
অগ্নিকাণ্ডের উচ্চ ঝুঁকি নিয়েই সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয় মিথানল। স্থলবন্দরে ফায়ার সার্ভিসের কোনো ইউনিট না থাকায় গত বছর এই স্থলবন্দরে মিথানলবাহী লরিতে দুর্ঘটনা ঘটলে আগুন নেভাতে ভারতের ডাউকি থেকে আনতে হয়েছে অগ্নিনির্বাপক দল। একইভাবে বন্দরে ল্যাব না থাকায় আমদানিকৃত কেমিক্যালের নমুনা পরীক্ষা করাতে হয় শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি)। সেখান থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর ভারতীয় ট্যাংক লরি থেকে খালাস করা হয় মিথানল।
জানা গেছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন পোশাক ফ্যাক্টরির কাঁচামাল এবং জ্বালানিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য তামাবিল ভারত থেকে মিথানল আমদানি করা হয়। ভারতের আসাম রাজ্যের পার্বতপুর ডিব্বুগড় পেট্রাকেমিক্যাল কোম্পানি থেকে এই মিথানল বাংলাদেশে আসে। কিন্তু তামাবিল স্থলবন্দরে এসব রাসায়নিক পদার্থ রাখার নিরাপদ জোন নেই। তাই ভারত থেকে মিথানলবাহী ট্যাংক লরি আসার পর তামাবিল স্থলবন্দরে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় স্থলবন্দরে অপেক্ষমাণ লরিগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছরের ৯ নভেম্বর তামাবিল স্থলবন্দরে অপেক্ষমাণ মিথানলভর্তি একটি ভারতীয় ট্যাংকলরিতে আগুন ধরে যায়। তখন স্থলবন্দরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত অন্যান্য মালবোঝাই ট্রাক সরিয়ে নেওয়ায় সেবার বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় বন্দরটি। ওই সময় তামাবিল স্থলবন্দরে ফায়ার সার্ভিসের কোনো ইউনিট না থাকায় ভারতের ডাউকি থেকে অগ্নিনির্বাপক দল ছুটে আসে। এরপর বাংলাদেশের জৈন্তাপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরেকটি দল এসে ভারতীয় অগ্নিনির্বাপক দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। গত বছর দুর্ঘটনার পর তামাবিল দিয়ে মিথানল আমদানি বন্ধ রাখতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিল তামাবিল পাথর চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপ। তারা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে তামাবিলে কেমিক্যাল টেস্টিং ল্যাব স্থাপন ও ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট স্থাপনের দাবি জানান। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ জানান, তামাবিল স্থলবন্দরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট স্থাপন খুবই প্রয়োজন। এ ছাড়া এখানে একটি কেমিক্যাল ল্যাব স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু এখনো সেই দাবি পূরণ না হওয়া দুঃখজনক। তামাবিল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক রায়হান আহমদ জানান, স্থলবন্দরকে কেন্দ্র করে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ফায়ার সার্ভিস ও ল্যাব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এখন সতর্কতার সঙ্গে মিথানল আমদানি করা হচ্ছে।