বাংলাদেশের মানুষের প্রতিদিনের খাবারের অপরিহার্য অংশ মুগডাল। কিন্তু বাজারে যে ‘মুগডাল’ নামে বিক্রি হচ্ছে, তার বড় একটি অংশ আসলে বিদেশি মথবীজ— এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)।
ভারত থেকে আমদানি করা এই মথবীজ দেখতে অনেকটাই মুগডালের মতো। অসাধু ব্যবসায়ীরা তাতে হলুদ ও টারটাজিন নামের রঙ মিশিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। অথচ এসব রঙ শরীরে দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বাজার থেকে ৩৩টি ‘মুগডাল’ নমুনা সংগ্রহ করে। প্রাথমিক পরীক্ষায় ১৮টি নমুনায় রঙের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এর একটি বিএসটিআই ল্যাবে পাঠানো হলে সেখানে টারটাজিন রঙের অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়।
বাজারে প্রকৃত মুগডালের দাম যেখানে কেজিতে ১৫০–১৬০ টাকা, সেখানে ভারতীয় মথবীজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০–১৪০ টাকায়। চেহারায় মিল থাকায় সাধারণ ক্রেতা তো দূরের কথা, অনেক অভিজ্ঞ ব্যক্তিও পার্থক্য ধরতে পারেন না।
ডেটা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশে মুগডাল আমদানি হয়েছে প্রায় ১০,৯৬১ টন, আর মথবীজ আমদানি হয়েছে ২১,৮৯১ টন— অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু বাজারে “মথবীজ” নামে কোনো পণ্য পাওয়া যায়নি, যা প্রতারণার প্রমাণ বহন করে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে রঙ মেশানো মথবীজ আমদানি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, “আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। যারা এই প্রতারণায় জড়িত, তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে।”
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শিববিচিত্র বরুয়া বলেন, “ডালের নামে ক্ষতিকর পণ্য আমদানির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”