Image description

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, শেখ হাসিনার বিচারের রায়ে তিনি সন্তুষ্ট, তবে বিস্মিত নন। গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারত সরকারের কাছে আবারও চিঠি দেওয়া হবে।

আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে আইন মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ড. আসিফ বলেন, ‘আমরা শেখ হাসিনাকে দেশে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আবারও চিঠি লিখব। ভারত যদি এই গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে—এটি বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক এবং নিন্দনীয় আচরণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ একটি বিচার হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, আমরা যতদিন আছি বিচারকার্য পূর্ণ গতিতে চলবে।’

অন্যদিকে পৃথক এক ফেসবুক পোস্টে আইন উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড। শোকর আলহামদুলিল্লাহ।’

এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বছরের জুলাই–অগাস্ট গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাকে পাঁচটি অভিযোগের দুইটিতে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দেয়।

 

ট্রাইব্যুনাল–১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন। অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রায় ঘোষণার সময় জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবীসহ জুলাই–অগাস্টে নিহতদের কয়েকজনের পরিবার উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যার যে ভিডিও ও প্রমাণ রয়েছে, আদালতে তার বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়।

এ ছাড়া আন্দোলনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে অংশবিশেষ পড়ে শোনানো হয়। বেলা সোয়া একটার দিকে গণ–অভ্যুত্থান চলাকালে শেখ হাসিনার বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ডও আদালতে শোনানো হয়। এর আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে সে সময়ের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কথোপকথনও শোনানো হয়।

গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন।

তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। দুজনই বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অ্যাপ্রুভার (রাষ্ট্রসাক্ষী) হওয়ায় পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।