Image description

পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে প্রায় ১৬ বছর দিল্লির স্বার্থ সংরক্ষণ করেছেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। প্রশাসন থেকে শুরু করে পুলিশ, র‌্যাব, বিচারক, গণমাধ্যম, ব্যবসায়ীসহ প্রতিটি সেক্টরে ‘দিল্লির স্বার্থরক্ষা এজেন্ট’ তৈরি করেছেন ওই সময়ে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে হাসিনা পালিয়ে সেই ‘আপন ঠিকানা’ দিল্লিতে গত ১ বছরের বেশি সময় ধরে অবস্থান করছেন। হাসিনার পতনের পর শুরুর দিকে বাংলাদেশের উপর হিংস্র হয়ে উঠেছে হিন্দুত্ববাদী ভারত। জুডিশিয়াল ক্যুসহ বিভিন্ন সেক্টরে একের পর এক বিশৃংখলা সৃষ্টির টার্গেট করে ব্যর্থ হয়ে এখন গার্মেন্টস শিল্পকে টার্গেট করেছে। যদিও গার্মেন্টস শিল্পকে অনেক আগেই টার্গেট করে শ্রমিক অসন্তোষের মাধ্যমে নানাবিধভাবে অস্থিরতার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এখানেও ব্যর্থ হয়ে যায়। তাই নতুন করে ভারত হাসিনার আগুন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। এবার বিভিন্ন গার্মেন্টস এবং এর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনাকে টার্গেট করে অগ্নিকা- ঘটিয়ে দেশের বৈদশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম খাতকে ধ্বংসের পাশাপাশি বহির্বিশ্বে পোশাকের বাজারকে অস্থির করে তোলার পায়তারা করছে। এই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটানো হয়। একই সঙ্গে বিমানবন্দর হলো কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) এলাকা।

এখানে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা আছে। আগুন লাগার কয়েক মিনিটের মধ্যে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ সংস্থা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দ্রুত সেই তৎপরতা দেখা যায়নি। তাই অনেকেই বেবিচককে এই ঘটনার জন্য দায়ী করছেন। মূলতঃ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল ও নির্বাচনের আগে পোশাক খাত নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে একটি গ্রুপ। আর এ কারণে অগ্নিকা-ের সময় দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি আগুন লাগার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কার্গো ভিলেজের সামনে গেলেও ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ৮ নম্বর ফটকে আটকে দেওয়া হয়। ওই সময় ফটক আটকে দিয়ে জানানো হয়, ভেতরে প্রবেশের অনুমতি নেই। ফলে প্রায় ২০-২৫ মিনিট সময় নষ্ট হয়। এর মধ্যেই আগুন সারা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ‘শত শত কোটি টাকার’ পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ধ্বংস হওয়া মালামালের মধ্যে রফতানির জন্য প্রস্তুত করা পোশাক, পোশাক তৈরির মূল্যবান কাঁচামাল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অনেক স্যাম্পল ছিল। এই স্যাম্পলগুলো সরাসরি নতুন ব্যবসার পথ উন্মোচন করে এবং বিজনেস ডেভেলপমেন্টের জন্য অপরিহার্য। এই স্যাম্পলগুলো হারানো মানে দেশের ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) কারখানায় ভয়াবহ আগুন লাগে। যা সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী ও বিজিবি’র দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। আর একদিন পর গত শনিবার দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগানো হয়। এদিকে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে বিপাকে ফেলতে সব ষড়যন্ত্রের পর এবার পরিকল্পিতভাবে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটাচ্ছে ভারত ও আওয়ামী লীগ। গতকালও ঢাকার ধামরাইয়ে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ফ্যাক্টরিতে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এমনকি গতকাল সাতক্ষীরা-ভোমরা স্থলবন্দর সড়কের মাহমুদপুর বাদামতলা নামক স্থানে নজরুল মার্কেটে অগ্নিকা-ের ঘটনায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব অগ্নিকা-ের ঘটনা শুরুর দিকে দেশের বাইরে থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়ে দিচ্ছেন।

রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকা-ে পোশাক তৈরির মূল্যবান কাঁচামাল, রফতানির জন্য প্রস্তুত পোশাক ও গুরুত্বপূর্ণ নমুনা পণ্য (স্যাম্পল) ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান। গতকাল বিমানবন্দরে অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। বিজিএমইএ’র এ নেতা বলেন, শনিবার বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পোশাক সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় একের পর এক আগুন লাগার ঘটনায় আমরা বিজিএমইএ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বিমানবন্দরের এ দুর্ঘটনায় দেশের রফতানি বাণিজ্য, বিশেষ করে পোশাক শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য আমরা এখানে এসেছি। সাধারণত হাই ভ্যালুড পণ্য ও জরুরি শিপমেন্টের ক্ষেত্রে আকাশপথে জাহাজীকরণ করা হয়। অগ্নিকা-ের ফলে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পণ্যসামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ইনামুল হক খান বলেন, ধ্বংস হওয়া মালামালের মধ্যে রফতানির জন্য প্রস্তুত করা পোশাক, পোশাক তৈরির মূল্যবান কাঁচামাল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অনেক স্যাম্পল ছিল। এই স্যাম্পলগুলো সরাসরি নতুন ব্যবসার পথ উন্মোচন করে এবং বিজনেস ডেভেলপমেন্টের জন্য অপরিহার্য। এই স্যাম্পলগুলো হারানো মানে ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিজিএমইএ’র সদস্যদের কাছে নির্ধারিত ফরম্যাটে ক্ষতি হওয়া পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। তথ্য দ্রুত সংগ্রহ করার জন্য একটি অনলাইন ডেটা কালেকশন পোর্টালও খোলা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করে বলছেন, এমন ঘটনা বিদেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা যাবে। পোশাক রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি বলেন, আমাদের সদস্যরা প্রায় সবাই এয়ারপোর্টে পণ্য পাঠান। প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০টি কারখানার পণ্য আকাশপথে রফতানি হয়। সেই হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। তিনি বলেন, আমরা ভেতরে গেলাম, ভেতরে গিয়ে আমরা বিধ্বস্ত অবস্থা দেখলাম, ভয়াবহ অবস্থা দেখলাম। আমদানির সেকশনটা সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এটা কতটা ভয়াবহ ভেতরে গিয়ে আমরা বুঝতে পারলাম। ভীষণ একটা খারাপ অবস্থা ভেতরে। আমাদের কতদিন লাগবে আমরা ঠিক জানি না, ১৫ দিন থেকে ১ মাস লাগবে এটাকে আবার ব্যাক (পুনরায় সচল) করার জন্য।

সূত্র মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর করা পাল্টা শুল্কের প্রভাব এখন স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। মার্কিন বাজারে চীনা ও ভারতীয় পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশ এখন নতুন করে বিশ্ব ক্রেতাদের নজরে এসেছে। এই পরিস্থিতি দেশের রফতানিমুখী পোশাক খাতকে নতুন সম্ভাবনার মুখে দাঁড় করিয়েছে। বাংলাদেশি তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তা ও রফতানিকারকরা বলছেন- মার্কিন বাজারে চীনা ও ভারতীয় পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ফলে ক্রেতারা দ্রুত অর্ডার স্থানান্তর করছেন এবং এ সুযোগে বাংলাদেশকে নতুন বিনিয়োগ ও অর্ডারের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করছেন। এই পরিস্থিতি শুধু রফতানিতে বৃদ্ধি আনছে না, বরং শিল্পে নতুন বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাও তৈরি করছে। আর যা ভালো মনে করছে না ভারত। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার দখল করতে ভারত নানা কূটকৌশল করছে। এরই অংশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে বিশৃংখলা, সুনাম বা বায়ারদের সঙ্গে চলমান কমিটমেন্টকে বাধাগ্রস্ত করার পায়তারায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গার্মেন্টস সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটাচ্ছে। যাতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাকের সুনাম ক্ষুণœ হয়। এই সমস্যা দীর্ঘায়িত করে নিজেদের পণ্যের বাজার গড়ে তুলতে। সে জন্য পরিকল্পিতভাবে দেশীয় তাবেদারদের দিয়ে তৈরি পোশাক শিল্পে বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। ভারত এক সময় টার্গেট করে শ্রীলংকার গার্মেন্টস ধ্বংস করেছে। এর আগে বাংলাদেশের পাটশিল্প ধ্বংস করেছে।

এদিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল অগ্নিকা-ের পর নিজেদের পণ্যের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগে আছেন আমদানিকারকেরা। ক্ষণে ক্ষণে তারা তাদের প্রতিনিধি, অর্থাৎ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মকর্তাদের ফোন করে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানার চেষ্টা করছেন। গতকাল রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজের সামনে সরেজমিনে এই চিত্র দেখা গেছে। শনিবার আগুন লাগার পর প্রায় ছয় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত পৌনে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে কার্গো ভিলেজের আশপাশ দিয়ে গতকাল দুপুর ১২টা নাগাদও ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভাতে এখনও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন, চলছে মালামাল উদ্ধার কাজও। এসময় কার্গো ভিলেজের বাইরে বিপুলসংখ্যক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধিদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়, তারা উদ্বিগ্ন হয়ে উদ্ধার কার্যক্রম দেখছিলেন। অনেক এজেন্টকে তাদের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেখা যায়। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘রুহুল ইন্টারন্যাশনাল’-এর প্রতিনিধি আলাল আহমেদ বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪০ হাজার ডলারের মালামাল ছিল, সব পুড়ে গিয়েছে বলে জেনেছি। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ক্রমাগত ফোন দিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে। ‘এসআর ইন্টারন্যাশনাল’ নামের আরেকটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের ভিভো মোবাইলের বিভিন্ন ধরনের খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়েছিল, যার পরিমাণ প্রায় দশ হাজার কেজি। এছাড়া আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মালামাল ছিল। সব পুড়ে গিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এতে আমাদের প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতা কাজী আজমল হোসেন বলেন, প্রতিদিন প্রায় চার হাজার ‘বিল অফ এন্ট্রি’ বা আমদানি পণ্যের চালান ঢাকা বিমানবন্দরের মাধ্যমে আসে। কার্গো ভিলেজ ব্যবহার করে মূলত হালকা যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিক পণ্যের আমদানি এবং তৈরি পোশাক ও নমুনা, অল্প পরিমাণ অ্যাক্সেসরিজ, দলিলপত্র ও পারসেল আমদানি বা রফতানি করা হয়ে থাকে। তবে, প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন মূলত আমদানি পণ্য চালান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিমানবন্দরের রফতানিপণ্য চালান যে অংশে থাকে সেখানে আগুন যায়নি।

এদিকে ঘটনাস্থলে থাকা ডিএইচএল কুরিয়ার সার্ভিসের ইনচার্জ পরিচয় দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ওই এক কর্মকর্তা ও সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান এম আর লজিস্টিকসের কর্মচারী মো. এনায়েত হোসেন বলেন, আগুন লাগার শুরুতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কার্গো ভিলেজের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি, ৮ নম্বর ফটকে আটকে দেওয়া হয়। তাদের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি ছিল না বলে জানানো হয়। ফলে প্রায় ২০-২৫ মিনিট সময় নষ্ট হয়। এর মধ্যেই আগুন সারা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।

বিজিএমইএ’র পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, এখানে বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের দেখা হয়েছে, উনি এসেছিলেন। আমরা মিটিং করেছি এখানেই দাঁড়িয়েই। পুরো জায়গার অ্যাসেসমেন্ট করা হয়েছে। উনি ইমিডিয়েটলি বলেছেন যে, এখন তো জায়গা নেই আমদানি আসার। এটাকে সুবিধাজনক করার জন্য টার্মিনাল ৩-এ নতুন জায়গা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, বিজিএমইএ’র যারা আমাদের মেম্বার, যারা আমদানি করছে, এখন মালামাল প্রতিদিন আসবে, সেটা যেন খুব দ্রুত ৩৬ ঘণ্টার ভেতরে ক্লিয়ার করা হয় (আগে যেটা ছিল ৭২ ঘণ্টা)। সেটার জন্য উনি আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরা আমাদের মেম্বারদেরকে জানাব একই কথা। কাস্টমসের সাথেও আমরা একটা ওয়ার্কিং কমিটি করে যেন খুব দ্রুত সুবিধাজনক করে মালগুলো যেন বের করা যায়, যেন জমে না যায়, সেটার স্বার্থে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আলাপ হয়েছে ভেতরে।

এদিকে অগ্নিকা-ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরকার আগামী তিন দিন নন-সিডিউলড ফ্লাইটের সব ধরনের চার্জ মওকুফ করেছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। উপদেষ্টা বলেন, আগুনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগামী তিন দিন যেসব নন-সিডিউলড ফ্লাইট আসবে, সেগুলোর সব ধরনের মাশুল ও চার্জ মওকুফ করার বিষয়ে অর্ডার জারি করা হয়েছে। এই অগ্নিকা- নাশকতা কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব ধরনের বিষয়কে মাথায় রেখে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এছাড়া অগ্নিকা-ের ঘটনার আগে ও পরে আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার কারণÑ এসব বিষয়ে কারও কোনো দায় বা ব্যত্যয় আছে কি না, সেসব বিষয়ে অনুসন্ধান করা হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটসংলগ্ন কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। তবে আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। ইতোমধ্যে বিমান বাংলাদেশ, কাস্টমস, স্বরাষ্ট্র সচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয় পৃথক তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।