মেট্রোরেলের র্যাপিড পাশ ও এমআরটি পাশ অনলাইন রিচার্জ প্রক্রিয়া চালু হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর)।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন।
আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁও মেট্রোস্টেশনে অনলাইনে রিচার্জ প্রক্রিয়া উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার রেজাউল করিম সিদ্দিকী।
ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতারের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ।
ঘরে বসেই মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ করবেন যেভাবে
ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, নগদ, রকেটসহ সব ধরনের অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এখন মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ করা যাবে। ঘরে বসেই স্থায়ী কার্ড রিচার্জ করার জন্য কয়েকটি সহজ ধাপ নির্ধারণ করেছে ডিটিসিএ।
ডিটিসিএর তৈরি নতুন ব্যবস্থায় প্রথমে ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধন করে লগইন করতে হবে। রিচার্জ অপশনে গিয়ে বেছে নিতে হবে র্যাপিড পাশ নাকি এমআরটি পাশ রিচার্জ করা হবে। এরপর ব্যাংক কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের যেকোনো পেমেন্ট মাধ্যম নির্বাচন করে টাকা পরিশোধ করতে হবে। পেমেন্ট সফল হলে স্টেশনে স্থাপন করা নতুন যন্ত্রে কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ সম্পন্ন হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহারে গ্রাহককে অতিরিক্ত ফি দিতে হবে। অনলাইনে রিচার্জ করা টাকা এভিএম মেশিনে স্পর্শ না করা পর্যন্ত ‘অপেক্ষমাণ’ অবস্থায় থাকবে এবং তিন মাস পর্যন্ত বৈধ থাকবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্পর্শ না করলে টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফিরে যাবে, তবে ১০ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কেটে রাখা হবে। গ্রাহক চাইলে সাত দিনের মধ্যে রিচার্জ ফেরত নিতে পারবেন—সেক্ষেত্রেও একই হারে ১০ শতাংশ ফি প্রযোজ্য হবে।
ডিটিসিএ সূত্র জানায়, গত সোমবার স্টেশনগুলোতে এভিএম যন্ত্র বসানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রতিটি স্টেশনে দুটি করে মোট ৩২টি যন্ত্র ২১ ও ২২ নভেম্বর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনে স্থাপন করা হবে।
বর্তমান ব্যবস্থা
এখন পর্যন্ত রিচার্জকৃত টাকা ও গ্রাহকের তথ্য এমআরটি ও র্যাপিড পাশ কার্ডের ভেতরেই সংরক্ষিত থাকে, যা স্টেশনের গেটে থাকা যন্ত্র পড়ে নেয়। কিন্তু অনলাইন রিচার্জ সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকবে বলে সাধারণ গেটে টাচ করলে তা দেখা যাবে না। তাই আলাদা এভিএম যন্ত্রে স্পর্শ করে কার্ডের তথ্য হালনাগাদ করতে হবে। এরপর স্বাভাবিক নিয়মেই গেটে টাচ করে যাতায়াত করা যাবে।
এমআরটি বা র্যাপিড পাশ ব্যবহার করলে যাত্রীরা ১০ শতাংশ ছাড় পান। বর্তমানে মেট্রোরেলের ৫৫ শতাংশ যাত্রী এই কার্ড ব্যবহার করেন, আর ৪৫ শতাংশ যাত্রী নেন একক যাত্রার কার্ড।
মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রেন চলার কথা বলা হয়েছিল। পূর্ণ সক্ষমতায় প্রতি সাড়ে তিন মিনিট পরপর ট্রেন চললে ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন সম্ভব। বর্তমানে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তা হলে দৈনিক যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা দাঁড়াবে ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
এখন দিনে গড়ে পৌনে পাঁচ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন। গত অক্টোবরে সময়সূচি পরিবর্তন করে সকাল সাড়ে ছয়টায় উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন এবং রাত সাড়ে নয়টায় শেষ ট্রেন ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে মতিঝিল থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে এবং শেষ ট্রেন রাত ১০টা ১০ মিনিটে।
আগামী মাসে ট্রেনের মধ্যবর্তী সময় দুই মিনিট কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এতে দৈনিক যাত্রীসংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।