Image description

ফজরের নামাজের পর হাঁটতে বের হলে একটি অ্যাম্বুলেন্সে পাঁচজন এসে চোখ মুখে কালো কাপড় বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরের টঙ্গী টিঅ্যান্ডটি কলোনির বিটিসিএল মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি মুহিবুল্লাহ মাদানীকে। 

গত বুধবার সকাল ৭টার দিকে তিনি টঙ্গী পূর্ব থানার টিঅ্যান্ডটি মসজিদের সামনে থেকে নিখোঁজ হন তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের সিতারাম হেলিপ্যাড এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। 

বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে গাছের নিচে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। এ সময় তার দুই পা শিকল দিয়ে একটি কলা গাছের সঙ্গে বাঁধা ছিল। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। 

বৃহস্পতিবার রাতে টঙ্গী থেকে আসা পরিবার ও প্রতিনিধি সদস্যদের হাতে তাকে তুলে দেয় পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসাধীন মুফতি মহিবুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার ফজরের নামাজের পর তিনি হাঁটতে বের হলে একটি অ্যাম্বুলেন্সে পাঁচজন এসে তার চোখ মুখে কালো কাপড় বেঁধে তাকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এ সময় অপহরণকারীরা বোতল দিয়ে তাকে পেটায়। নির্যাতনের ফলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তবে তারা যখন কথাবার্তা বলছিল তখন তাদের মুসলমান বা হিন্দু কিছুই মনে হয়নি। একই সঙ্গে তাদের বাংলাদেশি বলেও মনে হয়নি। সে সময় তারা প্রমিত বাংলা বা শুদ্ধ বাংলায় তাকে গালাগাল করে। তবে তাকে ইসকনের চিন্ময়কৃঞ্চ প্রভুর জামিনের বিষয়ে তাকে কথা বলতে বলেছে। 

এ সময় তিনি আরও বলেন, গত ১১ মাস ধরেই অজ্ঞাত নামে চিঠির মাধ্যমে তাকে ইসকনের বিরুদ্ধে কথা না বলতে নানা হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছিল। এমনকি ইসকনের পক্ষে কথা বললে তারা তাকে এক কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাবও দেয়। সর্বশেষ একটি চিঠিতেও বাংলাদেশের ধর্মভিত্তিক দলগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলতে বলা হয়। 

এছাড়া এনসিপি, বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলতে বলা হয়েছে। আর তাদের কথা না শুনলে তাকে সরাসরি হত্যার হুমকিও দেয়।

এদিকে মুফতি মুহিবুল্লাহ মাদানীকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন। টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।