অতীতের সব ঘটনা ভুলে বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী বা টেকসই সম্পর্ক গড়তে চায় চীন। বিশেষ করে ৩৬ জুলাই খ্যাত ৫ই আগস্ট দেশে ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন এবং দুনিয়ায় তার একমাত্র আশ্রয়দাতা ভারতের বৈরি আচরণ মোকাবিলায় ঢাকার কৌশলগত মিত্র হতে চায় বেইজিং। কূটনৈতিক সূত্রগুলো মধ্যরাতে মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানিয়েছে, এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্রমাগত আকর্ষণীয় প্যাকেজ বা প্রস্তাব পাঠাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের প্রতিনিধিরা। অতি সম্প্রতি চীনের তরফে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এসেছে। এক. অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আগামী মার্চে বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ। দুই. ভারতকে চাপে রাখতে তিস্তায় বাংলাদেশের পূর্ব প্রস্তাবিত সমন্বিত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীনের নিঃশর্ত সহায়তার আগাম অঙ্গীকার।
সেগুনবাগিচার তরফে চীনের দাওয়াতের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরকে ইতিবাচক চিন্তার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তবে তিস্তা প্রশ্নে চটজলদি কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বা জনসমক্ষে প্রতিক্রিয়া দেখাতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
সূত্র মতে, নানা বিষয়ে গত ৫ মাসে ঢাকা-বেইজিং বোঝাপড়া বেশ দূর এগিয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় পূর্বনির্ধারিত দ্বিপক্ষীয় সফরে আজ চীন যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই কোন দেশে মিস্টার হোসেনের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
সেগুনবাগিচা বলছে, কাঙ্ক্ষিত সেই সফরের প্রস্তাবিত কর্মসূচির উল্লেখযোগ্য অংশ বাস্তবায়ন সম্ভব হলে এটা ব্রেকথ্রো বা ইতিহাস হবে। আর সেই সফরের সফলতার ওপরই নির্ভর করছে আগামী ২৭ ও ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠেয় বাও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলনে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস যোগ দেবেন কি-না?
একটি সূত্র অবশ্য দাবি করেছে পূর্ণদ্বিপক্ষীয় সফর হলেই কেবলমাত্র মার্চে বেইজিং যেতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সরকার প্রধানের সফরটি হবে কি-না? তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।