পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘পশ্চিম তীর’ বা অন্য কোনো অধিকৃত ভূখণ্ডের সঙ্গে তুলনা করার প্রচেষ্টা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার। এ ধরনের উপমা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবতার চরম বিকৃতি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, স্বাধীনতার পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সার্বভৌম ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটি সর্বদা বেসামরিক কর্তৃত্বের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতোই শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। এটি কোনোভাবেই সামরিক শাসন বা দখলদারিত্বের প্রতিফলন নয়।
সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে কোনো বিদেশি অধিকৃত ভূখণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা কেবল তথ্যগত ভুল নয়, বরং পার্বত্য জনগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের সার্বিক জাতিসত্তার প্রতি অসম্মান। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায়, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে এবং পার্বত্য অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকার যেকোনো মানবাধিকারসংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণভিত্তিক ও যাচাইযোগ্য প্রতিবেদনকে স্বাগত জানালেও এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত নির্যাতনের কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করে, বাংলাদেশ দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে মূল্যায়ন করে। তবে সংবেদনশীল ও জটিল ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করার সময় তথ্যনির্ভরতা, পেশাদারিত্ব ও সংবেদনশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা প্রত্যাশা করি, গণমাধ্যম ও সৃজনশীল প্ল্যাটফর্মগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরির সময় বাস্তবতা ও দায়িত্বশীলতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি একটি নিউজপোর্টালের ফটো স্টোরি ও নিবন্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘অধিকৃত’, ‘সামরিকীকরণকৃত’ বা ‘সামরিক শাসনাধীন’ অঞ্চল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।