Image description
 

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের পরিচিত মুখ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর দেশীয় গণমাধ্যমের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে প্রভাবশালী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে।

 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রথম দিকেই হাদির মৃত্যুর খবর প্রচার করে। তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত বছর বাংলাদেশের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, চিকিৎসকদের সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাদির মৃত্যুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। একই প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনার পর বিক্ষোভকারীরা তার হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। ডয়চে ভেলে আরও উল্লেখ করে, হাদি ভারতের কড়া সমালোচক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।

 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা যুব আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। একই ধরনের তথ্য প্রকাশ করে আরেক ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

 

এ ছাড়া ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর দেশের নানা জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনও একই সংবাদ প্রচার করেছে। পাশাপাশি সিএনএ, আল আরাবিয়া, দ্য সান মালয়েশিয়া, পাকিস্তানের ডন, জিও নিউজ ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করে। ভারতের দ্য টেলিগ্রাফ ও এনডিটিভিসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি গুরুত্ব পায়।

উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে প্রচারণার সময় শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা হয়। ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে আসা দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা হাদিকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, গুলিটি তার মাথার এক পাশ দিয়ে প্রবেশ করে অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়, তবে একটি অংশ মস্তিষ্কে রয়ে যায়। পরে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।