রাজধানীর বংশাল থানার সিক্কাটুলী এলাকা থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় থানা থেকে লুট হওয়া একটি বিদেশি পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হলেও এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে ওই ঘটনার মূল হোতা ‘বোম রায়হান গ্রুপ’-এর প্রধান রায়হান রাজ। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পুরান ঢাকার সিক্কাটুলী এলাকায় রায়হান রাজের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া পিস্তলটি CZ-75, 0-07 মডেলের, যা চেক প্রজাতন্ত্রে তৈরি। পরে বংশাল থানা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে, উদ্ধারকৃত পিস্তলটি ৫ আগস্টের পর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রের তালিকাভুক্ত।
অভিযানের সময় কৌশলে পালিয়ে যান রায়হান রাজ। সেনা সূত্রে জানা যায়, তিনি ওই এলাকার পরিচিত সন্ত্রাসী গ্রুপ ‘বোম রায়হান গ্রুপ’-এর প্রধান।
একই দিন সিক্কাটুলী এলাকায় ওই গ্রুপের সদস্য সামিরের বাসা থেকেও পৃথক অভিযান চালানো হয়। সেখানে একাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি সামুরাই, একটি বড় চাকু, দুটি ছোট চাকু এবং পাঁচটি কিলার গিয়ার (স্পোকেট)।
এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করে গ্রেফতার দেখানো হয়। তবে গ্রুপের প্রধান বোম রায়হান এখনো পলাতক রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিক্কাটুলী এলাকার একাধিক বাসিন্দা সাংবাদিকদের জানান, বোম রায়হান দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তার নেতৃত্বে এলাকায় চাঁদাবাজির একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। পাশাপাশি মাদক ব্যবসা ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। আসন্ন নির্বাচনের আগে বোম রায়হান গ্রুপের সব সদস্যকে গ্রেফতারের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
সেনা সূত্র জানিয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের যৌথ অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।
বংশাল থানার এসআই সৈয়দ ইয়াসির হোসেন বলেন, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় দুই থেকে তিনজন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে, যাদের মধ্যে রায়হান রাজ অন্যতম। তাকে গ্রেফতারে বর্তমানে পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।
তিনি আরও জানান, মামলার তদন্তভার বংশাল থানার ওসির ওপর ন্যস্ত রয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।