শেরপুরের নকলা উপজেলায় সরকারি কৃষি প্রণোদনা দিতে রাজি না হওয়ায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহারিয়ার মুরসালিনকে অফিসের ভেতর মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাহাত হাসান কাইয়ুম (৩৫) ও তার সহযোগী ফজলুর রহমান (৩২)-এর বিরুদ্ধে। ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেল আড়াইটার দিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিসে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর রাতেই নকলা থানায় একটি নিয়মিত মামলা (মামলা নং–৫) দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ছাত্রদল নেতা রাহাত হাসান কাইয়ুম ও ফজলুকে আসামি করা হয়।
জানা যায়, অভিযুক্ত রাহাত হাসান কাইয়ুম নকলা পৌরসভার ধুকুরিয়া গ্রামের সুরুজ মোওলার ছেলে এবং ফজলু একই গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে।
কৃষি কর্মকর্তা শাহারিয়ার মুরসালিন বলেন, বিকেল আড়াইটার দিকে রাহাত ও ফজলু অফিসে এসে জানতে চান, কেন এখনো তিনি বদলি হননি, কারা কৃষি প্রণোদনা পেয়েছেন এবং ‘নেতাদের ভাগ’ কত। এরপর তারা বলেন, ছাত্রদলের ভাগ দিতে হবে। আমি জানাই, সরকারি প্রণোদনা প্রকৃত কৃষকদের জন্য—রাজনৈতিকভাবে কারও ভাগ দেওয়ার সুযোগ নেই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিষয়টি স্থানীয় বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলমকে জানাই। এরপর রাহাত আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং সহযোগী ফজলুকে নিয়ে আমাকে অফিসের ভেতরেই মারধর করে। আমি চিৎকার করলে তারা পালিয়ে যায়।’
বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, রাহাত উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব। কৃষি কর্মকর্তা তাকে ফোনে বিষয়টি জানানোর পর তিনি রাহাতের জেঠাত ভাই যুবদল নেতা লুটাসকে জানান। ‘লুটাস রাহাতকে ফোনে ধমক দেন, তারপরও সে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে,’।
শেরপুর জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসেম সিদ্দিকী বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। এর সত্যতা যাচাই করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাইম হাসান উজ্জ্বল বলেন, ‘ঘটনাটি শুরুতে জানতাম না। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিস্তারিত জেনেছি। একজন কর্মরত কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রাহাত হাসান কাইয়ুমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযুক্ত রাহাত হাসান কাইয়ুমের ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’