নিজস্ব অর্থায়নে নামফলক তৈরি করে আজ রবিবার (২১) হোস্টেলের প্রধান ফটকে তা স্থাপন করেন তারা। পাশাপাশি এই নাম অফিসিয়াল স্বীকৃতির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিক দাবি উপস্থাপন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

অপরদিকে বৃহস্পতিবার ওসমান হাদির শাহাদাতের ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল শেষে পরদিন আবারও বিক্ষোভের ডাক দেন গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ ও দোয়া অনুষ্ঠানের সময় তারা ছাত্রাবাসের নাম রাখেন ‘শহীদ ওসমান হাদি হল।’ একই সঙ্গে কলেজের একাডেমিক ভবনে ‘জুলাই ও আধিপত্যবাদবিরোধী কর্ণার’ স্থাপনের দাবিও জানিয়েছেন তারা।