সম্প্রতি জাহানারা ইমামের বই বিক্রির বিতর্কের প্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, একটি দৈনিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ‘জাহানারা ইমামের দেওয়া বই বিক্রি করেছে বাংলা একাডেমি, এখন দাম হাঁকা হচ্ছে লাখ টাকা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। কিন্তু বাংলা একাডেমি দাবি করেছে, জাহানারা ইমাম সংগ্রহের কোনো বই বিক্রি করা হয়নি।
আজ রবিবার ( ৯ নভেম্বর) বাংলা একাডেমি থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৫ সালের ২৫ জুন থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত পরিত্যক্ত ও ব্যবহার–অযোগ্য কয়েক হাজার বই এবং কাগজপত্র বিধিমোতাবেক নিলামে বিক্রি করা হয়। এসবের মধ্যে ছিল বইমেলায় জমে থাকা মানহীন বই, দীর্ঘদিন ধরে গ্রন্থাগারে অব্যবহৃত বই ও বিক্রয়–অযোগ্য প্রকাশনা। তবে এসবের কোনোটি জাহানারা ইমাম সংগ্রহের নয়।
অ্যাকাডেমির তথ্য অনুযায়ী, জাহানারা ইমামের পরিবারের পক্ষ থেকে মোট ৩৫৯টি বই হস্তান্তর করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৩০৮টি বই এখনো গ্রন্থাগারের নির্দিষ্ট সেলফে সংরক্ষিত আছে। ২০১৪ সালে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে গঠিত একটি কমিটি গ্রন্থাগারের কিছু বই ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে জাহানারা ইমামের বই বিক্রির কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে একাডেমি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অনেক আগে বাছাই করা কিছু মানহীন বই ভুলক্রমে পরিত্যক্ত বইয়ের তালিকায় চলে যায়। পরে ঘর খালি করার প্রয়োজনে সেগুলো বিক্রি করা হয়। এতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সংগ্রহের বই বিক্রি হওয়ার আশঙ্কা কেউ করেনি।
বাংলা অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিবেদনে এমনভাবে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে মনে হয় জাহানারা ইমামের বই ইচ্ছাকৃতভাবে বিক্রি করা হয়েছে। অথচ বাস্তবে সেসব বই আগের মতোই সংরক্ষিত আছে। একাডেমি দাবি করে, ওই পত্রিকার প্রতিবেদক তথ্য যাচাই না করেই বিভ্রান্তিকর শিরোনামে প্রতিবেদন করেছেন।
তবে একাডেমি স্বীকার করেছে, জাহানারা ইমামসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বই নীলক্ষেত বা অনলাইনে বিক্রি হওয়া দুঃখজনক। তারা মনে করে, বহু বছর আগে ঘটে যাওয়া একটা দায় কৌশলে বহুগুণ বাড়িয়ে বর্তমান প্রশাসনের ওপর বর্তানো নিশ্চয়ই সুরুচির পরিচয় নয়, সাংবাদিকতার তো নয়ই।