
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হাটহাজারীর সেই আলোচিত সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক সিনিয়র অফিসার মুনিয়া সুলতানাকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। গত কয়েক দিন আগে বদলি হয়ে তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বদলির বিষয়টি সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে নিশ্চিত করেছেন উক্ত ব্যাংকের এমডি সচিবালয় ভিজিলেন্স সেলের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার প্রবীর কুমার মজুমদার। তিনি জানান, রোববার (১৯ অক্টোবর) থেকে সিনিয়র অফিসার মুনিয়া সুলতানা চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে অফিস করছেন।
প্রসঙ্গত, ওই কর্মকর্তা মুনিয়া সুলতানা ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল নিয়মবহির্ভূতভাবে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সরকারি অফিসার্স কোয়ার্টার (বাসা) বরাদ্দ নেওয়া ও তিনি শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকাকালে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হাটহাজারী শাখার আমেনা খাতুন নামে এক মাঠকর্মী প্রায় ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের করে বিদেশে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তিনি (ব্যাংক কর্মকর্তা) উপজেলাজুড়ে বেশ আলোচনায় আসেন; যা পরবর্তীতে টক অব দ্য এরিয়ায় পরিণত হয়।
এদিকে চলতি মাসের ৩ অক্টোবর যুগান্তর পত্রিকায় “২৬ লাখ টাকা নিয়ে মাঠকর্মী পালাল বিদেশে”-এমন শিরোনামে ফলাও করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনটি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তথা প্রধান কার্যালয়ের নিদের্শনায় এ ঘটনার তদন্তে নামে একটি টিম।
গত ১২ অক্টোবর থেকে ওই তদন্ত টিম পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (পিএসবি) হাটহাজারী শাখায় সশরীরে এসে তাদের তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তের অংশ হিসেবে তারা উক্ত শাখার সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলাদা আলাদাভাবে কথা বলেন এবং এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ওই শাখার ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সাথে কথা বলেছেন তদন্ত টিমের এক সদস্য।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্ত টিমের প্রধান সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার প্রবীর কুমার মজুমদার, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশের পর এই ঘটনার তদন্তে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি এবং সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলছি। তদন্ত শেষে আমরা এ ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তথা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তাকে ঘটনার প্রকৃত বিষয় অবহিত করব। এরপর কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাই নিবেন।
অন্যদিকে বিগত ২০২৩ সালে নিয়মবহির্ভূতভাবে বরাদ্দ নেওয়া উপজেলা পরিষদের সরকারি অফিসার্স কোয়ার্টার (বাসা) ছেড়ে দেয়ার জন্য ওই ব্যাংক কর্মকর্তা মুনিয়ায় সুলতানাকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাসা বরাদ্দের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে স্বাক্ষরিত ৪টি নোটিশ প্রদান করে। এতে তিনি কোন প্রকার কর্ণপাত করেনি। এমনকি বাসার বিদ্যুৎ বিলও বকেয়া রাখার বিষয়টি জানা গেছে।
এরমধ্যে বিষয়টি অবগত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে বাস ছেড়ে দেয়ার জন্য কড়া ভাষায় নোটিশ ইস্যু করে। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্মকর্তা চলতি অক্টোবর মাসে বাসা ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি ইউএনওকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সোমবার) ওই ব্যাংক কর্মকর্তা বাসা না ছেড়ে এখনও ওই সরকারি বাসায় অবস্থান করার বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।