বাংলায় বহুল প্রচলিত একটা প্রবাদ বাক্য আছে- ‘যে লাউ সে কদু’। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অবস্থাও হয়েছে তাই। জনপ্রশাসন সচিব পদে পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু বাস্তব অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বহুল আলোচিত ড. মোখলেস-উর-রহমানের পরিবর্তে মো. এহছানুল হক এসেছেন সিনিয়র সচিব হয়ে। বরং কেউ কেউ বলছেন, আগের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সচিব পদে পদোন্নতিতে আওয়ামী লীগ আমলে চরমভাবে বঞ্চিত, নিগৃহীত বিএনপিমনা কর্মকর্তারা এখনও বঞ্চিতই থাকছেন। এর বিপরীতে পদোন্নতি-পদায়ন বাগিয়ে নিচ্ছেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী কর্মকর্তারা, যারা এখন ‘জামায়াত লীগ’ নামে পরিচিত। ডিসি পদে পদায়নেও একই অবস্থা! ডিসি পদে পদায়নকে কেন্দ্র করে সচিব মো. এহছানুল হক ইতিমধ্যে মোখলেস-এর মতো মহা কেলেঙ্কারিরও জন্ম দিয়েছেন। অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যে জনপ্রশাসন সচিব পদে পরবর্তন আনা হয়েছে এর কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশেষ করে পেনশনভোগী কর্মকর্তাদের ভোগান্তি-হয়রানি চরমভাবে বেড়েছে। এহছানুল হক ইতিপূর্বে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে সিনিয়র সচিব পদে থাকাকালে নানামুখী সমস্যা তৈরি হয়। অতি সাধারণ নথিও তিনি আটকে রাখেন। এতে কয়েকশ’ নথি জড়ো হয়ে যায়। তিনি চলে আসার পর এখন এসব নথি গতি পেয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও চালাচ্ছেন একই কায়দায়। ছুটি-ছাটা, পেনশন এবং ভুতাপেক্ষ পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের কয়েকশ’ নথি ইতিমধ্যে আটকা পড়েছে। প্রশাসনে সাধারণ পদোন্নতির প্রক্রিয়াও স্থবির হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ে পদ শূন্য পড়ে আছে অনেক। কর্মকর্তার অভাবে পদায়ন দেয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিনই বাড়ছে এই শূন্য পদের সংখ্যা। কিন্তু সচিব এহছানুল হক এ নিয়ে একেকবার একেক কথা বলছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদকে উস্কে দিয়ে ২০তম ব্যাচের পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের হুমকিও দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। গত সপ্তায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে অপ্রীতিকর ঘটনাও একটি ঘটে গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে- বিএনপির শীর্ষ মহলের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত অক্টোবর মাসের শুরুতে জনপ্রশাসন সচিব পদে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কে হবেন পরবর্তী জনপ্রশাসন সচিব, এ মর্মে তিনি একটা নির্দেশনাও দেন। সেই অনুযায়ী সারসংক্ষেপ তৈরি হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গেলে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ এর নেতৃত্বে জামায়াতপন্থি গ্রুপটি ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে তা আটকে দেয়। কয়েকদিন ধরে দেনদরবারের পর অবশেষে গত ১২ অক্টোবর মো. এহছানুল হককে এই পদে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি হয়। তিনি এই পদে পদায়নের তিন দিনের মাথায় চার জেলার ডিসি পদে পরিবর্তন হয়। ওই পদায়ন নিয়ে গণমাধ্যমে “হাসিনার কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ ৪ আওয়ামী সুবিধাভোগী হলেন জেলা প্রশাসক” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। শীর্ষনিউজ ও শীর্ষকাগজ প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে এহছানুল হক দাবি করেছেন, ওই চার জেলায় ডিসি পরিবর্তনে তার কোনো হাত নেই, সার-সংক্ষেপ আগে থেকেই তৈরি হয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গেছে। কিন্তু তাঁর হাত দিয়েই যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে, এটা তিনি স্বীকার করেছেন। তিনি ইচ্ছে করলে প্রজ্ঞাপন জারি না করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে পারতেন। তবে তা করেননি। এরপরের ঘটনাগুলো- যেমন সচিব পদে পদোন্নতি এবং ডিসি পদে পদায়ন নিয়ে যা কিছু ঘটেছে একটিরও উত্তর তিনি দিতে পারেননি। ইউএনও এবং এডিসি পদে পদায়নে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের লটারির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই লটারি নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগ আমলে বঞ্চিত ও নিগৃহীত কর্মকর্তাদের সচিব পদে পদোন্নতি না পাওয়া এবং এখেনো বঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে সচিব এহছানুল হক এ প্রতিবেদককে বলেছেন, এদের কারোই নাকি রিপোর্ট ভালো নয়। কিন্তু কার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে কী অভিযোগ, এ প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারেননি।
জনপ্রশাসনে সবাই বহাল-তবিয়তে
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ‘এপিডি’ উইংয়ের সবাই বহাল-তবিয়তেই আছেন। এহছানুল হক সচিব পদে বসার পর এ পর্যন্ত একজনকেও পরিবর্তন করেননি। যদিও মনে করা হয়েছিল, এপিডি উইং পুরোটাই পরিবর্তন হবে। অবাক ব্যাপার হলো, আওয়ামী আমলের কর্মকর্তারাও কেউ কেউ এখনো বহাল-তবিয়তেই আছেন, যারা ইতিমধ্যে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন। এছাড়া গণঅভ্যুত্থানের পরে যে কয়েকজন নতুন এসেছেন এরা সবাই জামায়াতপন্থি। এহছানুল হক সচিব পদে বসার আগেই গত ১০ অক্টোবর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ (এপিডি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. এরফানুল হককে সরিয়ে এই পদে পদায়ন দেয়া হয়েছিল মো. ফিরোজ সরকারকে। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ জামায়াতপন্থিদের বাধার কারণে তিনি এই পদে বসতে পারেননি। এহছানুল হক আসার পরেও বেশ কয়েকদিন ঝুলে থাকে বিষয়টি। পরবর্তীতে ফিরোজ সরকারকে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদে দেন। সেই থেকে ‘অতিরিক্ত সচিব এপিডি’ পদটি কৌশলে শূন্য রাখা হয়। এহছানুল হক ঘোষণা করেন, তিনিই একসঙ্গে সচিব এবং ‘অতিরিক্ত সচিব এপিডি’ পদ সামলাবেন।
কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধোঁকাবাজির কৌশল ছাড়া কিছুই নয়। এহছানুল হক নিজে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এ বিষয়ে তার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। তাছাড়া দীর্ঘকাল ছিলেন চাকরির বাইরে অবসর জীবনে। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তিনি জনপ্রশাসনে জামায়াত এবং জামায়াত লীগের ওপর ভর করে চলছেন পুরোপুরিই। এই সুযোগে যুগ্মসচিব মিঞা মুহাম্মদ আশরাফ রেজা ফরিদী অঘোষিতভাবে ‘অতিরিক্ত সচিব এপিডি’ হয়ে উঠেছেন। শুধু ‘অতিরিক্ত সচিব এপিডি’ই নয়, তারচেয়েও ক্ষমতাবান বলে মনে করা হচ্ছে বর্তমানে মিঞা মুহাম্মদ আশরাফ রেজা ফরিদীকে, যিনি শুধুমাত্র ‘ফরিদী’ নামে বিশেষভাবে পরিচিত। একদিকে ইকনোমিক ক্যাডারের কর্মকর্তা, অন্য পরিচয় হলো আওয়ামী আমলের সুবিধাভোগী- এই কর্মকর্তা কীভাবে প্রশাসনে এতটা ক্ষমতাবান হয়ে উঠলেন, প্রশাসন দাবড়ে বেড়াচ্ছেন- তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। অনেক রহস্যও রয়েছে। আওয়ামী লীগ আমলে পদোন্নতি বঞ্চিত নন, ওই সময় ব্যাচের অন্যদের সঙ্গে উপসচিব পদে পদোন্নতির পর স্বরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদায়নে থেকেছেন। এরপরে এসেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এটিকেও আকর্ষণীয় পদায়ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে প্রশাসনে। গণঅভ্যুত্থানের পরে হঠাৎ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইংয়ের উনি-২ শাখায় পদায়ন পান। বলা হয়, তিনি নাকি আগে বিএনপি করতেন। কিন্তু এ পর্যন্ত দেখা গেছে, তিনি শুধুমাত্র জামায়াত এবং জামায়াত লীগের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করেছেন। বিএনপির কোন স্বার্থরক্ষা করেছেন, এ প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারেননি। তবে বিএনপির নয়, বিএনপি নামধারী কিছু ধান্দাবাজ ও মুনাফেক জাতীয় কর্মকর্তার স্বার্থ তিনি রক্ষা করে চলেছেন। আর এরাই তাকে কৌশলে ‘বিএনপি ট্যাগ’ লাগিয়ে ক্ষমতাবান করে তুলেছেন। এই ধান্দাবাজ গ্রুপটি নিজেদেরকে বিএনপি দাবি করলেও আসলে তারা জামায়াতেরই এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তা করছেন, অন্যদিকে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন।
অফিসার্স ক্লাব কেন্দ্রীক সিন্ডিকেট
বিএনপি নামধারী ধান্দাবাজ এই গ্রুপটির নেতা হলেন এ বি এম আব্দুস সাত্তার, যিনি ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। গণঅভ্যূত্থানের পরে আওয়ামী গ্রুপ পালিয়ে যাওয়ার সুযোগে সাধারণ সম্পাদকের এই চেয়ারে বসে পড়েন তিনি। নির্বাচন ছাড়াই এখন পর্যন্ত পদে বহাল আছেন বাড়ি বগুড়ায়, বিএনপির গুলশান অফিসের লোক- এই শক্তির বলে। আর এই চেয়ারকে ব্যবহার করেই ইতিমধ্যে অন্ততঃ হাজার কোটি টাকা কামিয়েছেন এবং এসব অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে কারো কারো মতে, টাকার এই অংক আরও অনেক বেশি হবে। শীর্ষনিউজ ও শীর্ষকাগজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে তিনি বিএনপির স্বার্থ রক্ষার স্লোগান দিয়ে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে নিজের ব্যক্তিগত এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করেছেন। আব্দুস সাত্তারের একান্ত সহযোগী হিসেবে আরও কয়েকজন আছেন, যারা একই কাজ করছেন। তবে এই ক্ষমতাবানদের সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় বিএনপিপন্থি অনেক সৎ এবং নিরীহ কর্মকর্তাও অফিসার্স ক্লাবে আসেন, যাদের নিজেদের কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। এরা জানেনও, আব্দুস সাত্তার এবং তার অপকর্মের সহযোগীরা কী করছেন। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে গেলে বিপদ আছে তাই চুপ মেরে থাকেন।
অভিযোগ রয়েছে, আব্দুস সাত্তার আওয়ামী আমলে বিএনপির গুলশান অফিসে বসে গোপনে আওয়ামী লীগ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে খবর সরবরাহ করতেন। এমনকি ৫, ২০২৪ আগস্টের পরও এ পর্যন্ত তিনি যেসব করেছেন এর প্রত্যেকটির নেপথ্যে রয়েছে ভিন্ন উদ্দেশ্য। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিএনপি বিরোধী কর্মকাণ্ডের ও ভয়াবহ তথ্য পাওয়া গেছে। বিএনপিপন্থি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের দ্বারা ১৪ আগস্ট, ২০২৪ এ কারণে সচিবালয়ে ধাওয়াও খেয়েছেন। আওয়ামী লীগ আমলে দীর্ঘ ১৬ বছরে একটিও পদোন্নতি পাননি এমন অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন প্রশাসনে। ১৩ আগস্ট, ২০২৪ এরা উপসচিব পদে পদোন্নতি পান। ১৪ আগস্ট, ২০২৪ সচিবালয়ের লাইব্রেরি কক্ষে জমায়েত হওয়া বঞ্চিত এসব কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে আব্দুস সাত্তার এবং তাঁর সহযোগীরা এই মর্মে বক্তব্য দেন যে, “তোমরা একটি পদোন্নতি পেয়েছো। এখনই আর পদোন্নতি নেয়াটা উচিত হবে না। তিন মাস পরে যুগ্মসচিব এবং ছয় মাস পরে অতিরিক্ত সচিব হও।” এমন বক্তব্যের পর পরই আবদুর রহমান তরফদার, কানিজ মাওলাসহ বঞ্চিত কর্মকর্তারা মহা ক্ষেপে যান। বঞ্চিতরা এত উত্তেজিত এবং চড়াও হন যে, ধান্দাবাজ গ্রুপটিকে সেখান থেকে দৌড়ে পালাতে হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই সময় আওয়ামী সচিবদের কাছ থেকে দুইশ’ কোটি টাকা চাঁদা তোলা হয়। আব্দুস সাত্তাররা ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারাও এর অংশ পেয়েছেন। টাকাগুলো তোলা হয় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সচিবদের বহাল রাখার শর্তে। এতে আব্দুস সাত্তারদের দুটো উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়- প্রথমত, তাৎক্ষণিক চাঁদা। এবং দ্বিতীয়ত হলো, তদবির বাণিজ্য। বঞ্চিত কর্মকর্তারা সচিব হলে আব্দুস সাত্তারদের তদবির বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। তাই তারা চান নি, বঞ্চিতরা সচিব হোক। অন্যদিকে, জামায়াতেরও এজেন্ডা অনেকটা এ রকমের। বঞ্চিতদের অধিকাংশই বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা। এরা সচিব হওয়া মানেই জামায়াতের ক্ষতি।
অফিসার্স ক্লাবে বসে আব্দুস সাত্তার এবং তাঁর সহযোগীরা কী করছেন, এটা এখন আর গোপন নেই। ‘ওপেন সিক্রেটও’ নয়, বলা যায় ওপেন। এদের কর্মকাণ্ডে বিএনপির উপকারের পরিবর্তে ক্ষতিই হচ্ছে বেশি, বলছেন সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই।
জনপ্রশাসন এখন যেভাবে চলছে
প্রধান উপদেষ্টা যাকে জনপ্রশাসন সচিব করতে চেয়েছিলেন তিনিও যে বিএনপির তা নয়। ’৮৫ ব্যাচের এই কর্মকর্তা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সিনিয়র সচিব পদে থেকে বিএনপির জন্য কিছু করেছেন এমন নজির নেই। তারপরও শেখ রশিদরা তাকে জনপ্রশাসন সচিব পদে নিয়োগে বাধা দিয়েছেন ভিন্ন কারণে। তবে এতে এ বি এম আব্দুস সাত্তারদেরও ইন্দন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে।
আব্দুস সাত্তারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং একই ব্যাচের মো. এহছানুল হক। ড. শেখ রশিদেরও ঘনিষ্ঠ বন্ধু এই জনপ্রশাসন সচিব। এছাড়া আলী ইমাম মজুমদারের একান্ত অনুগত। এই চারজনেরই পরষ্পরের একান্ত ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। আর এই সমীকরণেই এহছানুল হক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব হয়েছেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, এ বি এম আব্দুস সাত্তার গ্রুপের ব্যক্তিগত ধান্দা এখন বেশ জোরেশোরেই চলছে। যুগ্মসচিব মিঞা মুহাম্মদ আশরাফ রেজা ফরিদীর মাধ্যমে সিনিয়র সচিব এহছানুল হক এগুলো বাস্তবায়ন করছেন। প্রশাসনে পদোন্নতির পরিবর্তে এহছানুল হক বর্তমানে স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এগুলোর নির্দেশনা আসছে অফিসার্স ক্লাব থেকে। আব্দুস সাত্তারদের ধান্দাবাজির নতুন লাইন খুলে গেছে। তারা এখন এই কাজ নিয়েই বেশি ব্যস্ত আছেন। এছাড়া বদলি-পদায়নসহ অন্যান্য ধান্দাবাজি তো আছেই। প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ের সচিবকেই আব্দুস সাত্তারের কথা শুনতে হচ্ছে। মাঝে আওয়ামী সচিবরা কথা শুনছিলেন না, তাই ৩৮ সচিবের তালিকা তৈরি করে তাদের অপসারণে সোচ্চার হয়েছিলেন। এক পর্যায়ে ড. শেখ আব্দুর রশীদের মধ্যস্থতা সমঝোতা হয়। যারফলে আন্দোলন থেমে যায়। উপদেষ্টারা কথা শুনছিলেন না, তাই আট উপদেষ্টার দুর্নীতি ফাঁসের হুঙ্কার দেন। এরপরে উপদেষ্টাদের সঙ্গেও সমস্যা মিটে যায়।
শীর্ষনিউজ