রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে আগুনে ১৫০০ ঘর পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোনও নিহত বা নিখোঁজের তথ্য পায়নি ফায়ার সার্ভিস। তবে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছ সংস্থাটি।
আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেন্টেনেন্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমাদের কাছে নিহত হওয়ার কোনও সংবাদ নেই। তবে ছোটোখাটো আহত হতে পারেন কেউ কেউ।” ঘটনার তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস দেরিতে পৌঁছানোর বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যানজট অন্যতম কারণ। বিকালের দিকে যানজট বেশি ছিল। এজন্য তিন-চারটি স্টেশন থেকে ইউনিটগুলো মুভ করানো হয়। এখানে সরু রাস্তার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসার পরও ঢুকতে পারেনি। এ কারণে দূর থেকে পাইপ টেনে কাজ করতে হয়েছে।”
লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, “প্রথমেই আমাদের খুবই বেগ পেতে হয়েছে আগুনের সোর্সের কাছে পৌঁছাতে। ফায়ার ফাইটাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করে দ্রুত আগুন আটকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।”
আগুনের উৎস সম্পর্কে তিনি বলেন, “আগুন নেভানোর কাজ করার সময় দেখা গেছে, যত্রতত্র বিদ্যুতের তার রয়েছে, প্রত্যেক বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। আগুনের সোর্স তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।”
ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি সবগুলো বিষয় তদন্তের পর জানা যাবে।”
প্রতিবছর কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগে, এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের কোনও বিশেষ উদ্যোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “প্রতিবছর কড়াইল বস্তিতে মহড়া করা হয়। মহড়ায় দুর্বল পয়েন্টগুলো নির্ধারণ করা হয় এবং আগুন লাগলে সে অনুযায়ী কাজ করা হয়। কোন পদ্ধতিতে ফায়ার ফাইটিং করতে হবে, এসব মহড়ায় উঠে আসে। কিছুদিন আগেই এখানে মহড়া শেষ হয়েছে, এজন্য আগুন দ্রুত নেভানো গেছে। অন্যথায় আগুন নেভাতে হয়ত আরও দুই-তিন ঘণ্টা বেশি সময় লাগতো।”
পানির স্বল্পতা ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পর্যাপ্ত পানির সাপোর্ট আমরা পেয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি, ওয়াসা এবং ড্রেন থেকেও পানি নেওয়া হয়েছে।”
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “শীতকাল এসেছে। আগামী দুই মাস আমাদের ভাষায় আগুনের সিজন বলা হয়। অন্য সিজনের চেয়ে এই সিজনের আগুনের ঘটনা বেশি দেখতে পায়।”
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, হেলিকপ্টার দিয়ে পানি ছিটালে আগুন দ্রুত নেভানো যেত। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “হেলিকপ্টার যখন উড়ে তখন বাতাসের জন্য আগুন আরও বেশি ছড়িয়ে যায়। এখানে হেলিকপ্টার দিয়ে নেভানোর মতো আগুন নয়।”
এর আগে মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ২২ মিনিটে কড়াইল বস্তিতে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নেভাতে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ শুরু করে। রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।