Image description

এক শনিবার দুুপুরের ঘটনা। ছুটির দিনে এক এলাহীকাণ্ড ঘটায় সোনালী ব্যাংক। বিতর্কিত একটি কোম্পানির এলসি’র কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করে তাদের অনুকূলে ১০ লাখ ডলার অর্থ ছাড়ের সব প্রক্রিয়া শেষ করে ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংকও এতে অনুমোদন দেয়। অথচ আগে থেকেই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে একাধিক মানিলন্ডারিংয়ের মামলা থাকার পরও ফের বিপুল পরিমাণ টাকার এলসি খোলায় সন্দেহ হয় দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের। পরে নতুন এলসি নিয়ে অনুসন্ধানে নামে সংস্থাটি। ধরা পড়ে ভয়াবহ জালিয়াতি। মূলত ভুয়া মাস্টার এলসি, নকল কাগজপত্র, নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ও জাল ট্রাক চালান ব্যবহার করে গোপনে এলসি খুলে জালিয়াতির মাধ্যমে ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে প্রতিষ্ঠানটি। দুদক তা আটকে দেয়। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর অদৃশ্য কারণে আটকে যায় দুদকের পূর্ণাঙ্গ তদন্তকাজ। এরপর অনেক বছর কেটে যায়। ১৩ বছর আগে খোলা সেই এলসির মূল্য সুদাসলে এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ লাখ ডলার। সম্প্রতি এই টাকা ছাড় করতে ফের দৌড়ঝাঁপ শুরু করে চক্রটি। এমনকি কোনো বড় বাধা ছাড়াই টাকা ছাড়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি। আর এ কাজে সহায়তা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অন্তত ১৩ বছর আগে ভুয়া কাগজপত্রে পাস হওয়া এলসি’র ১০ লাখ ডলারের সুদ হিসাব করে প্রায় ৩০ লাখ ডলার ছাড় করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেন হলমার্ক কেলেঙ্কারির সময় ধরা পড়া আরেক ব্যাংক জালিয়াত প্রতিষ্ঠান রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ। টাকা ছাড়াতে আবেদন করা হয় সোনালী ব্যাংকেও। তবে একযুগ পরে সোনালী ব্যাংকও কোম্পানিটির দেয়া কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। এতে পুরো কাগজপত্র নকল ও জাল ধরা পড়ে। পরে সোনালী ব্যাংক জালিয়াতির বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন। এই টাকা ছাড় হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সোনালী ব্যাংক এমন একটি নোটও দেয়া হয়। কিন্তু তাতে সায় না দিয়ে উল্টো বাংলাদেশ ব্যাংক ওই জাল কাগজের এলসি অনুমোদন করে দ্রুত টাকা ছাড় করতে সোনালী ব্যাংকে চাপ দেন। ফোন করে ব্যাংকের চেয়ারম্যানকেও প্রক্রিয়া শেষ করতে বলা হয়। দেখানো হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সহায়তা প্যাকেজের অজুহাত। তবে ব্যাংক সূত্র বলছে, এটা কোনো ভাবেই নীতি সহায়তা প্যাকেজের আওতায় পড়ে না। এটা পুরোটাই জালিয়াতি। 

এদিকে জালিয়াতি ধরা পড়ার পর সোনালী ব্যাংক টাকা আটকে দিলে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ উচ্চ আদালতে রিট করলে হাইকোর্টের আদেশ তাদের পক্ষে যায়। পরে ব্যাংক আপিল করলে আপিলের রায় ব্যাংকের পক্ষে আসে। রায়ে আপিল বিভাগ বলেন, এই এলসিগুলো কেবল কমার্শিয়াল এলসি। এগুলো আন্তর্জাতিক এলসি নয়, যেহেতু পণ্য উৎপাদন বা সাপ্লাইয়ে কোনো আন্তর্জাতিক পার্টিসিপেশন নেই। তাই বিবাদীয় বিষয়টি বাণিজ্যিক চুক্তি সংক্রান্ত হওয়ায় তা রিট জুরিসডিকশনের আওতায় পড়ে না। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, আমরা অবাক হয়েছি, দুদকের প্রতিবেদন ও সোনালী ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে রোজবার্গের কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি ধরা পড়ার পরেও টাকা ছাড় করতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চাপ দেয়া নজিরবিহীন। এই চক্রকে আটকাতে আমরা কারও সহায়তা পাচ্ছি না। এটা একটি আন্ডারগ্রাউন্ড সমঝোতা, আমরা সেটা টের পাচ্ছি। আমরা দুদককে জানিয়েছি, তারাও এখন সহায়তা করছে না। দুদক চাইলে সমস্ত প্রক্রিয়া আটকে দিতে পারেন। কিন্তু তারাও সন্দেহজনক আচরণ করছেন। অবশেষে আমার মনে হয়- এই টাকা আমরা ধরে রাখতে পারবো না। ভুয়া কাগজপত্র ও নকল ডকুমেন্টসে পাস হওয়া বিলের অর্থ ছাড় করতে পারলেই পুরো টাকা আত্মসাৎ করবে জালিয়াত চক্রটি। 

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিতর্কিত কোম্পানির টাকা ছাড় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ফোন করে চাপ প্রয়োগ করছেন। এরপর সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাখা অফিসকে প্রতিবেদন পাঠাতে বলেছেন। শাখা অফিস বিস্তারিত প্রতিবেদন সদর দপ্তরে জমা দেন। সেই প্রতিবেদনে কাগজপত্রে জালিয়াতির তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুয়া কাগজপত্রে যদি এই অর্থ ছাড় করা হয়, তাহলে তা বড় রকমের রাষ্ট্রীয় ক্ষতি হবে। এবং সোনালী ব্যাংকের ফোর্স লোন বৃদ্ধি পাবে। প্রতিবেদনে ১৮টি বিলের অর্থ ছাড়ের পাশাপাশি ফোর্স লোনের মামলা করার অনুমতি চাওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনের একটি কপি মানবজমিনের হাতে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৯০৭তম বোর্ড সভায় আলোচনা হয়। সভায় একটি পক্ষ এই অর্থ ছাড়ের মৌখিক সম্মতিও দেন। তবে আরেকটি পক্ষ এর বিরোধিতা করেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সায় থাকায় যেকোনো সময় বিতর্কিত এলসি অনুমোদন হয়ে টাকা ছাড় করা হতে পারে বলে সোনালী ব্যাংকের একটি সূত্র মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন।  

দুদকের রহস্যময় নীরবতা: অভিযোগ উঠলে ২০১২ সালের ১৫ই জুলাই বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন দুদক। ১৩ বছরেও এর কোনো অগ্রগতি হয়নি। পরে ২০২২ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো দুদকের চিঠিতে বলা হয়, মেসার্স রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ১৮টি বিলের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কাওরান বাজার শাখা ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক নীলকুঠি শাখায় পরিদর্শন করে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছে। যার অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনো চলমান আছে। এর আগে একই ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের ও অভিযোগপত্র দেন দুদক। যা এখনো বিচারাধীন। কিন্তু সম্প্রতি রোজবার্গ অর্থ ছাড়ের চেষ্টা শুরু করলে ফের সোনালী ব্যাংক থেকে চিঠি দিয়ে দুদকের কাছে অনুসন্ধানের শেষ অবস্থা জানতে চাওয়া হয়। এরপর চলতি বছরের ২৫শে জুন দুদক চিঠি দিয়ে সোনালী ব্যাংককে জানায়, সোনালী ব্যাংক ইন্টারকন্টিনেন্টাল শাখায় হলমার্ক গ্রুপসহ ৬টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ইস্যুকৃত ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি’র এক্সেপটেন্স তথা নন-ফান্ডেড দায় সংক্রান্ত অভিযোগটির এখনো অনুসন্ধান চলছে। এদিকে ভয়াবহ জালিয়াতির সব কিছু জেনেও বাংলাদেশ ব্যাংকের চাপে কিছুই করতে পারছে না সোনালী ব্যাংক। নিরুপায় হয়েই অর্থ ছাড়ের সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে জালিয়াতের হাতেই তুলে দিতে হচ্ছে রাষ্ট্রের অন্তত ৩ মিলিয়ন ডলার। 

কি আছে তদন্ত প্রতিবেদনে: ভুয়া এলসি ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ টাকা সরিয়ে নেয়ার তথ্য ফাঁস হওয়ার পর সোনালী ব্যাংক একটি তদন্ত করে। ওই তদন্তের লিখিত প্রতিবেদনে ‘শাখা কর্তৃক সংশ্লিষ্ট ১৮টি বিল পরিশোধে প্রতিবন্ধকতা’ শিরোনামে ৪টি পয়েন্টে বিল পরিশোধ না করার একাধিক কারণ বলা হয়। প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনায় সোনালী ব্যাংকের ওই সময়ের ডিএমডি খন্দকার মো. ইকবালের নেতৃত্বে গঠিত ১২ সদস্যের কমিটি বিলগুলো যাচাই-বাছাই করে ব্যাপক অনিয়ম খুঁজে পান। এরমধ্যে রয়েছে- মাস্টার এলসি না থাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সজেকশনের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি স্থাপন করতে হলে ভ্যালিড মাস্টার এলসি থাকা আবশ্যক। রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর কথিত ১৮টি বিটিবি এলসিতে যে ৫টি মাস্টার এলসি ও কন্ট্রাক্ট নম্বর দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। আরও ভয়াবহ জালিয়াতি হলো বিদেশে কোনো পণ্য রপ্তানি না হওয়া। বিধি মোতাবেক মাস্টার এলসি’র বিপরীতে বিদেশে রপ্তানিকৃত পণ্যের প্রত্যাবাসিত রপ্তানি আয় থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি’র বিল মূল্য ম্যাচিউরিটি তারিখে পরিশোধ করা হয়। রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে উপস্থাপিত ১৮টি বিলে উল্লিখিত মাস্টার এলসি ও কন্ট্রাক্টের বিপরীতে টি অ্যান্ড ব্রাদার্স নিট কম্পোজিট লিমিটেড ও ড্রেস মি ফ্যাশন লিমিটেড কর্তৃক বিদেশে পণ্য রপ্তানির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি তদন্ত প্রতিবেদনে মাস্টার এলসি’র বিপরীতে কোনো ফরেন কারেন্সি প্রত্যাবাসিত হওয়ার প্রমাণও পাওয়া যায়নি। ১৮টি বিলে মাস্টার এলসি’র সত্যতা এবং বিদেশে কোনো পণ্য রপ্তানি না হওয়ায় উক্ত এলসি’র বিপরীতে কোনো ফরেন কারেন্সি প্রত্যাবাসিত হয়নি। একাধিক জাল-জালিয়াতি ধরা পড়ার পরে চারটি সুপারিশ করে পরিদর্শন কমিটি। সেখানে প্রথমে বলা হয়, ১৮টি বিটিবি এলসি’র মধ্যে ৪টি এলসি- ০৩৭০১১০৪৩৩৫৬, ০৩৭০১১০৪৩৩৫৫, ০৩৭০১১০৪৩৩৫৬ এবং ০৩৭০১১০৪৩৩৫৭ সাপ্তাহিক ছুটির দিন ২রা ডিসেম্বর ২০১১ তারিখ হয়েছে মর্মে দেখানো হয়, যা অবাস্তব ও জাল-জালিয়াতির প্রমাণ। এ ছাড়া বিলের সঙ্গে উপস্থাপিত ট্রাক চালানসমূহে ট্রাক নং- ঢাকা মেট্রো-ম: ৫১-৩১৮১ উল্লেখ রয়েছে। বিআরটিএ কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনের তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, উক্ত ট্রাকের পরিবহন ধারণক্ষমতা ৯৭৫ কেজি। অথচ ১৮টি বিলের প্রতিটির বিপরীতে উক্ত ট্রাকে সরবরাহ ও পরিবহন দেখানো পণ্যের ওজন এবং পরিমাণ অনেক গুণ বেশি হওয়ার কথা, যা জালিয়াতির প্রমাণ। তৃতীয় পয়েন্টে বলা হয়েছে, উল্লিখিত শাখায় সুইফট সুবিধা থাকলেও ১৮টি এলসি’র সবক’টিই ম্যানুয়ালি স্থাপিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনস ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সজেকশন (জিএফইটি) এ বলা হয়েছে, ৫ হাজার ডলার বা সমপরিমাণ মূল্যের এলসি অবশ্যই সুইফট অথবা অনুরূপ কোনো নিরাপদ মাধ্যমে অ্যাডভাইজিং ব্যাংকে পাঠাতে হয়। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানা হয়নি। এমনকি এলসি খোলা কোম্পানির কারখানা পরিদর্শন করে ওই নামে কোনো কারখানার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এমনকি কোনো সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। পাশে একটি কারখানা চালু থাকলেও ওই কারখানার অবকাঠামোগত সুবিধাদি এবং বিদ্যমান মেশিনারিজের উৎপাদন সক্ষমতা বিবেচনায় সরবরাহকৃত পণ্যের পরিমাণ অত্যধিক বলে প্রতীয়মান হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জালিয়াতির জন্য এর আগেও রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। হাইকোর্টে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হযরত আলীর ব্যাংকের বিরুদ্ধে করা রিট পিটিশন রিভিউতে আছে। এবং সোনালী ব্যাংক কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংককে মোকাবিলায় বিবাদী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষকে বিবাদী করে দায়ের করা ৩৪টি মানি-স্যুট মামলা হয়। যা এখনো বিচারাধীন। এই অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় রোজবার্গের টাকা ছাড় করতে সোনালী ব্যাংকে চাপ দেয়ার প্রক্রিয়াটি বেআইনি ও বিধিবহির্ভূত। কারণ মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং দুদকের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত টাকা ছাড় করার কোনো সুযোগ নেই বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন।  

জানতে চাইলে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুনরায় অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষে অনুসন্ধানকারী দল প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন। এরপর সেই প্রতিবেদনের আলোকে কমিশনের সিদ্ধান্তক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগাম কিছু বলতে পারছি না। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় আছেন বলে এ প্রতিবেদককে অবহিত করেন। এবং তিনি ব্যাংকটির ডেপুটি পরিচালক শাহরিয়ার সিদ্দিকির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে তাকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা দিলেও সাড়া নেয়নি। 

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর শওকত আলী খান মানবজমিনকে বলেন, আমাদের অডিটে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজের জাল-জালিয়াতি ধরা পড়েছে এটা সত্য। এলসি খোলার সময় তার যে সমস্ত কাগজপত্র দিয়েছেন, তার পুরোটাই ভুয়া এবং নকল। তাই আমরা বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে জানিয়েছি। আমাদের অর্থ ছাড়ে আপত্তি আছে। এখন তারা কি সিদ্ধান্ত নেয় দেখা যাক। তবে এটার সঙ্গে শুধু একটা ব্যাংক সংযুক্ত নয়। অনেকগুলো ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা আছে। তাই বিষয়টি একটু জটিল। আর বাংলাদেশ ব্যাংক সকলকে একটি ছাড় দেয়ার নীতি সহায়তার পদক্ষেপ নিয়েছে তারা সেটার সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আপনাদের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি এমন নয়। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করাও ঠিক নয়।