Image description

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাটে ঢুকে মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

 

দুপুরে আয়েশাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি মোহাম্মাদ জুয়েল রানা জানিয়েছেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি গৃহকর্মী আয়েশাকে ঝালকাঠির নলছিটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রথমে তার স্বামীকে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঝালকাঠি থেকে আশেয়াকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এডিসি মোহাম্মাদ জুয়েল রানা জানান, ক্লু-লেস এই জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে- ৬ মাস আগে মোহাম্মাদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার একটি বাসায় চুরিও করেছিলেন আয়েশা।

এর আগে গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের ১৪তলা একটি ভবনের সপ্তম তলার বাসা থেকে গৃহবধূ লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজের (১৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনার দিন সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে সাদা সালোয়ার কামিজ, প্রিন্টের ওড়না ও পায়ে কেডস জুতা পরে ভবনের সিঁড়ি দিয়ে ধীরস্থিরভাবে নেমে আসছেন এক তরুণী। তার পিঠে ব্যাগ ও মুখে ছিল মাস্ক। ওই সময় ভবনের প্রধান প্রবেশপথে বসে ছিলেন তিনজন। ওই তরুণী বের হওয়ার সময় তাদের একজন উঠে দাঁড়িয়ে গেট খুলে দেন। পরে ভবন থেকে বেরিয়ে ওই তরুণী অটোরিকশায় উঠে চলে যান।

স্কুল ড্রেস পরে বেরিয়ে যাওয়া ওই তরুণী মূলত নিহত নাফিসাদের বাসার গৃহকর্মী আয়েশা। ওইদিন বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে হত্যার পর নাফিসার পোশাক পরেই বের হয়ে যায় সে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন সকালে কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন গৃহকর্তা আজিজুল ইসলাম। পরে ফিরে এসে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। ওই সময় মেয়ে নাফিসাকে জীবিত অবস্থায় পেলেও পরবর্তীতে হাসপাতালে নেয়ার পর সেও মারা যায়। পরে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিও উদ্ধার করে পুলিশ।

পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত ঢাকার কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই বারবার অবস্থান পরিবর্তন করেন গৃহকর্মী আয়েশা। সবশেষ বুধবার ঝালকাঠির নলছিটি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।