Image description

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বর্তমান সামাজিক অবক্ষয়ের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মাদক এবং কিশোর গ্যাং গ্রুপের উপদ্রব। সমাজ থেকে মাদক ও কিশোর গ্যাং গ্রুপ নির্মূলে যোগদানের প্রথম আইনশৃংখলা সভায় সবার সহযোগিতা চেয়েছিলেন ইউএনও মেহেদী হাসান। দ্বিতীয় সভায় এবং ফেসবুকেও নিজের নাম্বার দিয়ে সহযোগিতা চেয়ে অভিযানে নামেন ইউএনও। সঙ্গে কাজ করছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিগার সুলতানা ও ওসি নিজাম উদ্দীন ভুইয়া।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধায় প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযানে চরপাতার কয়েকটি এলাকায় কিশোর গ্যাংকে ধাওয়া এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের রাতের বেলায় ঘরের বাইরে থাকার বিষয়ে স্থানীয় জনসাধারণ ও অভিভাবকদের সতর্ক করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার ও বুধবার চরপাতা ইউপির বোয়াডার বাজার এলাকায় অভিযানে নেমে মন্তাজ মিয়ার ছেলে মাদক কারবারি সোহেলকে গ্রেফতার করে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ইউএনও। 

ইউএনও মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে মাদক থেকে যদি বাঁচতে হয়, আমাদের সম্মিলিতভাবে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ দেশ আমাদের এবং দেশের মানুষ আমাদের। এই দেশে বসবাস করবো, এদেশের শান্তি ও সুন্দর সামাজিক ব্যবস্থার জন্য মাদক ও কিশোর গ্যাং মোকাবিলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। বিশ্বের এমন কোনো দেশ নাই যারা মাদককে নির্মূল করতে পেরেছে। যারা অনেক বড় কথা বলে সেই সমস্ত দেশগুলো থেকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো আছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মূল কাজ হচ্ছে জনমানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে, এলাকায় বসবাস করতে পারেন, পাশাপাশি আমাদের সমাজ ব্যবস্থা যাতে সুন্দর ভাবে পরিচালনা হতে পারে, সমাজের মানুষ যাতে কোনো প্রকার হুমকির মধ্যে না থাকে সেটি নিশ্চিত করা। 

 

ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যাবসায়ীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা আছে। এরা সব সময় থাকে, অতীতেও ছিল এখনও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা চেষ্টা করছি কিশোর গ্যাং সমূলে কিভাবে বিনাশ করা হয়, পাশাপাশি যারা এদের পরিচালনা করছে আমরা তাদেরকেও আইনের আওতায় আনবো। আমরা চাই সমাজের মানুষ যাতে কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেতে রেহাই পায়।

তিনি আরও বলেন, মাদকের বিষয়টি এমন হয়েছে যে শুধু পুলিশ- র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর দিয়ে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো মাদক নিয়ন্ত্রণে অনেক বেআইনী পদক্ষেপও নিয়েছে। কিন্তু আমরা সেই পথে যাচ্ছি না, আইনের মধ্যে থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। সামাজিকভাবে এর মোকাবিলা করে নির্মূল করা সম্ভব।

ইউএনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদেন উদ্দেশ্যে বলেছেন, যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গিয়ে মাদকের কুফল কিশোর গ্যাংয়ের কুফল নিয়ে আলোচনা করা হয় বা ক্লাস নেওয়া হয়, তাহলে যথেষ্ট সাড়া পাওয়া যাবে। অতীতেও আমি এ বিষয়গুলো দেখেছি। সবাই সব জায়গা থেকে মাদক এবং কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।