Image description

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা যেভাবে আদালতে হাজির হয়েছেন, তাতে সেনা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রশংসার দাবিদার বলে মনে করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আইন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গুম, খুনের মামলার আসামি হিসেবে সেনা কর্মকর্তাদের তাদের কোথায় রাখা হবে সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়।

নির্বাচন নিয়ে কোন সংশয় নেই জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য বিবৃতির কারণে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় নি, তারা সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকার কথা বলেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, সরকার নিরপেক্ষভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, গুমের ঘটনায় দু’টি ও একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে আসামিদের ঢাকা সেনানিবাসের সাব-জেলে নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পলাতক শেখ হাসিনা, তারেক সিদ্দিকীসহ বাকিদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের বাকিরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

কারাগারে পাঠানো সেনা কর্মকর্তারা হলেন- র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে)।

এছাড়াও কারাগারে যাওয়া অপর সেনা কর্মকর্তারা হলেন- র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

এদিন গুমের অভিযোগে করা দুই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে গত বছরের ১৮ ও ১৯ জুলাই রামপুরায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে করা মামলার শুনানির জন্য আগামী ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে সকাল সোয়া ৭টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পরে সাড়ে ৭টার দিকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।

পরে ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আসামিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে আনলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এখন আসামিদের কোন কারাগারে রাখা হবে, সেটি কারা কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।