Image description

কিছু হলেই নিজের মাকে মারধর করেন ছেলে মনির (মনু) খান। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে  থানায় মামলা দায়ের করেন আশি বছর বয়সী বৃদ্ধা মা রহিমা বেগম। এর আগেও ওই ছেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন মা। এ ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের বেড়া চিকন্দী এলাকায়।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে পালং মডেল থানায় ছেলে মনির খান, ছেলের বউ শিল্পী বেগম ও নাতির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী রহিমা বেগম।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার বেড়া চিকন্দী গ্রামের রহিমা বেগমের স্বামী মো. লাল মিয়া খান প্রায় ১০ বছর  আগে মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার পর রহিমা বেগমের তিন ছেলে দেলোয়ার খান (৫০), আনোয়ার খান (৪৫) ও মনির ওরফে মনু খান (৩৯) আলাদা হয়ে সংসার করেন। মেজ ছেলে আনোয়ারের সাথে থাকেন মা রহিমা বেগম। ভাইদের সাথে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে মনিরের। জমি জমাসহ পারিবারিক নানা বিষয়ে বিরোধের জেরে মা রহিমা বেগমকে প্রায়ই মারধর করেন ছোট ছেলে মনির ওরফে মনু খান। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২০ জানুয়ারি সকাল ৮ টার দিকে মেজ ভাই আনোয়ার খানের ওপর হামলা করে মনির খান, তার স্ত্রী শিল্পী বেগম ও ছেলে বাপ্পি খান। এ সময় বৃদ্ধা মা রহিমা বেগম বাঁধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করে ছেলে মনির। এতে আনোয়ার খান ও রহিমা বেগম গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার বিকেলে মা রহিমা বেগম বাদী হয়ে ছোট ছেলে মনির খান, তার স্ত্রী শিল্পী বেগম ও মনির খানের ছেলে বাপ্পি খানকে আসামি করে পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে বৃদ্ধ মা রহিমা বেগম বলেন, কিছু হলেই ছেলে মনির, তার বউ ও নাতি আমাকে প্রায়ই মারধর করে। এর আগেও ২২ ডিসেম্বর আমি মনিরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এখন আবার মামলা করেছি। আমি ওর বিচার চাই।

গুরুতর আহত আনোয়ার খান বলেন, জমিজমাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাই মনির খান প্রায়ই আমার মাকে মারধর করে। গত ২০ জানুয়ারি সকালে সে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে গুরুতর আহত করে। আমার বৃদ্ধা মা বাধা দিতে আসলে তাকেও মারধর করে। আমি এর বিচার চাই।

বড় ভাই দেলোয়ার খান বলেন, এই ঝামেলার কারণে আমি বাড়ি থাকি না। ছোট ভাই মনির কসাইয়ের কাজ করে। তার ব্যবহারও কসাইয়ের মতো। সে প্রায়ই আমার বৃদ্ধা মাকে মারধর করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

অভিযুক্ত মনির (মনু) খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

ডোমসার ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মাহবুব খান বলেন, আমি যতটুকু জানি তাদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ ঘটনায় একাধিকবার দরবার সালিশ হয়েছে। সালিশে কেউ কারও কথা মানেন না। এছাড়া মা ছেলের মধ্যে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, রহিমা বেগম তার ছেলে, ছেলের বউ ও নাতিকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। মামলাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।