Image description

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও গণভোট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ৭ দিনের বেঁধে দেয়া সময়ের দুইদিন পার হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার দৃশ্যমান কোনও উদ্যোগ নেই। নিজেদের উদ্যোগে আলোচনা নিয়ে দলগুলো ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে।

সরকারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে সতর্ক অবস্থানে বিএনপি। গণভোট নিয়ে আলোচনা চায় জামায়াত এবং প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে দলটি। অন্যদিকে, এনসিপি সরকারের বিরুদ্ধে সময় নষ্টের অভিযোগ তুলেছে।

অন্যান্য দলের নেতারা ঐকমত্য কমিশনের তৈরি করা জটিলতা নিরসনে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ নিয়ে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানর ভাষ্য হচ্ছে, এক সপ্তাহের মধ্যে যদি রাজনৈতিক দলগুলো বসে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো। সবার আগে আমাদের পক্ষ থেকে নায়েবে আমির আহ্বান জানিয়েছেন যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছাই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের মতে, যে সরকার বারবার প্রতারণার আশ্রয় নেয়, ওরা বারবার প্রতারণা করবে। 

রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, সরকারের দায়িত্বহীনতার কারণেই ঝুঁকির মুখে পড়েছে জুলাই সনদ। তবে, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি নিজ উদ্যোগে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার কথা জানান।

জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এটা একটা জটিলতা তৈরি করেছে এবং আমরা মনে করি এটার দায় সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কোর্টে বল ঠেলে দিলে তো হবে না, মানে এটার তো ফ্যাসিলিটেটর কে? ঐকমত্য কমিশন ছিল ফ্যাসিলিটেটর। এখন যারা কাজটাকে সমন্বয় করে এগিয়ে নিয়ে যাবে তারাই যদি অনুপস্থিত থাকে, রাজনৈতিক দলগুলোর যে মতপার্থক্য এটা নিজেরা সমাধান করে ফেলবে, এ রকম একটা কথা বলা সহজ, কিন্তু বাস্তবে এটা জানা যায় যে কতটা কঠিন কাজ।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সংকটটা ঐকমত্য কমিশন ও কিছুটা সরকারেরই তৈরি করা। এখন তাদেরকেই উদ্যোগ নিয়ে সংকট থেকে বেরিয়ে আসার পথ তৈরি করতে হবে। আমি মনে করি এখানে সরকারের পলিটিক্যাল উইলটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

এনসিপির নেতারা বলছেন, সরকার গণভোট নিয়ে সাপলুডু খেলছে। রাজনৈতিকদলগুলোর দিকে বল ঠেলে সময় নষ্ট করছে সরকার।

দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, সরকার আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এটা আসলে তারা গা বাঁচানোর একটা পরিকল্পনা নিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে ঠেলে দিলাম এবং তাদের মধ্যে বোঝাপড়ায় একটা জায়গায় পৌঁছালো না এবং সেক্ষেত্রে সরকার কিছু করতে পারলো না। সরকার আসলে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরে দায় দিয়ে তারা সংস্কার থেকে দূরে সরে যেতে চায়, এমন একটা মানসিকতা তাদের মধ্যে আছে।

আলোচনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও সরকারের অবস্থান বিশ্বাস ও আস্থায় ফাটল ধরাতে পারে বলে শঙ্কা অনেকের।