কোনো কিছু সন্দেহ থাকলে বা আক্ষরিক অর্থে না হলে, সংবাদমাধ্যম উর্ধ্বকমা ব্যবহার করে। যেমন ভুয়া ক্রসফায়ারের নিউজের শিরোনাম হতো, পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' যুবক নিহত। এই উর্ধ্বকমার মানে হচ্ছে, পুলিশ বন্দুকযুদ্ধের দাবি করেছে, কিন্তু সংবাদমাধ্যম এই বিষয়ে নিশ্চত নয়, বা বন্দুকযুদ্ধের দাবি বিশ্বাস করছে না।
যেমন আজ একটি সংবাদমাধ্যম খবরের শিরোনাম করেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড। মানে আদালত রায় দিলেও, হাসিনা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছেন কিনা, এই বিষয়ে তারা নিশ্চিত নয় বা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টিকে অসত্য মনে করে।
কিন্ত একই সংবাদমাধ্যম, খালেদা জিয়ার রায়ের সময় শিরোনাম করেছিল, দুর্নীতির দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ৫ বছর সাজা। কোনো উর্ধ্বকমা নেই। মানে তারা দুর্নীতির দায়ে সাজার বিষয় নিশ্চিত ।
ট্রাইব্যুনালে রায়ের পর শিরোনাম করেছিল, রাজাকার সাঈদীর ফাঁসির আদেশ। এখানেও উর্ধ্বকমা নেই। মানে সংবাদমাধ্যমটি তখনও নিশ্চিত ছিল, সঠিক সাজা দিয়েছে আদালত।
শুধু এই একটি নয় আরও অনেক সংবাদমাধ্যম একইভাবে নানা বয়ান উৎপাদন করে। যেমন ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত শিরোনামে সরাসরি লেখা হত, হেফাজতি বা জামাতি নৃশংসতা। বা বিএনপির তান্ডব। এখন গাড়িতে আগুন টাগুন দেওয়ার পর লেখা হয়, দুর্বৃত্তের হামলা। দুটোই ঠিক আছে। কিন্ত একই সংবাদমাধ্যম আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে দুর্বৃত্ত এবং অন্যদের ক্ষেত্রে সরাসরি নাম লিখলে, নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হবে। আবার অনৈতিকও। উর্ধ্বকমার ব্যবহারও তাই।
-রাজীব আহমেদ