Image description

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ। কয়েক সেকেন্ডের কম্পনেই দিশেহারা হয়ে পড়েন নগরবাসী। ভূমিকম্পের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামমি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। তিনি অপরিকল্পিত নগরী এবং দুর্বল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরেন পোস্টে। বলেন, “এ অবস্থায় আল্লাহর দয়া ছাড়া বাঁচার কোনো উপায় আমাদের নেই।”

শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া পোস্টে মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, “সকালের ভূমিকম্পে যখন আমাদের বিল্ডিংটা দুলছে, তখন কিছু মুহূর্তের জন্য একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আতঙ্কে বুকটা কাঁপছিল। আর কয়েকটা ঝাঁকুনি দিলে ঢাকায় হয়তো লাশের মিছিল হতো। নিমেষেই গোটা শহর পরিণত হতো নিস্তব্ধ এক গোরস্থানে! দয়াময় এই যাত্রায় আমাদের রক্ষা করেছেন। প্রভু হে, তুমি বড়ই মেহেরবান!”

তিনি বলেন, “এমন অপরিকল্পিত নগরী, সারি সারি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, দুর্বল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট; আল্লাহর দয়া ছাড়া বাঁচার কোনো উপায় আমাদের নাই। এই দুর্যোগগুলো আমাদের জন্য গভীর সতর্কবার্তা। গোটা জনপদবাসীকে সামান্য এক ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি রিমাইন্ডার দিচ্ছেন। বোঝাতে চাচ্ছেন— বাড়াবাড়ি সীমালঙ্ঘন যা-ই করো না কেন, নাটাই কিন্তু আমার হাতে। চাইলে-ই যে কোনো মুহূর্তে তোমাদেরকে আমি ধুলিস‍্যাৎ করে দিতে পারি। তছনছ করে দিতে পারি তোমাদের এই চোখ ধাঁধানো সভ্যতা।”

আজহারী বলেন, “কুরআনের ভাষ‍্যমতে— মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আসলে ভূমিকম্প আমাদের অহংকার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে আসে। আমাদের অক্ষমতা দেখিয়ে দিতে আসে। আসে মহাশক্তিধর, মহাপ্রতাপশালী রাজাধিরাজ আল্লাহর সামনে আমরা কতোটা অসহায় আর নিরুপায় তার নমুনা হিসেবে। তিনি তো সেই মহাপরাক্রমশালী সত্তা যার মোকাবেলায় কেউ মাথা তুলতে পারে না, যার সিদ্ধান্তসমূহের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর সাধ্য করো নেই এবং যার ক্ষমতার সামনে সবাই অসহায় ও শক্তিহীন। আল্লাহু আকবার!”

তিনি বলেন, “জুমার দিনের কতো প্ল্যান নিয়ে কিছু লোক ঘর থেকে বেরিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা না ফেরার দেশে। আমাদের বেঁচে থাকাটাই যে আমাদের প্রতি আল্লাহর কত বড় দয়া; তা আমরা উপলব্ধি করি না। আচ্ছা বলুন তো, মৃত্যু কি আমাদের জীবনের পরিকল্পনায় থাকে? জীবনের এতো এতো কাজ, ব্যস্ততা, নানা পরিকল্পনা এগুলো কি আমরা মৃত্যুকে স্মরণ রেখে করি? অথচ মৃত্যুর নির্ধারিত সময় আসলে তো আমাদের সকল ব্যস্ততাই শেষ হয়ে যাবে। আমিহীন দুনিয়ায় সবকিছু চলবে ঠিক আগের মতোই।”

‘কার মৃত্যু কখন, কীভাবে আসবে সেটা কেউ জানে না’ উল্লেখ করে এই ইসলামি বক্তা বলেন, “আমাদের উচিত সর্বদা প্রস্তুত থাকা। তওবা করে রবের কাছে ফিরে আসা। একনিষ্ঠভাবে তাঁর-ই কাছে সমর্পিত হওয়া। এ ভূমিকম্প তো কিছুই না। আসল ভূমিকম্প তো সেটা—যখন জমিন প্রকম্পিত হবে প্রবল প্রকম্পনে। আর পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। অতঃপর তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে।” [সূরা আল ওয়াকিয়াহ, ৪-৬]

শীর্ষনিউজ