Image description
 

নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন হলে সরকারের ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ তৈরি হবে বলে জাতীয় পে কমিশনকে জানিয়েছে অর্থ বিভাগ। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন দুটি উৎস দেখছে অর্থ বিভাগ, যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার বর্ধিত অর্থ সংস্থানে সহায়তা করবে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নতুন পে স্কেল কার্যকর হতে পারে।

 

জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই গঠিত জাতীয় বেতন কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন আগামী ডিসেম্বরে দিতে চায়। সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিশ্চিত করেছেন, নতুন বেতন কাঠামো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই গেজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে, পরের সরকারের জন্য অপেক্ষা করা হবে না।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে হিসাবে, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই সরকারি চাকরিজীবীরা নতুন বেতন স্কেলে বেতন-ভাতা পেতে পারেন।

 

উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও জানান, নতুন পে স্কেল কার্যকর করতে হলে চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটেই অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। ডিসেম্বরে বাজেট সংশোধন শুরু হলে সেখানেই এই বিধান যুক্ত করা হবে।

 

অর্থ বিভাগ পে-কমিশনকে জানিয়েছে, নতুন কাঠামোতে শুধু ব্যয় বাড়বে না, বরং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়ের পরিমাণ বাড়ায় তাদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। অতিরিক্ত অর্থের সংস্থান নিশ্চিত করতে অর্থ বিভাগ দুটি নির্দিষ্ট উৎসের ওপর জোর দিচ্ছে:

১. সর্বনিম্ন বেতনধারীদের আয়কর: অর্থ বিভাগ মনে করছে, সর্বনিম্ন বেতন সুবিধাভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লে সরকার তাদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের আয়কর পাবে, যা নতুন বেতন কাঠামোর বাড়তি অর্থ সংস্থানে সহায়ক হবে।

২. সরকারি বাসাবাড়ির ভাড়া বৃদ্ধি: সরকারি চাকরিজীবীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সরকারি আবাসনে বসবাস করেন। বেতন কাঠামো সমন্বয়ের ফলে সরকারি বাসাবাড়ির ভাড়ার হার বাড়ানো হবে। ফলে ওই উৎস থেকেও সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে।

২০১৫ সালের পর বিগত এক দশকে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়নি। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার মান বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য বলে অর্থ বিভাগ স্বীকার করেছে। জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় বেতন বাড়ানোর হার শতভাগ হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

তবে জাতীয় পে কমিশনের সভাপতি সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান অর্থনৈতিক চাপের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "আমাদের হাতে সীমিত সম্পদ আছে। এর মধ্য থেকেই সর্বোচ্চ বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব থাকবে।"

বর্তমানে পে-কমিশন অনলাইনে চারটি প্রশ্নমালার মাধ্যমে প্রাপ্ত সর্বসাধারণের মতামত ও সুপারিশ যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করছে।