Image description

বাংলাদেশে সামিট, মেটাকোর ও সিডিনেট—এই তিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চীনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে মেরিন নির্মিত একটি অনিরাপদ সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনে সরকারকে চাপ দিচ্ছে, যা জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ক্যাবলটি মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণে বিদেশনির্ভরতার আশঙ্কাও রয়েছে।

বিগত সরকারের সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় সামিটকে সাবমেরিন ক্যাবলের লাইসেন্স দেওয়া হলেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সেই লাইসেন্স বাতিলে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। তিন প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ মালিক দেশ থেকে পলাতক। তারা বিদেশে বসে অনলাইন মিটিংয়ের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সংকট নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সরকারকে ‘আনট্রাস্টেড’ক্যাবলে যুক্ত হওয়ার অনুমতি দিতে চাপ দিচ্ছে।

এদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তা উপেক্ষা, সন্দেহজনক অর্থায়ন, মালিকানার বিষয়ে অস্পষ্টতা এবং ব্যান্ডউইডথ চোরাচালানের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যা এই খাতে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

সাবমেরিন ক্যাবলের প্রস্তাবনায় যুক্ত তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নেতৃত্বে রয়েছে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড। সামিটের ২৫ শতাংশ শেয়ার ফরিদ খানের, ৪৯ শতাংশ দুবাইভিত্তিক গ্লোবাল এনার্জিস হোল্ডিংয়ের, ২১ শতাংশ সিকোয়া ইনফো টেকের এবং পাঁচ শতাংশের মালিকানায় রয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আল ইসলাম। দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান মেটাকোরের অর্ধেক মালিক লেভেল থ্রি, যার ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের ছেলে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক। লেভেল থ্রি ব্যান্ডউইডথ চোরাচালানের কারণে বিটিআরসি ১০ কোটি টাকা জরিমানা গুনেছে এবং আইটিসি লাইসেন্স ছাড়াই ভারতীয় এয়ারটেলের সঙ্গে লেনদেন করায় বিপুল বকেয়া তৈরি হয়েছে। মেটাকোরের আরো অংশীদার রয়েছে ঢাকা উত্তরের সাবেক মেয়র আনিসুল হকের ছেলে নাভিদুল হকের প্রতিষ্ঠান ভেলোসিটি নেটওয়ার্কসের (২০ শতাংশ), যার নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান আবু বেলাল শফিউল হক। বাকি ৩০ শতাংশের মালিকানায় রয়েছেন আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলের প্রতিষ্ঠান আম্বার আইটির সিইও আমিনুল হাকিম। তৃতীয় প্রতিষ্ঠান সিডিনেটের ৫০ শতাংশ শেয়ার আগে চৌধুরী নাফিজ শরাফতের স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্সের ছিল, যা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর কমে ৪৪ শতাংশ হয়েছে। বাকি বড় অংশটি জারান অব ডক লিমিটেডের। এর মালিক ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান শওকত আলী, যার বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তি

অনিরাপদ ক্যাবলের বিষয়ে সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশের আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইডথে কোনো ঘাটতি নেই এবং এ বিষয়ে কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিভ্রান্তিকর। তারা বলছে, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ব্যান্ডউইডথ চাহিদা মেটাতে বিএসসিপিএলসি সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশের জন্য ‘আনট্রাস্টেড’বা অনির্ভরযোগ্য সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ আনার চেষ্টা করছে, যা সাইবার নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি খাতের স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের ক্যাবল থেকে নজরদারি, ডেটা চুরি বা সেবায় বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা থাকে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার আপত্তি

বেসরকারি তিন প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত সাবমেরিন ক্যাবলটি যুক্ত হবে ‘সিগমা’(বর্তমানে ইউএমও) নামের আন্তর্জাতিক ক্যাবলের সঙ্গে, যা নির্মাণ করেছে চীনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে মেরিন নেটওয়ার্ক। এই চীনা প্রযুক্তিগত সম্পৃক্ততাকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্স ‘অনিরাপদ’হিসেবে দেখছে। বাংলাদেশকে প্রকল্পটি এগিয়ে না নিতে দেশগুলো একাধিকবার অনানুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসিতে পাঠানো একটি সরকারি চিঠিতেও উল্লেখ আছে যে, আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা সিগমা ক্যাবলে যুক্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কারণ, সাত বছর পুরোনো এই ক্যাবল বাংলাদেশের সম্ভাব্য ডেটা সেন্টারে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করবে এবং ফেসবুক, গুগল, অ্যামাজনের মতো হাইপার স্কেলাররা বাংলাদেশে আসবে না।

২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ‘ক্লিন নেটওয়ার্ক প্রোগ্রাম’ চালুর পর থেকে হুয়াওয়ে সম্পৃক্ত সাবমেরিন ক্যাবলকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে নিষিদ্ধের নীতি গ্রহণ করে, যা এখন ৫৫টি দেশে বিস্তৃত। এ অবস্থায় বাংলাদেশে প্রস্তাবিত সিগমা ক্যাবলে হুয়াওয়ে মেরিনের নকশা ও প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণ ডেটা নিরাপত্তা, সাইবার হুমকি এবং পশ্চিমা বিনিয়োগ কমে যাওয়ার বড় উদ্বেগ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। এমন সংযোগ স্থাপন হলে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, ব্যাংকিং, ই-কমার্স ও ডেটা সেন্টার খাত বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আমার দেশকে বলেন, ‘বেসরকারি সাবমেরিন ক্যাবল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি আছে, যদিও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, আনট্রাস্টেড কোনো ক্যাবলে যেন বাংলাদেশ না যায়। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত। আমাদের এমন কোনো কিছু করা উচিত হবে না, যাতে ভূরাজনৈতিক টেনশন তৈরি হয়। আমার মন্ত্রণালয়ের একটি লাইসেন্সের কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। আমরা কোম্পানিগুলোকে আহ্বান করব, বিতর্কিত ক্যাবলে না গিয়ে ট্রাস্টেড ক্যাবলে অংশগ্রহণ করুক।’

তিনি আরো বলেন, ‘বেসরকারি খাতে দেওয়া সাবমেরিন ক্যাবল লাইসেন্স বাতিল করলে রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিটিআরসি কোনো আইনি ঝামেলায় পড়বে কি না, তার একটি লিগ্যাল ভেটিংয়ের চিন্তাভাবনা আছে। পাশাপাশি চারটি লাইসেন্স মিলে একটি কনসোর্টিয়াম তৈরির ক্ষেত্রে বিটিআরসির যথাযথ অনুমোদন ছিল কি না, এ সংক্রান্ত ফি চাওয়া হয়েছে কি না—সেটা মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসির কাছে জানতে চাওয়া হবে, উদ্যোগটি শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে।’

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরো বলেন, ‘সিমিউই-৪, সিমিউই-৫ এবং আগামী বছর চালু হতে যাওয়া সিমিউই-৬- এ তিনটি ক্যাবল মিলে বাংলাদেশের প্রাক্কলিত ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি পর্যাপ্ত। তবে ভূরাজনৈতিক কারণে সিমিউই-৬ দেরি হলে অতিরিক্ত ক্যাপাসিটি লাগবে। স্টারলিংক সামান্য কিছুটা প্রয়োজন মেটাবে, পাশাপাশি আইটিসি থেকেও আমরা ক্যাপাসিটি কিনছি। বর্তমানে আমরা চতুর্থ সাবমেরিন ক্যাবলে অংশগ্রহণের জন্য কাজ করছি। সব মিলিয়ে সরকার এ মুহূর্তে স্ট্যাটাসকো বজায় রাখছে। উপরন্তু টেলিকম শ্বেতপত্রে বিষয়টি নিয়ে কী ধরনের মতামত দেওয়া হয়, তার জন্য অপেক্ষা করবে।’

রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজন হবে মিয়ানমারের অনুমতি

আমেরিকার আপত্তির বাইরেও সবচেয়ে উদ্বেগের যে বিষয়, তা হচ্ছে মিয়ানমারনির্ভরতা। বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালে এই ক্যাবলে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব পেলেও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। এর কারণ, এই ক্যাবলের ৯০ শতাংশই থাকবে মিয়ানমারের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে। ফলে যে কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকবে মিয়ানমারনির্ভরতা। ক্যাবলের রক্ষণাবেক্ষণ বা জরুরি কোনো কার্যক্রম পরিচালনায় মিয়ানমার সরকারের অনুমতি না পেলে কার্যত অচল হয়ে পড়বে এই ক্যাবলের মাধ্যমে সরবরাহকৃত ব্যান্ডউইডথ। বিএসসিপিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান পরবর্তীতে সিডিনেটে যোগদান করে এই ক্যাবল বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা এক সময় তিনি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় স্থাপনে রাজি হননি।

এ বিষয়ে মশিউর রহমান আমার দেশকে বলেন, ‘ওই সময় আমরা তিনটি প্রস্তাবিত সাবমেরিন ক্যাবল উদ্যোগ (সিগমার, সিমিউই-৬ ও আইএএক্স ক্যাবল) তুলনামূলক স্টাডি করে প্রতিটির সুবিধা-অসুবিধা উল্লেখ করে সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। ওই প্রস্তাবে সিগমার এক নম্বরে, সিমিউই-৬ দুই নম্বরে এবং আইএএক্স তিন নম্বরে ছিল। সরকার সিমিউই-৬ সিলেক্ট করেছিল। সিগমার ক্যাবলের যে স্থানে বাংলাদেশ যুক্ত হবে তা মিয়ানমারের টেরিটোরিয়াল ওয়াটারের মধ্যে না, ওই অংশ মিয়ানমারের ইইজেড ওয়াটারের অংশ যা অনেকটা আন্তর্জাতিক জলসীমার মতো।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রাইভেট সাবমেরিন ক্যাবল লাইসেন্সধারীদের সিগমার ক্যাবলে যোগাদানের সিদ্ধান্ত আমার নয়। লাইসেন্সধারীলা দুটি বিখ্যাত পশ্চিমা কনসালটেন্ট (হার্ডিম্যান ও পাইওনিয়ার) দ্বারা তিনটি ক্যাবলের (সিগমার, আইএএক্স ও মিস্ট) কম্পারেটিভ স্টাডি করিয়ে উভয় কনসালট্যান্টের বিচারে প্রথম স্থান অধিকার করা সিগমার ক্যাবলে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।’

রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে ৬৪ মিলিয়ন ডলার

বেসরকারি খাতের প্রস্তাবিত সাবমেরিন ক্যাবল প্রকল্পটি রক্ষণাবেক্ষণে আগামী ২৫ বছরে বাংলাদেশকে মোট ৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হবে। সামিট, মেটাকোর ও সিডিনেট—প্রতিষ্ঠান তিনটিকে প্রতি বছর প্রায় ৮.৬৭ লাখ ডলার করে রক্ষণাবেক্ষণ ফি পরিশোধ করতে হবে, যদিও শেষ বছরে এই পরিমাণ কিছুটা কমে আসবে। কিন্তু বড় সীমাবদ্ধতা হলো, এই ক্যাবলটির ল্যান্ডিং পয়েন্ট কেবল সিঙ্গাপুরে; ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়যোগ্য ব্যান্ডউইডথ বা ক্যাপাসিটি তৈরি করার কোনো সুযোগ নেই, যা দেশের বৈদেশিক আয়ে অবদান রাখতে পারত।

খাত-সংশ্লিষ্টদের মতে, বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়, সীমিত ব্যবহারযোগ্যতা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ঝুঁকি বিবেচনায় এ প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা জরুরি। কারণ, এতে নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠান লাভবান হলেও জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

যারা মালিক, তারাই ব্যবহারকারী

বেসরকারি খাতে সাবমেরিন ক্যাবল ও ব্যান্ডউইডথ ব্যবসায় লাইসেন্স বিতরণে কিছু প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ায় বাজারের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইডথ আমদানি, সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন, ট্রান্সমিশন ও গ্রাহক পর্যায়ে সেবা—সবকিছুই এখন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে। এর ফলে বাজারে কার্যত একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি হয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে সামিটের প্রায় সব ধরনের লাইসেন্স রয়েছে, মেটাকোরের মালিকানাধীন লেভেল থ্রি একইসঙ্গে আইআইজি ও আইএসপি উভয় লাইসেন্সধারী, আর সিডিনেটের ভেলোসিটিরও রয়েছে নিজস্ব আইআইজি। এসব প্রতিষ্ঠান নিজেরাই ব্যান্ডউইডথ আমদানি করে নিজেদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করছে। অন্যদিকে যেসব আইআইজি প্রতিষ্ঠানের ট্রান্সমিশন বা আইটিসি লাইসেন্স নেই, তারা ‘বান্ডেল’সেবা দিতে না পারায় দ্রুত বাজার হারাচ্ছে। ফলে প্রতিযোগিতাহীন পরিবেশ, বৈষম্য এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।

খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মহলের আপত্তি এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট তিনটি প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম থামায়নি। নির্বাচনের পর গঠিত নতুন সরকার থেকে অনুমোদন বের করে নেবে- এমন ভরসায় তারা কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে। হুয়াওয়ের সংশ্লিষ্টতা আড়াল করতে নোকিয়া থেকে যন্ত্রপাতি কেনার বিষয়ে দরকষাকষিও চলছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই ল্যান্ডিং স্টেশনের কাজ শুরু করার প্রস্তুতি রয়েছে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি অর্জনের জন্যও জোর তদবির চালানো হচ্ছে। ক্যাবল লেইংয়ের আনুষ্ঠানিক অনুমতি ছাড়াই ক্যাবল লোড করে জাহাজ রওনা হয়েছে বাংলাদেশের পথে।

এ প্রসঙ্গে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের এমডি ও সিইও আরিফ আল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, ‘আমরা সামিট কমিউনিকেশনস থেকে ক্যাবল লেয়িং ভেন্ডরকে ক্যাবল লে করার অথবা জাহাজে ক্যাবল লোড করার কোনো অনুমতি বা সম্মতি প্রদান করিনি। আমাদের জানামতে ভেন্ডর কর্তৃক এ পর্যন্ত জাহাজে ক্যাবল লোড করা হয়নি।’

যদিও আমার দেশ-এর হাতে আসা নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেসরকারি কনসোর্টিয়াম থেকে বিটিআরসিতে প্রেরণ করা চিঠিতে ক্যাবল লোড করার অনুমতি দেওয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।