Image description

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সিলিং ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই আধুনিক টার্মিনালে মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপনের কোনো ব্যবস্থা নকশায় অন্তর্ভুক্ত না থাকায় সিলিংয়ের একটি অংশ ভেঙে পুনর্নির্মাণ ছাড়া বিকল্প উপায় নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

সম্প্রতি টার্মিনাল ভবনের ভেতরে মোবাইল নেটওয়ার্ক না পাওয়ার বিষয়টি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর কর্মকর্তাদের নজরে আসে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্থপতি রোহানি বাহারিনের করা মূল নকশায় মোবাইল নেটওয়ার্কের তার বা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য কোনো ‘ইন-বিল্ট’ অবকাঠামো রাখা হয়নি। ফলে নান্দনিকভাবে নির্মিত সিলিং আংশিক ভেঙে নতুন করে নেটওয়ার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

গত নভেম্বরে বেবিচকের জরুরি বোর্ড সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হলে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে এখন সিলিং ভাঙা ও পুনর্গঠন অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে টার্মিনালের নান্দনিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত সরকারি ব্যয়ের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
 

এদিকে মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপনার দায়িত্ব নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়। গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক বেবিচককে রাজস্ব ভাগাভাগি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে শুধু জায়গার ভাড়া দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্মত হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, টেলিটক সিলিং ভেঙে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করে নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে এবং অন্য অপারেটরদের সংযোগ সুবিধা দেবে। পাশাপাশি আয়ের একটি অংশ বেবিচককে দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছরের জন্য এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

সিলিং সংস্কার ও নেটওয়ার্ক স্থাপনার কারণে তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন আরও পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২২ হাজার কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্পে নকশাগত ত্রুটি প্রকাশ পাওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে এমন ব্যয়বহুল প্রকল্পে নকশা অনুমোদনের আগে প্রযুক্তিগত সব প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করা জরুরি।

ঢাকাটাইমস