ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে, একজন ব্যক্তি একটি বাড়ির প্রাচীর টপকিয়ে সাইকেল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।
ভিডিওটি শেয়ার করে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সোস্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট বাবা বানারাস @RealBababanaras দাবি করেছেন, অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী মোহাম্মদ জুবায়ের এক হিন্দু বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন।
বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে তিনি দাবি করছেন, অবৈধ বাংলাদেশিরা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। চুরি থেকে সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ছেন।
পোস্টটির আর্কাইভ সংস্করণ দেখুন এখানে।
আরো পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
দ্য ডিসেন্ট অনুসন্ধান করে দেখেছে, ভিডিওটি ভারতের কোনো ঘটনার নয় এবং ঘটনাটির সাথে কোনো বাংলাদেশি যুক্ত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং ভিডিওটি মূলত প্যারাগুয়ের ASUNCION নামক এলাকার সাইকেল চুরি করার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ।
প্রচারিত ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্রের রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করলে, Sucesos Paraguay Noticias নামক ফেসবুক পেইজে গত মে মাসের দুই তারিখের একটি ভিডিওর সাথে হুবুহু মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটির উল্লেখ করা হয়, এটি ASUNCION এলাকার একটি বাড়িতে সাইকেল চুরি করার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ।
ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
আরো অনুসন্ধান করলে, SNT Paraguay নামক প্যারাগুয়ের একটি সংবাদ মাধ্যমের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। তাদের প্রতিবেদনের নিশ্চিত করা হয় ঘটনাটি প্যারাগুয়ের। প্রতিবেদনটিতে অনুসারে Barrio Jara এলাকায় একটি বাড়িতে কাটাতারের সুরক্ষিত বেষ্টনি থাকা সত্ত্বেও একজন সেটি পেরিয়ে চুরি করতে সক্ষম হয়, যা নিয়ে প্রতিবেশীরা সঙ্কিত।
অর্থাৎ, প্যারাগুয়ের একটি বাড়িতে চুরির ঘটনাকে মিথ্যা দাবিতে বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
ভিডিও ২:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শাসনামলে দেশের রাস্তায় একজন নারীকে এক ব্যক্তি নির্যাতন করছেন।
ভিডিওটির আর্কাইভ সংস্করণ দেখুন এখানে।
দ্য ডিসেন্টের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়; এটি ভারতের কর্ণাটকে সংঘটিত এক ঘটনার দৃশ্য।
ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এনডিটিভি’র ওয়েবসাইটে গত ২৪ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই দৃশ্য পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই ঘটনাটি ভারতের কর্ণাটক প্রদেশের। কর্ণাটকের বিজয়পুরা জেলার সিন্দেগি শহরের একটি ব্যস্ত রাস্তায় ইয়ামানাপ্পা মাদার নামে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী অনুসূয়া মাদারের ওপর আক্রমণ করে।
রিপাবলিক ওয়ার্ল্ডসহ ভারতের আরও একাধিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন থেকেও এবিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।
অর্থাৎ, ভারতের কর্ণাটকে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর ওপর আক্রমণের ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবি করে সরকারের বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালানো হচ্ছে।