কিস্তির টাকার জন্য এনজিও কর্মীর নিয়ে যাওয়া চীনাহাঁস ফিরে পেতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ঋণগ্রহীতা ওই গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখন বণিকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গৃহবধূ হাফিজা খানম।
গত ৯ ডিসেম্বর একটি এনজিওর মাঠকর্মী ফিরোজ খান কিস্তির টাকা না পেয়ে উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামের মুরাদ হোসেনের স্ত্রী ঋণগ্রহীতা হাফিজা খানমের বাড়ির উঠান থেকে একটি চীনাহাঁস ধরে নিয়ে যান। এ ঘটনা ১০ ডিসেম্বর দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন ও টিএমএসএস এনজিওর কর্মকর্তারা।
ওই দিন (১০ ডিসেম্বর) সকালে ওই মাঠকর্মী ফিরোজ খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিক মোটরসাইকেলযোগে ফুল্লশ্রী গ্রামে এসে হাফিজার বিপক্ষে ঋণখেলাপি সদস্যদের বক্তব্য রেকর্ড করেন। এ সময় তারা ঋণগ্রহীতা গৃহবধূ হাফিজা খানমের হাঁস ফেরত না দিয়ে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়ে চলে যান।
হাঁস ফেরত পাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে ঋণগ্রহীতা গৃহবধূ হাফিজা খানম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখন বণিক, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তপন বিশ্বাস, সমবায় কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন ও আাগৈলঝাড়া উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল দাশগুপ্তের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, আগৈলঝাড়া উপজেলায় কাজ করার ক্ষেত্রে এনজিওটি প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করেছে কিনা জানি না। সঠিক তদন্ত করে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দায় পাওয়া গেলে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে ভুক্তভোগী নারীর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা উচিত। যেহেতু ওই এনজিওটি আমাদের সমন্বয় পরিষদের সদস্য নয়, সেক্ষেত্রে এ বিষয়ে আমাদের সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান বা এখতিয়ার নেই। তবে উপজেলা প্রশাসন যদি এক্ষেত্রে প্রয়োজন মনে করে আমরা সহযোগিতা করব।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখন বণিক বলেন, আমি ঘটনাটি জানার পরে সমাজসেবা কর্মকর্তার কাজে জানতে চেয়েছি- এই এনজিও কিভাবে আগৈলঝাড়ায় কাজ করে। বিস্তারিত জেনে আমাকে জানাতে বলেছি। প্রয়োজনে ওই গৃহবধূর হাঁস ফেরত পাওয়ার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের মো. মুরাদ হোসেনের স্ত্রী হাফিজা খানম একটি এনজিওর সদস্য। ওই এনজিও থেকে ৬০ হাজার টাকা লোন উত্তোলন করেন হাফিজা খানম। এনজিওর মাঠকর্মী ফিরোজ খান ৯ ডিসেম্বর শেষ কিস্তির ১২৫০ টাকা নিতে আসেন। হাফিজা কিস্তি দিতে অপারগতা জানিয়ে পাশের বাড়ি চলে যান। এ সময় এনজিও কর্মী ফিরোজ খান হাফিজার বাড়ির উঠান থেকে ধাওয়া করে একটি চীনাহাঁস ধরে নিয়ে যান।